বাড়তে থাকা মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রামের ডাক দিলো সিপিআই(এম)। পার্টির প্রতিটি স্তরে এই দুই বিষয়ে প্রচার আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি।
১৬ ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছে সিপিআই(এম)। সংযুক্ত কিসান মোর্চা এবং ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মঞ্চ এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকারের নীতির বিরুদ্ধে।
২৮-৩০ কেরালার তিরুবনন্তপুরমে হয়েছে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। ৩০ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
তিনি জানিয়েছেন, ২০২৪’র লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিকে প্রাধান্য দিয়ে আলোচনা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। ইভিএম-এ কারচুপির বিপদ সম্পর্কে বিভিন্ন অংশ উদ্বেগ জানিয়েছে। দেশজুড়ে এই বিষয় নিয়েও প্রচারে নামার ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। ইভিএম-এ তিনটি অংশ থাকে। ভোটিং ইউনিট, কন্ট্রোল ইউনিট এবং ভিভিপ্যাট। অন্তত ৫০ শতাংশ ভিভিপ্যাট’র ফল কন্ট্রোল ইউনিটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার দাবি তুলেছে সিপিআই(এম)।
ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠান যেভাবে হয়েছে তাতে স্পষ্ট সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার চরিত্রকে ধ্বংসের আয়োজন পাকা। লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে হিন্দুত্বের স্লোগানে ভোটের জন্য সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ তীব্র করা হচ্ছে।’’
ইয়েচুরি জানিয়েছেন যে মোদী সরকারের শাসনে জনতার জীবনজীবিকার পরিস্থিতি মারাত্মক সংকটে। জনতার জীবনের সংকট নিয়ে আন্দোলন তীব্র করবে সিপিআই(এম)।
কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বান, মোদী সরকারের বৈষম্যের নীতির বিরুদ্ধে দিল্লিতে ৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদে নামছে কেরালার বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট। ওই দিন দেশের সর্বত্র যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং রাজ্যগুলিকে বঞ্চনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিতে হবে।
অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনে ধর্মীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ ভূমিকা পালন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের সক্রিয় উপস্থিতির উল্লে করেছেন ইয়েচুরি। রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সরকারি দপ্তরে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে দেখানো হয়েছে সরকারি দপ্তরে, সেখানে জমায়েত করা হয়েছে। ইয়েচুরি বলেছেন, সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে।
ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘পুরোটাই করা হয়েছে নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে। এখন বিজেপি এবং আরএসএস’র কর্মসূচি হলো প্রতিটি সংসদীয় ক্ষেত্র থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত মানুষকে রামমন্দিরে নিয়ে যাওয়া। নির্বাচন হওয়ার কথা এপ্রিলে। হিন্দুত্ববাদী ভোটের জন্য সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ পুরোটাই। দেশের সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় অগ্রাহ্য করা হচ্ছে সম্পূর্ণভাবে।’’
আযোধ্যার পর বারাণসী বা কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং মথুরায় শাহী ঈদগাহ নিয়ে বিবাদের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছে সিপিআই(এম)। ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘সঙ্কেত স্পষ্ট। ধর্মীয় উপাসনাস্থল আইন মানা হবে না। ১৯৯১’র এই আইন অনুযায়ী ধর্মীয় উপাসনাস্থলের চরিত্র ১৯৪৭’র ১৫ আগস্ট যেমন ছিল তা-ই রাখতে হবে। কিন্তু এই আইন মানা হবে না। বিচারবিভাগের অনুমোদনে সেই কাজ চলছে। মথুরায় এই প্রক্রিয়ায় অনুমোদন দিয়েছে আদালত। কাশী, মথুরাতেও থামবে না এই প্রক্রিয়া। অন্য সব জায়গায় মসজিদ ভেঙে মন্দির করার প্রচার চলবে। আমাদের দেশে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের অন্যতম প্রধান উৎস এই বিবাদ। আরএসএস এবং বিজেপি সেই পথেই চলবে। দেশ এবং দেশের চরিত্রের ওপর গভীর প্রভাব পড়বে।’’
CPI(M) CC YECHURY
ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা, বেকারি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সর্বাত্মক প্রচারের ডাক সিপিআই(এম)’র
×
Comments :0