NITISH BJP

গরহাজির তেজস্বী, রাজ্যপালের কাছে নীতীশ, জোরালো ভোলবদলের আলোচনা

জাতীয়

শুক্রবার পাটনার ফুলয়ারিশরিফে সরকারি অনুষ্ঠানে নীতীশ কুমার।

বিকেলের চা পানের আসরে হাজির থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। কিন্তু পাটনার রাজভবনে গরহাজির রইলেন সঙ্গী আরজেডি নেতা এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। তারপর থেকে আরও জোরালো হয়েছে আলোচনা, ফের ‘পালটু কুমার’ হতে চলেছেন নীতীশ। 
বিহারের সরকারে জেডি(ইউ) নেতা নীতীশের প্রধান দুই জোটসঙ্গী আরজেডি এবং কংগ্রেস। দিনভর নানা খবর ছড়ালেও সরাসরি কোনও মন্তব্য দু’দলেরই কোনোটিই করেনি। বিহারে রাজনৈতিক মহলের বড় অংশ যদিও দাবি করছেন রবিবারই ফের বিজেপি’র হাত ধরবেন নীতীশ। পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে বিজেপি-ও। দু’দলই তাদের বিধায়ক এবং সাংসদদের পাটনায় জরুরি তলব করেছে। 
২৮ জানুয়ারি, রবিবার, নির্ধারিত সব কর্মসূচি বাতিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সেদিনই বড় কোনও ঘোষণা হতে পারে বলেও অনুমান রয়েছে।
একাংশের বক্তব্য, ফের ডিগবাজির কৌশলে আপত্তি রয়েছে নীতীশের দলেও। দলের সভাপতির পদ থেকে সদ্য লালন সিংকে সরিয়েছেন নীতীশ। লালন বিজেপি’র হাত ধরতে নারাজ। 
বিরোধী দলগুলি জাতীয় স্তরে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে সমবেত হওয়ার পর থেকে চোখে পড়ার মতো প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে চলেছে বিজেপি। প্রায় মৃত নিজেদের এনডিএ জোটকে জীবিত দেখাতে বৈঠকও করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা। জোট এবং বিরোধী দল ভাঙানোর তৎপরতাও চোখে পড়েছে। 
শুক্রবার সন্ধ্যে পর্যন্ত স্পষ্ট নয় কেন অবস্থান বদলাতে মরিয়া হয়ে উঠলেন নীতীশ। গত বছরই তাঁকে দেখা গিয়েছিল বিজেপি বিরোধী দলগুলির কাছে একজোট হওয়ার বার্তা নিয়ে বৈঠক করতে। পাটনাতেই প্রথম বৈঠকও হয়। ‘ইন্ডিয়া’র সাম্প্রতিক গতিপ্রকৃতিতে ঘনিষ্ঠ মহলে খেদ জানালেও একেবারে ভোলবদলের মতো কোনও ঘটনা নেই। 
নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করায় ২০১৪’র লোকসভা ভোটের আগে এনডিএ ছেড়েছিলেন নীতীশ। ২০১৫’তে বিধানসভা ভোট লড়েছিলেন কংগ্রেস, আরজেডি জোটের শরিক হয়ে। তবে পরের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই ফের বিজেপি’র সঙ্গে ভিড়ে যান। ২০২০’র বিধানসভায় সবচেয়ে শোচনীয় হয় নীতীশের হাল। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে না সরালেও বিজেপি’র কাছে গুরুত্ব কমে যায়। ফের নীতীশ বিজেপি’কে ছেড়ে আরজেডি-কংগ্রেস জোটে শরিক হন। এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে আবার শিবির বদলের আলোচনা তাঁকে ঘিরে।
ঘনঘন অবস্থান পরিবর্তনের জন্য আরজেডি’র প্রতিষ্ঠাতা লালুপ্রসাদ যাদবই নীতীশকে ‘পালটু কুমার’ বলতেন। ফের সেই নাম নিয়েই গুঞ্জন বিহারে, সারা দেশেও। আলোচনা জোর পেয়েছে বিজেপি সাংসদ এবং নীতীশের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদীর মন্তব্যেও। মোদী বলেছেন, ‘‘রাজনীতিতে বরাবরের মতো কারও জন্য দরজার বন্ধ করতে নেই।’’
আরজেডি সাংসদ সুবক্তা মনোজ ঝা সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে বলেছেন, ‘‘রাজনীতিতে এমন অনিশ্চয়তা কাটাতে নিশ্চয় উদ্যোগী হবেন নীতীশ কুমার। তিনি নিশ্চয় অবস্থান স্পষ্ট করবেন।’’ দলেরই জাতীয় সহসভাপতি শিবানন্দ তিওয়ারি রবিবার বলেছেন, ‘‘গতকালই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। তিনি দেখা করেননি। তবে মনে করিনা যে ফের কোনও ভুল তিনি করবেন।’’

Comments :0

Login to leave a comment