GAZA INCUBATOR

সদ্যোজাতরা মৃত্যুর মুখে, গাজায় অ্যান্টিসেপটিকের বদলে ভিনিগার

আন্তর্জাতিক

ইনকিউবেটরে রয়েছে অন্তত ১২০ সদ্যোজাত প্রাণ। কিছু পরেই বন্ধ হয়ে যাবে ইনকিউবেটর। জ্বালানি প্রায় শেষ গাজায়। প্যালেস্তাইনের এই শহরে বিধ্বস্ত ২৯টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে অন্তত পাঁচটি বড় হাসপাতাল রয়েছে। নেই ওষুধ, বিশেষ করে অ্যান্টিসেপটিক। মরিয়া চেষ্টায় অ্যান্টিসেপটিকের বদলে ভিনিগার ব্যবহার করছেন চিকিৎসকরা। 
একাধিক সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে অমানবিক এই ছবি। রবিবার মিশর সীমান্তে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ত্রাণের দ্বিতীয় দফায় ১৭টি ট্রাক ঢুকেছে গাজায়। আন্তর্জাতিক চাপের সামনে এই অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে ইজরায়েল। কিন্তু বিরাম নেই বোমাবর্ষণে। গাজার পর এখন হামলা চলেছে প্যালেস্তাইনের আরেক অংশ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে। সন্ত্রাসবাদী নিকেশের নামে হামলা হচ্ছে উদ্বাস্তু শিবিরে। উপচে পড়ছে শবাগার। 
ইনকিউবেটরের তথ্য দিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের শিশু বিষয়ক বিভাগ ইউনিসেফ। ১৭টি ট্রাকে ঢুকেছে কিছু খাদ্য এবং ওষুধ। কিন্তু প্রায় ২৩ লক্ষের শহরে তাতে আর চলে কতটুকু। তবে ত্রাণ সামগ্রীর তালিকায় নেই জ্বালানি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্যালেস্তাইন উদ্বাস্তু বিষয়ক বিভাগের প্রধান টমাস হোয়াইট লিখিত বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘এখন সবচেয়ে জরুরি জ্বালানি। পানীয় জল সরবরাহ থেকে বেকারিতে রুটি সেঁকা, সব বন্ধ হয়ে যাবে জ্বালানি না পেলে। 
ইজরায়েল যদিও সেসবের ভ্রৃক্ষেপ করছে না। রবিবার ইজরায়েলের বোমার আঘাতে নিহত হয়েছেন প্যালেস্তাইনের আরেক সাংবাদিক রুশদি সাররাজ। ইজরায়েল ফের হুমকি দিয়েছে, গাজার সব অধিবাসীকে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে দক্ষিণের জলাভূমি এলাকায়। ঘরে থাকলেই মনে করা হবে এরা সন্ত্রাসবাদীদের সহযোগী। 
ত্রাণকর্মীরাই বলছেন, গত ১৬ দিন যা চলছে তাকে মানবিক বিপর্যয় বললেও কিছুই বলা হয় না। এর মধ্যেই লেবানের সীমান্তে যুদ্ধের আবহ আরও ঘন হয়েছে। ইজরায়েল লেবানন সীমান্তে নিজের এলাকা থেকে নাগরিকদের সরে যেতে বলছে। সংবাদমাধ্যমে ক্যামেরায় ধরা পড়েছে কী প্রবল ক্ষুব্ধ ইজরায়েলের নাগরিকরা। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে যুদ্ধের মধ্যেই প্রকাশ্যে বলছেন, ‘ভরসা করেছিলাম, তবে এই সরকার ব্যর্থ। আমাদের জীবন, ছেলেমেয়েদের জীবন অনিশ্চিত করে দিচ্ছে।’’
ইজরায়েলের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে সেনার শীর্ষ পদাধিকারিদের কাছে বিশেষ বার্তায় এই যুদ্ধকে ‘এসপার নয় ওসপার’ বলছেন নেতানিয়াহু। গাজার যুদ্ধে জড়ালে খারাপ পরিণামের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আরেক প্রতিবেশী লেবাননের হিজবুল্লা সংগঠনকে। 
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী কেবল গাজায় সাধারণ বসতি এলাকায় বোমা ফেলে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার বাড়ি। ২০৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত। গাজায় ২৩ লক্ষ মানুষের ১৭ লক্ষই থাকেন উদ্বাস্তু শিবিরে। সেখানেও চলছে হামলা। শহরের ১৮ বছরের কম জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ। ৬৫ শতাংশ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ভেঙে দিয়েছে ইজরায়েল। 
আন্তর্জাতিক স্তরে অনুমান এই বিপুল ধ্বংস চালিয়ে গাজার দখল নিশ্চিত করতে চাইছে ইজরায়েলের বাহিনী আইডিএফ। এখনও প্রতিরোধের আশঙ্কা রয়েছে। আকাশ থেকে বোমা ফেলা পাশাপাশি গাজার মাটিতে ঢুকে পড়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানাচ্ছে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমও।

Comments :0

Login to leave a comment