Boat Balagarh

চাহিদা কমছে, পুলিশি জুলমেও ধুঁকছে বলাগড়ের নৌকাশিল্প

জেলা

Boat Balagarh

ভেঙে পড়েছে বলাগড়ের নৌ শিল্প! জুটেছে পুলিশের জুলুমবাজি, মেলেনি সরকারি সাহায্য। ’’আগে ছিল না। এখন গাড়ি ধরলেই ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা জরিমানা করে পুলিশ। আগে খুব জোর নৌকা নিয়ে যেতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ হত। এখন পুলিশি জুলুমবাজিতে ৫০০০ টাকা খরচ হচ্ছে। না দিলেই হুমকি। থানায় নিয়ে গালিগালাজ তো আছেই। না দিলেই মারধরও করে।" 

 


এমনটাই অভিযোগ করছেন বলাগড়ের নৌকাশিল্পীরা। কখনও ৩০০, কখনও ৫০০। নৌকা নিয়ে বেরলেই পুলিশের জুলুমবাজির শিকার হতে হচ্ছে বলাগড়ের নৌশিল্পীদের। একেই করোনার কেপের মুখে পড়েছিল হুগলির বলাগড়ের নৌশিল্প। বলাগড় থেকে পুরুলিয়া নৌকা নিয়ে যেতে কুড়ির বেশি জায়গায় পুলিশকে টাকা দিতে হচ্ছে। 
করোনকাল কাটলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। আগে কাঠের তৈরি নৌকার প্রাচুর্য দেখা যেত গঙ্গাবক্ষে। মৎস্যজীবীরা কাঠের তৈরি নৌকায় করেই নদীতে যেতেন মাছ ধরতে। লোহার নৌকা বাজারে আসায় কাঠের তৈরি নৌকার কদর কমতে শুরু করেছে। নৌকা কিনতে আর ভিড় দেখা যায় না বলাগড়ে। চাহিদার অভাবে ধুঁকছে এখানকার নৌশিল্প। তার উপরে পুলিশের এই জুলুমবাজি। 

 

 

 


নৌশিল্পীদের অভিযোগ, কখনও ৩০০ কখনও ৫০০ টাকার চালান কাটতে হয় তাঁদের। টাকা না দিতে পারলে জোটে পুলিশের গালমন্দ। কোনও কোনও সময় টাকার দাবি  ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায় চলে যায়।  
এক সময়ে নৌশিল্প মানে বলাগড় ছিল ঐতিহ্যবাহী। আজ থেকে ২০ থেকে ২২ বছর আগেও চিত্রটা এরকম ছিল না। তখন কাঁচামালেরও রমরমা ছিল। শ্রীপুর ও তেতুলিয়া গঙ্গা উপকূলে প্রায় তিনশ পরিবার এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত কয়েক বছরের মধ্যে করোনা ও পুলিশি জুলুমবাজিতে বন্ধ হতে বসেছে এই শিল্প। শিল্পীদের অবস্থা হয়ে উঠেছে শোচনীয়। 


দিন দিন বাড়ছে কাঁচামালের দামও। ব্যাঙ্কঋণ পাচ্ছেন না নৌশিল্পীরা। কাঁচামালের অভাব দেখা দিয়েছে। কায়িক পরিশ্রম করেও পাওয়া যাচ্ছে না সেই দাম।  এক সময় রাজ্য তো বটেই এমনকি উত্তর প্রদেশ, বিহার, ওডিশা, ঝাড়খন্ডে সরবরাহ করা হতো সাল সেগুন কাঠ দিয়ে তৈরি শক্ত পোক্ত নৌকো। কিন্তু এখন কাঠের জোগান নেই। তার উপর আবার পুলিশি জুলুম। 
একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে তিন থেকে চার দিন আর বড় নৌকা কমপক্ষে ২৮ থেকে ৩০ দিন সময় লাগে। একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ পড়ে যায়। আর বিক্রির সময় খদ্দের মেলে না। নৌশিল্পীরা এখন ১০০ দিনের কাজে নেমে পড়েছেন। বারবার সরকারকে জানানো হয়েছে অথচ নেই কোন হেল দোল। 

 


হুগলির গ্রামীণ পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, জুলুমের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। যদি কোথাও এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
ছবি:- পুলিশের জুলুমবাজির মুখে বলাগড়ের নৌকা শিল্প। ছবি অভীক ঘোষ।  

 

Comments :0

Login to leave a comment