প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যে জ্যোতির্বিজ্ঞান, বৈমানিক প্রকৌশলের জ্ঞান যদি এতই উন্নত হয়ে থাকে তাহলে ইসরো কেন তা ব্যবহার করছে না? ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমনাথের কাছে এই প্রশ্ন তুলল ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি (বিএসএস)। বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের যৌথ মঞ্চ বিএসএস ইসরো চেয়ারম্যানকে বলেছে, আপনি একটি উদাহরণ দেখান যে প্রযুক্তি বা তত্ত্ব ইসরো বেদ থেকে গ্রহণ করেছে এবং রকেট বা স্যাটেলাইট তৈরির কাজে প্রয়োগ করেছে। একটি বিবৃতিতে বিএসএস বলেছে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সংগঠনের প্রশাসক সহ সুপরিচিত ব্যক্তিরা তাঁদের বক্তব্যে বিজ্ঞানের তত্ত্ব তুলে ধরুন।
উল্লেখ্য, ভারতের মহাকাশ গবেষণার গৌরবজনক প্রতিষ্ঠান ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ ২৪ মে মহর্ষি পানিনি সংস্কৃত এবং বৈদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানের অগ্রগতি সম্পর্কে বলেন, বেদ থেকেই বিজ্ঞানের উৎপত্তি। শুধু তাই নয়, বীজগণিত, বর্গমূল, সময়ের ধারণা, স্থাপত্য, ধাতু বিজ্ঞান, সর্বোপরি মহাবিশ্বের কাঠামোও প্রথম পাওয়া যায় বেদেই। আরও এগিয়ে ইসরো প্রধান বলেছিলেন, সংস্কৃত ভাষায় যে সমস্ত ভারতীয় সাহিত্য লেখা হয়েছে, তা দার্শনিক ভিত্তিতে এবং এর প্রকৃত অর্থেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানসম্মতভাবেও এর গুরুত্ব রয়েছে। সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক এবং বিজ্ঞানসম্মত ভাবনার কোনও ফারাক নেই। ওষুধ, জ্যোতির্বিদ্যাৃ, বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যাও সংস্কৃত ভাষায় লেখা হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে সম্পূর্ণ গবেষণা হয়নি।
ইসরো প্রধানের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানের অগ্রগতি সম্পর্কে সোমনাথ যা বলেছেন সেটা অতিরঞ্জিত এবং অতিপ্রশংসামূলক। যা মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। বিএসএস তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ওই সমাবর্তনে ইসরো প্রধান যা বলেছেন সেটা অবাস্তব দাবি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুরানো ধারণা বা বিশ্বাসকে প্রশ্ন করেই বিজ্ঞানের অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের প্রাচীন জ্ঞানই সর্বোৎকৃষ্ট এইরকম অবাস্তব দাবি পড়ুয়াদের বিভ্রান্ত করবে এবং তাদের বৈজ্ঞানিক প্রবণ মনন তৈরির ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করবে। যা শেষ পর্যন্ত ভারতের বিজ্ঞানের অগ্রগতিকেই বাধাপ্রাপ্ত করবে।
Comments :0