অন্যকথা | মুক্তধারা
বসন্তী পঞ্চমী ও বাঙালির লোকাচার
সৌরভ দত্ত
ছেলেবেলার স্মৃতি সতত উজ্জ্বল।চির জাগরুক। বসন্তের আবাহনে । গাছে গাছে পল্লবিত কিশলয়। শীতের ভ্রুকুটি কাটিয়ে হালকা রোদ্দুর।আমবকুলের গন্ধ। সর্ষের খেতে মৌমাছির ইতিউতি উড়াউড়ি।গাছের শাখায় কোকিলের সুরেলা মিঠে ডাক। স্কুলে স্কুলে বাকদেবীর আরাধনায় ব্যস্ত ছাত্র কুল। রঙিন পেপার কেটে শিকলি বানানো।আলপনার তুলিতে খুদেদের কাঁচা হাতের টান।শুক্লা পঞ্চমী ঘিরে বাঙালির নানা লোকাচার। ছেলেবেলার দিদা-ঠাগমাদের নিদান অঞ্জলি দেওয়ার আগে কূল খাওয়া যাবে না।যদি কেউ ভুল করে কুল খেয়ে ফেলে তাকে নাকি গোবরতুলসি খেতে হবে।পুজোর দিন পড়তে বললে পরজন্মে গাধা হওয়ার কথাও শোনা যেত।তখন না বুঝলেও পরে পরিণত বয়সে বুঝতে বাকি থাকে না যে এগুলো একপ্রকার কুসংস্কার। সরস্বতী পুজোর দিন হাতে খড়ি দেওয়ার চল এখনো রয়েছে। মাটির মূর্তির সামনে থরে থরে বই সাজিয়ে দেওয়া ও দোয়াত কলম দেওয়ার রীতি এখনো বিদ্যমান। পুজোর দিন প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই খিচুড়ি,পায়েস,কুলের চাটনি হয়।মাঘ মাসের এই দিনটিকে ঘিরে বাঙালিদের মধ্যে বহুল সংস্কার রীতি লক্ষ্যণীয়।মহিলাদের লাউ,কুল ও সজনে ফুল খাওয়ায় রীতি চালু আছে। শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে পূর্ববঙ্গের ও দক্ষিণবঙ্গের মানুষজনদের মধ্যে কাঁচা হলুদ মাখিয়ে ইলিশ বরণের চল রয়েছে।
Comments :0