নয় বছরের এক আদিবাসী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল স্থানীয় কিশোরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর থানা এলাকায়। অভিযোগ, সবুজ সরকার নামে গ্রামের এক কিশোর ওই নাবালিকাকে বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করে গাঢাকা দেয়। এ ঘটনার পরে জ্ঞান হারায় ওই নাবালিকাটি। ওই সময় পরিবারের সদস্যরা দিনমজুরের কাজে বাইরে ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানায়, সংজ্ঞা হারানোর পর সে একাই বাড়ির মেঝেতে পড়েছিল। এক সময় তার সম্বিৎ ফিরে আসে। দিনমজুরের কাজ করে পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ফিরে এসে তাকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর ওই নাবালিকা অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করার পর রাতের দিকে পরিবারের সদস্যেদের সব জানায় সে। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি আদিবাসী সমাজের নেতৃত্বের নজরে আনে। ঐদিন তাকে ইসলামপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে চরম হয়রানি শিকার হয় বলে অভিযোগ। তার পরিবারের সদস্যরা জানান, হাসপাতালে তাকে কোন রকম চিকিৎসা না করে ইসলামপুর থানায় পাঠায়। পুলিশ কোন উদ্যোগ নেয় নি বরং তাকে বসিয়ে রাখা হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই সোমবার আদিবাসী সমাজ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ইসলামপুর থানা ও মহকুমা হাসপতালে। চাপে পড়ে পুলিশ ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে এবং নাবালিকাকে ইসলামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা ইসলামপুর পঞ্চায়েত সমিতির বামফ্রন্টের প্রাক্তন সভাপতি মালতি হেমব্রম ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। পুলিশ ও হাসপাতালের ভূমিকা চূড়ান্ত অমানবিক। আদিবাসী বলে কি তার চিকিৎসার অধিকার নেই। আমরা বিষয়টি নিয়ে যতদূর যাওয়া যায় যাব’’। ঘটনায় অভিযুক্তের চূড়ান্ত সাজার দাবি জানাচ্ছি। আদিবাসী জমি রক্ষা কমিটির ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাসকেল হাঁসদা ক্ষোভের সাথে জানান, ‘‘একজন অসুস্থ আদিবাসী শিশুর কি চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নেই - তা না হলে , এমন হয়রানির অর্থ কি। পুলিশের ভূমিকা ছিল অতি নিন্দনীয়। চিকিৎসা দিতে গড়িমসি করছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও থানা দায় এড়াতে চেয়েছিল। অবশেষে আমরা জোট বাঁধতে শুরু করলে হাসপাতাল ওই শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা হয় এবং অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়’’। হাসপাতাল সুপার সুরজ সিনহা জানান, ‘‘আগামীতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেই দিকে নজর থাকবে’’।
Comments :0