দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি,
জলপাইগুড়ি সংলগ্ন ডেঙ্গুয়াঝার চা বাগানে বৃষ্টির মধ্যে চা শ্রমিকদের মাঝে প্রচার করলেন জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবরাজ বর্মন।
মঙ্গলবার রাত থেকে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয় জলপাইগুড়ি শহরে রাতে বৃষ্টি বাড়ে। বুধবার ভোরে সামান্য বৃষ্টি থাকলেও সকালের দিকে বেশ জোরে শুরু হয় বৃষ্টি। প্রচারের সময় কম, ১৯ এপ্রিল ভোট। নির্বাচনের শুরুতেই প্রথম পর্যায়ে নির্বাচন জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকায় প্রচারে যাচ্ছেন প্রার্থী দেবরাজ বর্মন।
সকাল সাড়ে সাতটায় বাগানে কাজ শুরু হয়। কাজে ঢোকার আগে চা শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করলেন দেবরাজ।
চা শ্রমিক শঙ্কর খেরিয়া, প্রফুল লাকড়া, এথেল ওঁরাও, সুমিত্রা মিন্জ, সুনিতা এক্কা সহ অন্যান্য চা শ্রমিকরা একযোগে অভিযোগ করেন। তাঁরা বলেন, সরকার কয়েক পুরুষ ধরে চা বাগানে বসবাসকারী শ্রমিক পরিবারগুলিকে মাত্র পাঁচ ডেসিমেল করে জমি দিযচ্ছে। চিরাচরিত বসবাসের এলাকা থেকে তুলে দিচ্ছে। চা বাগানের অব্যবহৃত জমি ‘লিজ হোল্ড’ থেকে ‘ফ্রি হোল্ড’ করার নীতি নিয়েছে। সেক্ষেত্রে চা পর্যটনের নামে জমি মাফিয়াদের হাত ধরে কর্পোরেটদের চলে যাবে।
বিরাট অনুষ্ঠান করে গাড়ি ভোরের শ্রমিকদের নিয়ে গিয়ে লাইন করে দাঁড় করিয়ে তাঁদের হাতে পাট্টা তুলে দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। দেড়শ বছর ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম চা বাগানে বসবাসকারী চা শ্রমিক পরিবার। বাগান গড়ে তুলেছেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে চা শ্রমিকদের ওপর। বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ এবং সিআইটিইউ বলেছে, চা শ্রমিকরা উদ্বাস্তু নন। প্রজন্মান্তরে তাঁরা যেখানে থেকেছেন সেখানে পশুপালনও করেছে। চাষ করেছেন। এখানে থেকে তুলে অন্যত্র থাকার জমি দিলে জীবিকা হারাবেন তাঁরা। তাঁরা বাগানে থাকলে জমি কখনই মাফিয়া কর্পোরেটদের হাতে যাবে না।
দেবরাজ বর্মন বলেছেন, দীর্ঘ আন্দোলনের চাপে চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু চা শ্রমিকরা চা বাগানের যেখানে বসবাস করছেন জমিতেই তাঁদের পাট্টা দিতে হবে।
প্রচারে সিপিআই(এম) কর্মীরা বলছেন, গত লোকসভা নির্বাচনে বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণ করে উত্তরবঙ্গের চা শিল্পকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথছ একটিও চা বাগান অধিকৃত হয়নি। উলটে বহু চা বাগান এখন বন্ধের মুখে। বিজেপি ও তৃণমূল দুই দলই চা শ্রমিকদের প্রতারিত করেছে। দীর্ঘদিনের দাবি ন্যূনতম মজুরি দিতে সরকার অস্বীকার করছে। চা শ্রমিকদের লড়াইয়ের আওয়াজ সংসদে পৌঁছে দিতে চায় সিপিআই(এম)।
Comments :0