COP-28 FOSSIL FUEL

দুবাই জলবায়ু সম্মেলনের শেষ পর্বেও বিরোধ জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়েই

আন্তর্জাতিক

জলবায়ু সম্মেলনের শেষ লগ্নেও বিতর্কের কেন্দ্রে রইল জীবাশ্ম জ্বালানি। দুবাইয়ে রাষ্ট্রসংঘের আহ্বানে প্রায় ২০০ দেশের সম্মেলন একমত হতে পারছে না খসড়া প্রস্তাবে। 
সোমবার খসড়া প্রস্তাব পেশ করে পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কয়লা ব্যবহার কমানোর কথা বলা হয়। সমালোচক দেশগুলি বলেছে, এ কথা বরাবরই বলা হয়। কত বছরের মধ্যে এই জ্বালানির ব্যবহার করতে হবে তা নির্দিষ্ট হওয়া দরকার।
সম্মতির সমস্যা রয়েছে জ্বালানির ব্যবহার ঘিরে শিল্পোন্নত এবং বিকাশশীল দেশগুলির আলাদা দৃষ্টিকোণে। এবার পরিবেশ সম্মেলন ‘কপ-২৯’-র সভাপতি সুলতান আল জাবেরকে ঘিরেও বিবাদ রয়েছে। আল জাবের সৌদি আরবের তেল উৎপাদন সংস্থার প্রধান। আবার তেল উৎপাদক দেশগুলির গোষ্ঠী ওপেক’র গুরুত্বপূর্ণ অংশ সৌদি আরব। 
পরিবেশ আন্দোলনের একাংশ মনে করিয়েছেন, পশ্চিমের শিল্পোন্নত দেশগুলি নিজেদের বহুজাতিক তেল সংস্থাগুলিকে নিষেধের বেড়ি পরায় না। এরাই সৌদি আরবের মতো তেল উৎপাদনক দেশে উৎপাদন করে সারা বিশ্বে বিক্রি করে। মুনাফার অংশ পায় পশ্চিমের দেশগুলিই। 
দুবাইয়ে ‘কপ-২৮’-র ডিরেক্টর জেনারেল মজিদ আল সুয়াইদি বলেছেন, ‘‘খসড়ার উদ্দেশ্য ছিল সদস্য দেশগুলির মধ্যে আলোচনায় উৎসাহ তৈরি করা। খসড়া প্রস্তাব ঘিরে দেশগুলির মধ্যে আলোচনাও হচ্ছে। এটি প্রথম খসড়া। মতামতের ভিত্তিতে পরের খসড়া তৈরি করা সম্ভব।’’ 
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের বিধি অনুযায়ী দেশগুলি অসম্মত হলে খসড়া গ্রহণ করা যায় না। সর্বসম্মতি হলে একেকটি দেশের ওপর নিজের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি চালু হতে পারে। সুয়াইদি বলেছেন, ‘‘এবারের সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ন্ত্রণে যেভাবে জোর দেওয়া হয়েছে তা ঐতিহাসিক। এবার দেশগুলির সম্মতির ওপর তার প্রয়োগ নির্ভর করবে।’’ 
জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অন্য দেশেগুলির প্রতিনিধিদের পারস্পরিক চর্চা চলছে। বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি শিল্পায়নের আগের সময়ের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখার লক্ষ্য স্থির করেছে রাষ্ট্রসংঘ। এই শতাব্দীর আগেই সেই মাত্রা পেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। সেক্ষেত্রে হিমবাহ গলে যাওয়া থেকে, বন্যা, খরা, সামুদ্রিক ঝড়ের মারাত্মক প্রভাবে বিপর্যয় বা তাপপ্রবাহের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। 
খসড়ায় একাধিক বিকল্পের কথা বলা হয়েছে। যেমন কোনও দেশ উৎপাদন এবং বাতাসে উষ্ণতা বাড়ানো গ্যাসের নির্গমন দুই-ই কমাতে পারে। কার্বন শোষণ এবং কার্বন নির্গমণ যাতে সমান হয়, বা ‘নেট জিরো’ লক্ষ্যমাত্রায় ২০৫০’র আগে পৌঁছানো যায়, তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। 
ব্রাজিলের মতো ব্রিকস গোষ্ঠীর দেশগুলির বক্তব্য, ঐতিহাসিক কারণেই পশ্চিমের দেশগুলি আর উন্নয়নশীল এবং উত্থানশীল অর্থনীতিগুলির একই সমসয়সীমা বাঁধা যায় না। এটি বিবেচনায় রাখা দরকার।

Comments :0

Login to leave a comment