আবার বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল রাজ্যে। রবিবার বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে চাষের। অনেক জায়গায় লন্ডভন্ড হয়েছে ঘরবাড়ি। সতর্কতা জারি হয়েছে রাজ্যের উপকূল অঞ্চলগুলিতে।
আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে বিক্ষিপ্ত ঝড় বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ সহ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল— সমস্ত জায়গাতেই দফায় দফায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলবে, হতে পারে শিলাবৃষ্টি। সেই সঙ্গে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট থাকবে বেশ কিছু জেলায়।
এদিনের ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস আগেই ছিল। তবে এর মধ্যেও পর্যটকের অভাব দেখা যায়নি দীঘায়। ভরে উঠেছে সেখানকার লজ ও হোটেলগুলি।
মাঠে কৃষিকাজ করার সময় শনিবার বিকালে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় দুই কৃষকের। মৃত সুফল ঘোষ (৫১)-র বাড়ি মন্তেশ্বর থানার জামনা গ্রাম পঞ্চায়েতের মরাইপিড়ি গ্রামে। অন্যদিকে মৃত আবুবক্কর মল্লিক (৩২) পূর্বস্থলী থানার কাষ্ঠশালী গ্রামের বাসিন্দা।
আবু বক্করের ভাই সুরজ মল্লিক বলেন, আমরা চারজন একসঙ্গে মাঠে বৃষ্টির সময় কাটা ধান জড়ো করছিলাম। হঠাৎ মেঘ ডাকতেই দাদা ধানের জমিতে লুটিয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্থানীয় পূর্বস্থলী ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এদিন কালনা হাসপাতালে দু’টি মৃতদেহেরই ময়নাতদন্ত হয়েছে।
অন্যদিকে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে গৃহবধূর হালিমা সরদারের (২৫)। রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে স্বরূপনগর ব্লকের চারঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের বারঘড়িয়া গ্রামে। জানা গিয়েছে, বাড়ির পাশের জমিতে হালিমার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি মিলে জমির পাকা ধান কেটে জড়ো করছিলেন। তাঁদেরকে খাওয়ার জল দিয়ে ঘরে ফিরছিলেন হালিমা। সেই সময় আচমকা বিকট শব্দে বাজ পড়লে হালিমা মাটিতে পড়ে যান। সেই দৃশ্য চোখে পড়তেই সবাই ছুটে আসেন। বাদুড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে বারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের পিবিএম ইটভাটার পাশে বাজ পড়ে ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক গুরুতর আহত হযেছেন। তাঁরা বারাকপুর বি এন বোস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ৩ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁরা হলেন, পলাশ বাশফোড়, অনিল মণ্ডল, লক্ষ্মণ কুন্ডু। আহতদের মধ্যে ১ জন শোনার ক্ষমতা হারিয়েছেন। দু’জনের পায়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদিও এই ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার বিকালে কালনা- ১ ব্লকেও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকদের পাকা ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শুধু ধান নয়, তিল সহ অন্যান্য ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিনের শিলাবৃষ্টিতে তিল গাছের মাথা ভেঙে জমিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে, এটাই এখন বাস্তব চিত্র।
ওদিকে মুষলধারে শিলাবৃষ্টিতে তছনছ হয়ে গেছে চাকদহ ব্লকে ঘেঁটুগাছি জিপির বেজপাড়া,বনমালীপাড়া হয়ে লোহা সমস্তিপুর অঞ্চল। ভণ্ডুল হয়ে গেছে বৈশাখী মেলা। চাঁদুড়িয়ায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গয়েশপুরে শিলা বৃষ্টি হয়েছে।
Comments :0