Cultivation News

ভুট্টার পরিবর্তে সয়াবিনের চাষের চিন্তাভাবনা ইসলামপুরে

জেলা

তপন বিশ্বাস-ইসলামপুর


কম খরচে বেশি লাভের দিশা দেখাতে ইসলামপুর মহকুমার চাষীদের উজ্জীবিত করছে উত্তর দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। এলাকার চাষীদের কম খরচে বেশি মুনাফার দিশা দেখাচ্ছে সয়াবিনের দুই জাত। আগামীতে ভুট্টার পরিবর্তে কীভাবে সয়াবিনের চাষ বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছেন উত্তর দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞরা। সেজন্য পরীক্ষামূলক চাষও শুরু হয়ে গিয়েছে ইসলামপুর মহকুমার বিভিন্ন ব্লক এলাকায়।
করণদিঘি ব্লকের কৃষক অমরচন্দ্র সিংহ বলেন, 'গত বছর ১০ কাঠা জমিতে সয়াবিন চাষ করেছিলাম। ভালো উৎপাদন হয়েছিল। সেইসঙ্গে লাভও হয়েছিল। তাই এবার এক বিঘা জমিতে চাষ করেছি।'অপরদিকে চোপড়া ব্লকের কৃষক মহম্মদ মফিজউদ্দিন জানান, কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এবার কয়েকজন কৃষক সয়াবিন চাষ শুরু করেছেন। সেটা আশার কথা।
উত্তর দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, একক ও সাথি ফলন হিসাবে চাষ করা হয়ে থাকে। কৃষকদের উৎসাহ দিতে কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে বীজ সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সয়াবিন চাষের ফলে জমির উর্বরতা বাড়ে। সেজন্য এবছর কয়েকটি জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে ভুট্টার সাথি ফসল হিসাবে সয়াবিনের চাষ করা হয়েছে। জৈব সারে ফলন ভালো হয়। এতে রাসায়নিক সারের খরচটাও কমে যায়। রোগপোকারও তেমন উপদ্রব নেই।
সবমিলিয়ে, এক বিঘা জমিতে সয়াবিন চাষ করতে খরচ পড়ে এক হাজার টাকার মতো। সেই জমিতে প্রায় সাড়ে ৪ কুইন্টাল সয়াবিন উৎপাদন হয়। আর বাজারে ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় সয়াবিন। আর লাভ ওঠে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মতো। কম খরচে তাই এমন লাভজনক চাষ করার জন্য চাষিদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
উত্তর দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের ভারতীয় সয়াবিন গবেষণাকেন্দ্র থেকে ৫ জাতের উচ্চফলনশীল বীজ আমদানি করা হয়েছিল। তারপর গত দু'বছর ধরে কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক চাষ করার পর দুটি জাত নির্বাচন করা হয়। তার মধ্যে এনআরসি ১২৭, এনআরসি ১২৮ নামের জাত দুটি এই এলাকার জন্য উপযোগী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। চলতি মরশুমে চোপড়া সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে এই দুই জাতের সয়াবিন চাষ করা হয়েছে। 
উত্তর দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের শস্যবিজ্ঞান বিভাগের বিশেষজ্ঞ দেবাশিস মাহাতো বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে এ নিয়ে পরিকল্পনা চলছে। চাষের উপযোগী বীজ চিহ্নিত করা হয়েছে। এবার কৃষকদের নিয়ে কর্মশালা ও চাষের এলাকা বৃদ্ধির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্লকভিত্তিক কৃষি দপ্তরের সঙ্গে গাযোগ রেখে এই চাষের বিষয়ে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে’’।

Comments :0

Login to leave a comment