মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ নভেম্বর খসড়া রিপোর্ট গ্রহণ করবে লোকসভার এথিক্স কমিটি। তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ করেছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। গৌতম আদানি এবং নরেন্দ্র মোদীকে ঘিরে একগুচ্ছ প্রশ্ন তোলায় আপত্তি বিজেপি’র।
মৈত্রের সমর্থনে যথেষ্ট সরব না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে তৃণমূল এবং দলের নেত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধেও। আগের দিন বৈঠকে ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় এথিক্স কমিটির বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান মহুয়া মৈত্র। তাঁর সঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়ে বেরিয়ে যান কমিটির কংগ্রেস এবং বিএসপি সদস্যরাও।
মৈত্র প্রশ্ন তোলার জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে শিল্পপতি দর্শন হিরনন্দানিকে সংসদে তাঁর নিজস্ব ই-মেল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন বলে জানান।
২ নভেম্বর এথিক্স কমিটির ওই বৈঠকের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে একাধিক। সদস্যদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের ‘গোপন’ রিপোর্ট বলে দু’টি নথি দেওয়া হয়। দেখা যায় তার বক্তব্য আগেরদিনই সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দিয়েছেন বিজেপি’র দুবে। মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজে জোট বেঁধে নামার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি’র বিরুদ্ধে।
আদানি গোষ্ঠীকে অবৈধ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ বারবার উঠেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। তাঁর প্রতিটি বিদেশ সফরের পরই আদানি গোষ্ঠীর বরাত মেলার তথ্য সংসদে দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে দুবের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আদানির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে একের পর এক প্রশ্ন তুলেছেন মৈত্র। তার জন্য টাকা নিয়েছেন হিরনন্দানির থেকে।
উল্লেখ্য, তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রকল্প ঘিরে আদানি এবং হিরনন্দানি গোষ্ঠীর বিরোধ রয়েছে।
দেশের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বন্দর থেকে বিমানবন্দর এমনকি সড়কে সব বরাত একটি গোষ্ঠীর কাছেই যাচ্ছে কেন তা নিয়েও ঘোরতর প্রশ্ন রয়েছে। সিএজি রিপোর্টে আদানির হাতে থাকা সড়ক প্রকল্পে খরচ বিপুল বেড়ে যাওয়া এবং তাকে অনুমোদন করার অভিযোগও উঠেছে মোদীর মন্ত্রীসভার বিরুদ্ধে। সিএজি’র সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বদলি করা হয় গত মাসে।
এথিক্স কমিটিতে আবার হিরনন্দানি চিঠি দিয়ে টাকা দেওয়ার দাবি করেছেন। সেই চিঠি প্রকাশও করে দেওয়া হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন তুলেছে সিপিআই(এম)। পার্টির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, কমিটির বিবেচনাধীন বিষয়ে বিবৃতি জারি করে নথি প্রকাশ করা হয় না। এটাই সংসদীয় রীতি। এখানে সব আগেই প্রকাশ করে দিচ্ছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। তিনি বলেছেন, আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলাতেই আসলে রাগ বিজেপি’র। তিনি বলেছেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে দ্বিধা করেন না মমতা ব্যানার্জি। আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তিনি যথেষ্ট প্রতিবাদ জানাননি।
Comments :0