MD SALIM FARMERS

বিজেপি’র কায়দাতেই কৃষক দমন মমতার, ক্ষোভ সেলিমের

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

হরিয়ানা, দিল্লির কায়দাতেই এ রাজ্যে কৃষক আন্দোলন দমন করছেন মমতা ব্যানার্জি। নির্বিচারে বিষাক্ত কাঁদানে গ্যাস পুলিশ ছুঁড়ছে তাঁরই নির্দেশে। আবার এই মমতাই হরিয়ানা-পাঞ্জাব সীমান্তে কৃষকদের ওপর বিজেপি সরকারের আক্রমণের নিন্দা করছেন।
তৃণমূল কংগ্রেস এবং দলের নেত্রী মমতা ব্যানার্জির সমালোচনায় বুধবার এই মর্মে সরব হলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মঙ্গলবার বহরমপুরে বিক্ষোভের সময় পুলিশের ছোঁড়া কাঁদানে গ্যাসে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বামপন্থী আন্দোলনের কর্মী কমরেড আনারুল ইসলাম
বুধবারই ফের মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন সেলিম। মঙ্গলবার এই বিক্ষোভেই অংশ নিয়ে বহরমপুরে ছিলেন তিনি। বুধবার কমরেড আনারুল ইসলামের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। এদিনই হবে শেষকৃত্য। পরিবারকে কিছু সহায়তা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সিপিআই(এম)। আবেদন জানিয়েছে ট্রেড ইউনিয়ন, কৃষক, খেতমজুর নেতৃবৃন্দের কাছেও। বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ হবে। 
কলকাতায় সিপিআই(এম) রাজ্য দপ্তর মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে সেলিম বলেন, ‘‘কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে সারা দেশে আন্দোলনে নেমেছে ট্রেড ইউনিয়ন, কৃষক, খেতমজুর সংগঠনগুলি। চাষের খরচ বাড়ছে। কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইন করেনি। অন্যান্য ফসলেও সহায়ক মূল্য ঘোষণার দাবি উঠেছে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকা ক্ষুধা, বেকারি, কাজের প্রশ্ন নিয়ে চলছে আন্দোলন। মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে সেই আন্দোলনে অংশ নিয়েই নামেন শ্রমিক কৃষক খেতমজুররা।’’
সেলিম বলেন, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি’র পরামর্শদাতারা এক। একই কায়দায় আন্দোলনকে দমন করা হচ্ছে। আইন অমান্য ঘোষিত কর্মসূচি। তা সত্ত্বেও সরস্বতী পুজোর আগের দিন ছুটি ঘোষণা করলেন যাতে জেলা শাসক, মহকুমা শাসকরা না থাকেন। সবটাই পুলিশের ওপর ছেড়ে দিলেন। আর পুলিশ ব্যারিকেড করে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল হরিয়ানা বা দিল্লির কায়দায়।’’
২১ ফেব্রুয়ারি মমতা ব্যানার্জি পাঞ্জাব যাচ্ছেন ‘আপ’ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে। বলা হচ্ছে, বিরোধী দলগুলির বোঝাপড়া এবং কৃষক আন্দোলন নিয়েও আলোচনা করবেন। সেলিম প্রশ্ন তোলেন মমতার স্ববিরোধী আচরণেই। 
ঘটনার বিবরণ দিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘পুলিশ নির্বিচারে লাঠি চালালো, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটালো। বাড়ি ফেরার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন কমরেড আনারুল ইসলাম। আহত ছিলেন তিনি। ইসলামপুর হাসপাতাল এবং পরে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেই মারা যান।’’ 
সংবাদমাধ্যমের সমালোচনায় সেলিম বলেন, ‘‘পুলিশের কাঁদানে গ্যাস, লাঠি এমনকি মৃত্যুকেও লেখা হচ্ছে ‘সিপিএম’র দাবি’। আর পুলিশ যা বলছে তাকে লেখা হচ্ছে ‘খবর’ হিসেবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য এবং কেন্দ্র দুই-ই এখন বিষাক্ত কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করছে।’’ 
এক প্রশ্নে সেলিম জানান যে বহরমপুরে তাঁর সঙ্গে কথা হবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী সব শক্তিকে এককাট্টা করতে চাইছি আমরা। বামফ্রন্টের বাইরের শক্তি এবং কংগ্রেস, আইএসএফ’র সঙ্গেও কথা বলছি। কথা হবে আন্দোলন নিয়ে, নির্বাচন নিয়েও।’’ 
সন্দেশখালি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘সত্য প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের জমি দখল, নারীদের ইজ্জত নেওয়া, গণতন্ত্রকে শেষ করা বেরিয়ে পড়েছে। পুলিশ, প্রশাসন এবং মস্তানদের সাম্রাজ্য করা হয়েছে। মানুষকে অভিযোগ জানাতে দেবে না। জানালেও ব্যবস্থা হবে না। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এমন মুক্তাঞ্চল করে লুটতন্ত্র চলছে।’’
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ছাত্র, যুব, মহিলারা সন্দেশখালি যাবেন। 
বিজেপি’র তীব্র সমালোচনায় তিনি বলেন, ‘‘দোষীদের বাঁচাতে মুসলিমদের দায়ী করা হচ্ছে। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছি। সাম্প্রদায়িক বিভেদের প্রচারের বিরুদ্ধেও লড়াই চালাচ্ছি।’’

Comments :0

Login to leave a comment