লাগাতার বস্তিবাসীদের আন্দোলনের চাপে কাটোয়া শহরের বাসট্যান্ড সংলগ্ন ধোপাপুকুর পাড় বস্তি উচ্ছেদ স্থগিত রাখল রেল কর্তৃপক্ষ। ৭০-৮০ বছরের পুরানো ধোপাপুকুর পাড় বস্তিতে ৫৫টি শ্রমজীবী পরিবারের প্রায় ২০০ মানুষের বসবাস। তাদের অধিকাংশই গৃহ সহায়িকা, পরিবহণ শ্রমিক, হকার, রেল হকার, সাফাই কর্মী, দোকান কর্মচারী, টোটো চালক। রেল কর্তৃপক্ষ হঠাৎ নোটিশ দিয়ে জানায় ২৬ নভেম্বর ধোপাপুকুর পাড় বস্তি উচ্ছেদ করা হবে। এরপরই বস্তি উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে শ্রমিক সংগঠনের সহায়তায় বস্তিবাসীরা আন্দোলনে নামেন, গত ১৯ নভেম্বর বস্তিবাসীদের পক্ষ থেকে রেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল কুমারের কাছে ডেপুটেশন ও উচ্ছেদের বিরুদ্ধে কাটোয়া রেল স্টেশনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। তাঁদের দাবি, বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা চলবে না। তাঁদের সাথে যোগ দেন পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বস্তির মানুষ ও স্থানীয় হকাররা, যাঁরা রেল দপ্তরের উচ্ছেদের মুখোমুখি হতে পারেন যে কোনদিন।
সোমবার পুনরায় রেল স্টেশনে রেল পুলিশের বাধাকে অতিক্রম করে বস্তিবাসীদের অবস্থান চলতে থাকে। অবস্থানে বক্তব্য রাখেন সুধীন দাস, তাপসী হাজরা, করুণা কিসকু, গোপাল হরিজন, বাপি দেব, জয়দীপ চ্যাটার্জী প্রমূখ। এই প্রবল আন্দোলনের চাপের মুখে বস্তিবাসীদের পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি দল অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে দেখা করলে তিনি জানান উচ্ছেদ স্থগিত রাখা হলো।
এরপর কাটোয়া স্টেশন প্লাটফর্ম থেকে বস্তিবাসীদের একটি মিছিল ধোপাপুকুর পাড়ে পৌঁছালে সেখানে বস্তিবাসীদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিআইটিইউ নেতা সুজিৎ রায় বলেন, আন্দোলনের চাপে উচ্ছেদ স্থগিত, তবে আপাতত, কারণ ইতিমধ্যেই কাটোয়া শহরে বুলডোজার দিয়ে বস্তি ও হকার উচ্ছেদ করেছে রেল দপ্তর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায়। গরিব মানুষের এই দুই শত্রুকেই আমাদের চিনতে হবে। 'দিদির' রাজ্যে মোদীর বুলডোজার চলছে। আগামী দিনে শুধু ধোপাপুকুর পাড় নয় সমস্ত রেল বস্তির মানুষ এবং উচ্ছেদের ফলে বিপন্ন পেশার মানুষদের ঐক্যবদ্ধ করে হকার, রেল হকার ট্রেড ইউনিয়নগুলি এবং বস্তি উন্নয়ন সমিতি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে যৌথভাবে জোরদার লড়াই চালিয়ে যাবে।
Slum Eviction Postponed
আন্দোলনের চাপে স্থগিত কাটোয়ার রেল বস্তি উচ্ছেদ
কাটোয়া রেলস্টেশনে বস্তিবাসীদের বিক্ষোভ মিছিল
×
Comments :0