MANIPUR PB

বীরেন সিংয়ের পদত্যাগ দাবি পলিট ব্যুরোর

জাতীয়

কারগিল যুদ্ধের সেনা ছিলেন। দেশরক্ষার লড়াইয়ে প্রহরী ছিলেন সীমান্তে। তাঁর স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে হাঁটিয়েছে উন্মত্ত বাহিনী। সংবাদমাধ্যমে এভাবেই খেদ জানিয়েছেন মণিপুরে নির্যাতিত এক মহিলার স্বামী। 

বুধবার রাতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও’তে দেখা গিয়েছিল অসভ্য নির্যাতন। দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের মুখে কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিজেপি সরকার। ক্ষোভের ভাষাতেই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগ দাবি করেছে সিপিআই(এম)। শুক্রবার বিবৃতিতে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো বলেছে, দু’মাসের বেশি সময় ধরে জ্বলছে মণিপুর। রাজ্যের সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের অপদার্থতা সমানে আড়াল করে চলেছে কেন্দ্র এবং বিজেপি’র শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। পদত্যাগ করতে হবে বীরেন সিং’কে। 

দেশময় প্রতিবাদের পরও সংসদে বিবৃতি দেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আড়াই মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। এতদিন নীরব থেকেছেন নরেন্দ্র মোদী। ভিডিও সামনে আসায় বাধ্য হয়েছেন মুখ খুলতে। কিন্তু সংসদে বিবৃতি নয়, বাইরে সংবাদমাধ্যমে সংক্ষিপ্ত মন্তব্য করেছেন। মণিপুরের ঘটনাকে লজ্জার বললেও লঘু করার চেষ্টা ছাড়েননি মোদী। বলেছেন, কেবল মণিপুর নয় রাজস্থান বা ছত্তিশগড়ে, দেশের যে কোনও জায়গায় এমন ঘটনা মানা যায় না। 

প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দেবেন না। সরকারপক্ষ পূর্ণ আলোচনা করবে না সংসদে। বিরোধীরা যে দারায় আলোচনা করতে চায়, তাতে নারাজ সরকার। শুক্রবার ফের মুলতবি হয়েছে সংসদ। সোমবার পর্যন্ত বন্ধ দু’কক্ষের সভা। বিরোধীরা বলেছেন, ভয়ঙ্কর নারী নির্যাতনেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মনোভাব কী স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

মণিপুরে ৩ মে থেকে মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষ চলছে। রাজ্যের বিজেপি সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের ওপর ক্ষোভ নামছে রাস্তায়। গত বুধবার ছড়িয়ে পড়া ভিডিও’তে দেখা যায় উন্মত্ত ভিড় দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটিয়েছে। পরে তাঁদের একজন দল বেঁধে ধর্মণ করা হয়। হত্যা করা হয় আত্মীয়দের। ঘটনা ৪ মে’র। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয় ১৮ মে। অথচ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি রাজ্য প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বীরেন সিং যুক্তি দিয়েছেন যে রাজ্যে এমন শত শত অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু জানাননি তার মধ্যে কোনও একটিতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা। সরকার গড়তে মেইতেই বনাম কুকি সংঘর্ষ বাঁধানোর অভিযোগ বিজেপি’র দিকে। মেইতেই গোষ্ঠীগুলিকে মদত দিচ্ছে প্রশাসন। নির্যাতিত দুই মহিলার পরিবার শুক্রবারও জানিয়েছে যে পুলিশ কিচ্ছু করেনি। বরং উন্মত্ত বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে তাঁদের। 

সংবাদমাধ্যমে নির্যাতিতদের একজনের মা বলেছেন, আর কোনওদিন নিজেদের গ্রামে ফিরতে পারব না। আমার ছোট ছেলেকেও হত্যা করা হয়েছে। বড় ছেলে কর্মহীন। ভবিষ্যত কী, কিভাবে চলবে কিছুই জানি না। চরম যন্ত্রণায় তিনি বলেছেন, সরকার মানুষকে রক্ষা করতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না।  

Comments :0

Login to leave a comment