ডেঙ্গুতে মৃত্যু ক্রমশ বাড়ছে বাংলাদেশে। সরকারি হিসাবে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, এ বছর ৭৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৭২ জন। বৃহস্পতিবার দেশের স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, ওইদিন ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রাজধানী শহর ঢাকায় চার জন এবং ঢাকার বাইরে আট জন প্রাণ হারান। নতুন করে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৬৬৩ জন। তবে তাঁদের মধ্যে ১ হাজার ৭৬৩ ঢাকার বাইরে থেকে আসা। এখন দেশজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ হাজার ৯১৩ জন ভর্তি রয়েছেন। এ মাসের শুরুতে একদিনে ২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের মৃত্যু হয়। সেটাই একদিনের নিরিখে সর্বাধিক মৃত্যু।
এর আগে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল গত বছর। প্রাণ হারান ২৮১ জন। তার আগে ডেঙ্গুতে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। ২০২০ সালে ৭ জন এবং ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের। কিন্তু এবছর লাগামছাড়াভাবে মৃত্যু বেড়ে চলেছে। সংক্রমণ কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না প্রশাসন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরেই সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। সেকারণেই ডেঙ্গুর প্রকোপ উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু সম্প্রতি সতর্কবার্তা দিয়েছে, মশা থেকে ডেঙ্গু, জিকা, চিকুনগুনিয়া, পীতজ্বরের মতো রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে। আবহাওয়ার কারণে তা আরও মারাত্মক আকার নিচ্ছে।
ঢাকার মুগদা মেডিক্যাল কলেজের ডিরেক্টর মহম্মদ নিয়াতুজ্জামান বৃহস্পতিবার বলেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনও সুসংহত নিয়মনীতি নেই। অনেকেই জানেন না যে কীভাবে এই রোগের প্রতিকার করতে হবে। ঢাকার বাইরে অন্যান্য শহরে চিকিৎসাকর্মীদের আরও ভালোভাবে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। স্থানীয় প্রশাসনগুলির সঙ্গে আলোচনা করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি তৈরি করে রোগ মোকাবিলায় এগনো প্রয়োজন।
এদিকে, ঢাকাতেই বহু স্থানীয় মানুষজন প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাসাবোর বাসিন্দা জাকির হুসেন বলেন, ‘‘আমার মেয়ের ডেঙ্গু হয়েছে। আমাদের এই এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। কিন্তু চারপাশে ময়লার স্তূপ। আমরা মশার জাল ব্যবহার করি। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হলো না। সিটি কর্পোরেশন বা ওয়ার্ড কমিশনার যদি আরও একটু যত্নবান হতেন তাহলে আমরা এর থেকে হয়তো রেহাই পেতাম।’’
Comments :0