IPL 2024

আজ ইডেনে স্টার্ক-কামিন্স দ্বৈরথ

খেলা

শনিবারের দ্বিতীয় খেলায় ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে খেলতে নামছে কলকাতা। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে খেলা দিয়েই অভিযান আইপিএল শুরু করবে। সেই ম্যাচেই হয়তো অভিষেক হতে চলেছে মিচেল স্টার্কের। 
ম্যাচের আগের দিন শুক্রবার স্টার্ক বলেছেন, ‘নতুন-পুরানো বলে কাজ শুরু করেছি। শনিবারের ম্যাচের জন্য নিজেকে তৈরি করছি। ক্রিকেটের সহজ পাঠের ক্লাস সম্পূর্ণ করেছি। ইনিংসের শুরুতে কিছু পরিকল্পনা রয়েছে, সেগুলোর উপরে কাজ করছি। নতুন বলের পাশাপাশি ডেথ বোলিং নিয়েও কাজ করছি। ইয়র্কার দিচ্ছি, ডেলিভারিতে বৈচিত্র আনার চেষ্টা করছি।’ আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টে বোলারদের কাজটা খুবই কঠিন। ডেলিভারিতে বৈচিত্র না আনলে ব্যাটাররা রানের বন্যা বওয়াবেন। নাইটদের সহ অধিনায়ক নীতীশ রানা স্টার্কের অন্তর্ভুক্তিতে বলেছিলেন, ‘গতবার অধিনায়ক হিসাবে ডেথ বোলারের অভাব অনুভব করেছি। সেই শূন্যস্থান এবার ভরাট করবে স্টার্ক।’ প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের স্টার্ক কতটা আটকে রাখতে পারেন সেটাই দেখার। 
স্টার্কের জোরালো পেস বোলিং বিপক্ষ ব্যাটাররা কীভাবে সামলান, সেটাও দেখার। স্টার্ক অবশ্য বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং নিয়েও ঘাম ঝরাচ্ছেন। ব্যাটে বলে ঠিকঠাক হলে বড় ছক্কা হাঁকাতে পারেন অস্ট্রেলিয়ান তারকা। নিজের ব্যাটিং প্রসঙ্গে অজি তারকা বলছেন, ‘দলের বেশ কিছু ক্রিকেটার রয়েছে। ওদের বল করে ভালো লেগেছে। এবার ব্যাট করছি। ব্যাট হাতে বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করতে পারছি কিনা সেটাই দেখে নিচ্ছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী ম্যাচে ছক্কাও মারতে হতে পারে। সেই কারণে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। দলের দরকারে সেটা করতে পারব বলেই মনে হয়।’
শনিবার স্টার্কের সামনে তাঁর জাতীয় দলের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। হায়দরাবাদের অধিনায়কও তিনি। কামিন্স আইপিএলে সময় কাটিয়েছেন কেকেআর দলে। প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে নামার আগে কামিন্স বলেছেন, ‘কলকাতায় ফিরে ভালো লাগছে। এখানে আমি কয়েক বছর কাটিয়েছি। ইডেনের ড্রেসিংরুমে ফিরে নস্টালজিক লাগছে। এবার কেকেআর আমার প্রতিপক্ষ। তবে এখানে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।’
প্রাক্তন দলের পাশাপাশি জাতীয় দলের সতীর্থর মুখোমুখি।  কামিন্স-স্টার্ক প্রসঙ্গে কামিন্স বলেছেন, ‘আশা করছি আমাকে স্টার্কির বল খেলতে হবে না। একইসঙ্গে ওকেও আমার বল খেলতে হবে না। স্টার্কি কত বড় মনের বোলার সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বিপক্ষ দলের অধিনায়ক হিসাবে স্টার্কিকে কেমনভাবে খেলতে হবে সেই পরামর্শ প্লেয়ারদের দিতে পারি।’ বাইশ গজে লড়াইয়ে নামার আগে জাতীয় দলের সতীর্থকে কী বার্তা দিতে চান জানতে চাইলে সানরাইজার্সের অধিনায়ক বলেছেন, ‘স্টার্কিকে শুধু হ্যালো বলতে চাই।’
