JIBESH SARKAR

পাহাড়ে ৬ষ্ঠ তপসিল, তামাঙকে জয়ী করার আহ্বান একজোটে

রাজ্য জেলা

শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে জীবেশ সরকার, ড. মুনীশ তামাঙ, অজয় এডোয়ার্ড, শঙ্কর মালাকার।

দার্জিলিঙ পাহাড়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বশাসিত পরিষদ গড়তে সংবিধানের ৬ষ্ঠ তপসিলের স্বীকৃতি আদায় করতে হবে। সংসদে সেই লড়াইয়ের জন্য দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীকে জয়ী করুন। 
শনিবার যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এই আহ্বান জানালেন সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার। তিনি বলেন, গোটা রাজ্যের পাশাপাশি দার্জিলিঙেও বামফ্রন্ট,  কংগ্রেস, হামরো পার্টি এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করছে। তৃণমূল ও বিজেপি’র পক্ষে দ্বৈরথের রাজনীতিকে মোকাবিলা করবে এই শক্তি। এই বিকল্প শক্তির প্রার্থীই ড. মুনীশ তামাঙ। 
মুনীশ তামাঙ গত ৪ এপ্রিল মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে হয় অনিল বিশ্বাস ভবনে। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সমন পাঠক, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন সাংবাদিক সম্মেলনে। 


সরকার বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূল উন্নয়নের প্রতিযোগিতা করছে না। বিভাজনের প্রতিযোগিতা করছে। এই রাজনীতিকে প্রতিহত করতে হবে।’’  
জীবেশ সরকার বলেন, ‘‘প্রার্থী মুনীশ তামাঙ কালিম্পঙের আদি বাসিন্দা। দেশের বিভিন্ন মহলে তিনি অতি পরিচিত। গোর্খা জাতির উন্নয়ন বিকাশ ও অধিকারের জন্য শুধু দার্জিলিঙের পাশাপাশি সারা দেশে সাংগঠনিক ও প্রচারের কাজ করেন। ড. মুনীশ তামাঙ দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রের জন্য যোগ্যতম প্রার্থী। পাহাড় সমতলের ঐক্য সম্প্রীতি রক্ষার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’’ 
প্রার্থী ড. মুনীশ তামাঙ বলেন, ‘‘দার্জিলিঙ একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রের জনতার দাবিদাওয়াকে সামনে রেখে এগিয়ে যাব ও নির্বাচনে জয়লাভ হবে আশাবাদী আমি। অত্যাচার ও ভ্রষ্টাচারের নীতি নিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি বিভাজনের রাজনীতি করে চলেছে কেন্দ্র সরকার।’’ 
দার্জিলিঙ জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, ‘‘দার্জিলিঙ কেন্দ্রে সেরা প্রার্থী মুনীশ তামাঙ। তাঁকে জয়ী করার জন্য তিনটি দল একত্রিতভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।’’ 
জীবেশ সরকার বলেন, ‘‘দেশ ও রাজ্যের কঠিন পরিস্থিতি মুখোমুখি। দেশের গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংবিধান আরএসএস এবং বিজেপি’র হাতে আক্রান্ত। মুখে বিজেপি’র বিরোধিতা করলেও তৃণমূল গণতন্ত্র কেড়ে নিচ্ছে একই কায়দায়। ভোট লুট, প্রশাসনকে দলদাসে পরিণত করে নানাধরনের বিভাজনের রাজনীতি করছে।’’ পাহাড় সমতলের ঐক্য রক্ষায় মুনীশ তামাঙকে জয়ী করার আবেদন জানান তিনি।
হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড বলেন, ‘‘আমাদের তিনটি দলের প্রার্থী ড. মুনীশ তামাঙের হাত ধরেই পাহাড়ে পরিবর্তন আসতে চলেছে। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন স্বশাসিত পর্ষদের দাবিতে আমরা সবাই একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে। গোর্খাদের একতা বাঁচাতে হবে।’’ 
দার্জিলিঙ আসনের এবারের নির্বাচনে রাজ্যের মধ্যে থেকেই পাহাড়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বায়ত্তশাসন কাঠামোর দাবি এবার কেন্দ্রীয় বিষয় হয়ে গিয়েছে। সংবিধানের ষষ্ঠ তপসিল সংশোধন করার দাবি উঠেছে। পাহাড়ের সঠিক বিকাশের জন্য তা প্রয়োজন বলছে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং হামরো পার্টি।
অনীত থাপার সঙ্গে হাত মিলিয়ে জিটিএ-তে আসন পেয়েছিল তৃণমূল। প্রথম বৈঠকেই পৃথক রাজ্যের জন্য আলোচনা শুরুর পক্ষে প্রস্তাব পাশ করেছিল। আর বিজেপি ষষ্ঠ তপসিলের বিরোধিতা করেছে আগাগোড়া। 
রাজ্য বিধানসভায় পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে এই প্রস্তাব পাশ করে কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়। সে সময়ে বিজেপি বলেছিল এই সংশোধন হলে পাহাড়ে আগুন জ্বলবে। আজ পাহাড়ের বিভিন্ন শক্তি বলছে গত পনের বছর ধরে বিজেপি মিথ্যাচার করে গিয়েছে। 
সংবিধানের ৬ষ্ঠ তপসিলে পার্বত্য বিভিন্ন এলাকার সাংবিধানিক স্বীকৃতি রয়েছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে অর্থ এবং অন্য সহায়তা দিতে বাধ্য থাকে সরকার।

Comments :0

Login to leave a comment