প্রসূন ভট্টাচার্য
সিপিআই(এম)’র দার্জিলিঙ জেলা কমিটির সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন সমন পাঠক। শনিবার পার্টির দার্জিলিঙ জেলা ২৪ তম সম্মেলনের শেষ পর্বে সর্বসম্মতিতে ৪০ জনকে নিয়ে নতুন জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে, এছাড়াও দিবস চৌবে এবং ভবেশ ঘোষকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে। নবগঠিত জেলা কমিটির প্রথম বৈঠকে সমন পাঠককে জেলা সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত করা হয়েছে। বিদায়ী জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য থাকা অশোক ভট্টাচার্য এবং পরিমল ভৌমিককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে সম্মেলন মঞ্চে।
শিলিগুড়ির মিত্র সম্মিলনী হলে দু’দিনের এই সম্মেলন শুক্রবার শুরু হয়। সম্মেলন স্থলের নামকরণ হয়েছিল কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি নগর এবং সম্মেলন মঞ্চের নামকরণ হয়েছিল কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মঞ্চ। সম্মেলনে দার্জিলিঙ জেলার সব এরিয়া কমিটিগুলি থেকে সাড়ে তিনশো প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন, খসড়া সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের ওপরে বক্তব্য রেখেছেন ৭ মহিলা সহ মোট ৪৪ প্রতিনিধি।
শনিবার সিপিআই(এম)’র দার্জিলিঙ জেলা সম্মেলনের শেষ পর্বে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, সিপিআই(এম)’র মতাদর্শকে যারা বিদেশি বলে অপপ্রচার করে তারা আন্তর্জাতিকতাবাদও বোঝেনি, রামমোহন, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথকেও চেনেনি। আরএসএস-বিজেপি’র অপপ্রচারকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, কমিউনিস্টদের মতাদর্শ আন্তর্জাতিক এবং নিজ নিজ দেশের সুনির্দিষ্ট বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতেই তা প্রয়োগ করা হয়। আমাদের সংস্কৃতির শিকড়ে দৃঢ় থেকেই আমরা সব সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে বৈজ্ঞানিক যুক্তিভিত্তিক রাজনীতির চর্চা করি। আরএসএস বিজেপি ইতিহাস সংস্কৃতির বিকৃতি ঘটিয়ে প্রচার করে, আমরা মতাদর্শ নিয়েই তার মোকাবিলা করি।
সেলিম বলেন, আমাদের সংগ্রামের কোনো শর্টকার্ট রাস্তা নেই। আমরা মতাদর্শচালিত হয়েই করি। কোনো সস্তা প্রচারে ভেসে কমিউনিস্টরা কাজ করে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঘটনাবলী নিয়ে ভারত বাংলাদেশ দুই দেশেই সাম্প্রদায়িক মৌলবাদীরা যুদ্ধজিগির প্রচার করছে। মিডিয়াতে এমন প্রচার করা হচ্ছিল যেন চট্টগ্রাম দখল বা কলকাতা দখল হয়ে গেল বলে, তাই নিয়ে অনেকে আলোচনাও করছিলেন। কিন্তু বামপন্থীরা এরকম ব্যান্ড ওয়াগনে শামিল হয় না, বামপন্থীরা শত্রুদের মুখোমুখি (হেড অন) লড়াই করে। বাংলাদেশে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে বামপন্থীরা লড়ছে, আমরা তাদের প্রতি সংহতি জানাই। সেইসঙ্গে ভারতেও সংখ্যালঘু বিদ্বেষ ও বাংলাদেশ বিদ্বেষের বিরোধিতা করি।
আর জি কর আন্দোলনের থেকে শিক্ষা নিয়ে গণআন্দোলনকে তীব্রতর করার আহবান জানিয়ে সেলিম বলেছেন, সব আন্দোলনের ফলাফলকে ভোটের মাপকাঠিতে মাপা যায় না। আন্দোলনে অনেক চড়াই উৎরাই থাকে, চূড়ান্ত সাফল্য আসার আগে অনেক ধৈর্য্য ধরে লড়াই জারি রাখতে হয়।
সম্মেলনে ১৪টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে দার্জিলিঙ পার্বত্য এলাকায় স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে প্রস্তাবও রয়েছে।
Comments :0