Daspur Fire

দাসপুরে বিধ্বংসী আগুন, এখনও জ্বলছে ধূপের কারখানা

জেলা

চিন্ময় কর- দাসপুর
আগুনে ভস্মীভূত ধূপের কারখানা। ঘটনা দাসপুর থানার রসিকগঞ্জ এলাকায়। মঙ্গলবার রাত ২টো নাগাদ কারখানার জেনারেটর ঘরে আগুন লাগে। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে নিমিশে। সেই সময় রাত পাহারায় ছিলেন কালিপদ মালিক। তিনি পাশের বিল্ডিং-র দোতালা থেকে আগুন দেখতে পান। তিনি সিড়ি দিয়ে নামার আগেই গোটা বিল্ডিংএ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কারখানার মালিক রাজকুমার দাস ম্যানেজারকে ফোন করে দোতালা বাড়ির ছাদে উঠে পাশের পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বাঁচেন। খবর যায় দমকলে। রাস্তা সরু হওয়ায় যদিও মাঝ রাস্তায় এসে আটকে পড়ে দমকল। ১০ মিনিটের রাস্তায় দমকল পৌঁছতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা। দমকল কর্মীরা ১০ ঘন্টা লড়াই চালিয়েও আগুন আয়ত্বে আনতে পারেন নি। 
দুটি পুকুরে থেকে সেচের মেসিন বসিয়ে এলাকার মানুষ সহ হাজারের বেশি শ্রমিক আগুন আয়ত্বে আনতে পারেনি। দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন গ্রাস করে গোটা কারখানা। চারটি বিল্ডিং মজুদ কোটী কোটী টাকার তৈরী থাকা ধূপ তৈরির সরঞ্জাম, আট ১০ টি পন্যবাহি ছোটো গাড়ি, বাইক, টেক্সি পুড়ে সম্পূর্ণ ভশ্মীভূত হয়ে যায়। কারখানার পাশে একটি রেশন দোকানও পুড়ে গেছে। এই আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কমপক্ষে ৬ হাজারের পরিবার।
স্বপন সাহা নামে ওই কারখানার এক শ্রমিক বললেন, ‘‘দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কাজ করছি এই কারখানায়। এই ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। ঘটনাস্থল থেকে মাত্র পৌনে ২কিমি দূরে কাটান বাজারে দমকলের সাব স্টেশন। সরাসরি ঢালাই রাস্তায় এসে আটকে পড়ে দমকলের ইঞ্জিন। সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পিছিয়ে অন্যপথে ৫কিলোমিটার ঘুর পথে আসতে গিয়ে দেড় ঘন্টা দেরিতে পৌচায় দমকল। তাঁর বক্তব্য দমকল পৌচাতে দেরি হয়ওয়া আগুন পুরো কারখানা গ্রাস করে ফেলে’’।
১৯৮২ সালে এই কারখানা গড়ে ওঠে মাত্র কয়েকটি টিনের চালা ঘরে। পশ্চিম বঙ্গ সরকারের কুটির শিল্প প্রসারে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে গড়ে ওঠা সেই ধূপ বিস্তার লাভ করে। বর্তমানে স্থায়ী শ্রমিক ৬০০’র বেশি। চুক্তিতে কাজ করেন দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক। দাসপুর ও ঘাটাল দুই ব্লকের ৬ হাজারের বেশি পরিবার এখান থেকে ধূপ কাঠি তৈরীর উপকরণ নিয়ে গিয়ে বাড়িতে তৈরী করেন। এই ধূপকাঠি কারখানার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সাব ডিলার, হোলসেলার মিলিয়ে আরো কয়েকশ পরিবার।


জানাযায় এই ধূপের ফ্যাক্টরিতেই প্রতিনিয়ত দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে,আর সেই ধুপের ফ্যাক্টরিতে রাত দুটো নাগাদ আগুন লাগে এমনই অনুমান করছে স্থানীয় মানুষ জন। জানায়ায় দাসপুরের বাসিন্দা রাজকুমার দাসের এই ধূপের ফ্যাক্টরি। খবর পেয়ে ঘাটাল দমকল বিভাগ থেকে ঘটনাস্থলে দমকলের দুইটি ইঞ্জিন আসলেও, কোনভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। কিন্তু কি কারণে অগ্নিকাণ্ড এখনো জানা যায়নি। ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। ঘটনাস্থলে রয়েছে দাসপুর থানার পুলিশ। এদিন বিকাল ৪টে পর্যন্ত আগুন সম্পুর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেন। পাঁশকুড়া, মেদিনীপুর ও গড়বেতা থেকে দমকলের ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালাচ্ছে। মোট ৬ টি ইঞ্জিন ও ৫ টি পাম্প বসিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চালানো হচ্ছে। রাত সাড়ে নটার খবরে জানা গেছে আগুন নিয়ত্রণে এলেও কারখানার ভিতরে আগুন ধিকধিক জ্বলছে। তবে ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর নেই।

Comments :0

Login to leave a comment