আইপিএলে এই প্রথম অধিনায়কত্ব করবেন কামিন্স। তবে আশাবাদী তিনি। কামিন্স বলেছেন, ‘এই ফরম্যাটে আমি কোনোদিন অধিনায়কত্ব করিনি। কাল আমার প্রথম ম্যাচ। তাই আমি খুবই উত্তেজিত।’ দলে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে কোনও বড় নাম নেই। তবে সেই নিয়ে চিন্তিত নন সানরাইজার্সের নেতা। দলের পেস বিভাগ শক্তিশালী হলেও স্পিন তুলনামূলকভাবে দুর্বল। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এবং শাহবাজ আহমেদ ছাড়া কেউ নেই। কলকাতার দলে  রাহমানুল্লা গুরবাজ, সল্ট, শ্রেয়স আইয়ার, আন্দ্রে রাসেলের মতো হার্ড হিটার আছে। তাদের সামলানোই কামিন্সের কাছে বড় কাজ। 
স্টার্ককে নিয়ে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়স বলেছেন, ‘স্টার্ক আসায় অনেক সুবিধা হয়েছে। পাওয়ার প্লে, মাঝের ওভার বা শেষের দিকেও ওকে ব্যবহার করতে পারি। বিশ্বকাপ জিতে অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে এসেছে। অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তরুণদের জন্যেও ভালো।’ স্টার্ক বাদে দলে সে রকম ভালো জোরে বোলার নেই। শ্রেয়স অবশ্য আত্মবিশ্বাসী। বলেছেন, ‘দলের বোলিংকে বিভাগকে দেখলে বুঝতে পারি কত অভিজ্ঞতা রয়েছে। দুটো আইপিএল খেলা মানেই অভিজ্ঞতা থাকবে। সবে মরশুমের শুরু। কার মানসিকতা কী রকম সেটা বোঝার সময় এখনও রয়েছে। বেশি ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চাই না।’
সল্ট, গুরবাজের মতো ওপেনারদের ভিড় দলে। শনিবার কারা ওপেন করবেন সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রেখেছেন শ্রেয়স। বলেছেন, ‘দু’জনেই দারুণ ব্যাটার। সব দেশে গিয়ে টি-২০ খেলে। পারফরম্যান্সও দুর্দান্ত। এখনও পরিকল্পনা করিনি। এর পর টিম মিটিং রয়েছে। সেখানেই ঠিক হবে কে খেলবে। কালকেই আপনারা জানতে পারবেন।’
নিজের পিঠের চোট নিয়ে শ্রেয়স বলেছেন, ‘এখন পুরোপুরি সুস্থ। রোজ অনুশীলন করছি। অনেকক্ষণ ধরে ব্যাট করছি। চিকিৎসকেরা কী বলেছেন, কী চোট পেয়েছিলাম সে সব মনে রাখতে চাই না।’ আইপিএল-কে টি-২০ বিশ্বকাপের দলে ঢোকার মঞ্চ হিসাবে দেখতে চাননা শ্রেয়স। তাঁর মত, ‘বর্তমানে বাঁচতে চাই। আইপিএলের পরে কী হবে ভাবতে চাই না। আইপিএলে একটা ম্যাচ ধরে এগোতে চাই। আপাতত শনিবারের ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। মানসিক এবং শারীরিকভাবে তৈরি। দলের সবাইকে তৈরি রাখতে চাই। শুরু থেকেই ভালো ফর্মে খেলতে চাই।’
এদিন আলাদা করে দলের শক্তি-দুর্বলতা বাছতে চাননি শ্রেয়স। তবে জানিয়ে রাখলেন, অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের থেকে প্রত্যাশা বেশিই রয়েছে। শ্রেয়সের কথায়, ‘প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবাই ভালো ছন্দে রয়েছে এটাই বড় শক্তি। অনুশীলন ম্যাচেও সবাইকে ভালো ছন্দে দেখেছি। দলের বৈঠকে অনেকেই নিজেদের মতামত দেয়। আমাদের দলের সংহতি অনেক ভালো। শুরুতেই বিরাট প্রত্যাশা রাখছি না। প্রথম ম্যাচে ভালো খেললে এমনিই আত্মবিশ্বাস এসে যাবে।’ তাঁর সংযোজন, ‘আলাদা করে দলে কোনও এক্স ফ্যাক্টর নেই। গতবার রিঙ্কু পাঁচ ছক্কা মেরে শিরোনামে এল। ভারতের হয়েও ভালো খেলল। ওর থেকে প্রত্যা শা থাকবে। তবে মরশুমের শুরুতে সবার কাছেই একইরকম প্রত্যাশা রয়েছে।’
কলকাতা: হায়দরাবাদ
ম্যাচ শুরু রাত ৮টা

Comments :0

Login to leave a comment