PD Editorial Votes

ভোট পর্যালোচনায় মতাদর্শের লড়াইয়ে জোর ‘পিপলস ডেমোক্র্যাসি’র সম্পাদকীয়তে

জাতীয়

হিন্দুত্ববাদের চিন্তায় প্রভাবিত ভোটদাতা তৈরি করতে পেরেছে বিজেপি। সব কিছুর ওপরে হিন্দু পরিচয়, নির্দিষ্ট অংশের মধ্যে এই ধারণা বিজেপি তৈরি করতে পেরেছে। ২০১৯’র লোকসভা ভোটেই তা দেখা গিয়েছিল। উত্তর ভারত এবং পশ্চিম ভারতেই এই প্রবণতা সবচেয়ে স্পষ্ট। তিন রাজ্যের ভোটে এই বিষয়টি প্রধান হয়েছে।
হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণে এই মতামত জানানো হয়েছে ‘পিপলস ডেমোক্র্যাসি’-র সম্পাদকীয়তে। সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাপ্তাহিক মুখপত্রে জোর দেওয়া হয়েছে মতাদর্শগত সংগ্রামের ওপর। 
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, কংগ্রেস এবং বিরোধী প্রধান দলগুলি এই হার থেকে সঠিক শিক্ষা নিয়ে বিকল্প রাজনৈতিক, মতাদর্শগত এবং অর্থনৈতিক ভাষ্য তৈরি করতে পারলে এবং বিজেপি-বিরোধী ভোট কার্যকরভাবে টেনে আনতে পারলে ২০২৪’র লোকসভা নির্বাচনে প্রকৃত লড়াই সম্ভব। 
মধ্য প্রদেশ এবং রাজস্থানে কংগ্রেসের ‘নরম’ হিন্দুত্ব লাইনের উদাহরণ দিয়েছে সম্পাদকীয়। রাহুল গান্ধী ফল বেরনোর পর বলেছিলেন, ‘মতাদর্শের লড়াই চলবে।’
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, প্রশ্নটা এখানেই। হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে মতাদর্শগত লড়াই কোথায় লড়ছে কংগ্রেস? তার বদলে মধ্য প্রদেশে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথ নরম হিন্দুত্ব প্রয়োগের মুখ্য দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ‘বাবা’ এবং ‘স্বামী’-দের তুষ্ট করে আরএসএস-বিজেপি’কে হারিয়ে দেবেন ভেবেছিলেন। ২০২০’র আগস্টে যেদিন অয্যোধ্যার রামমন্দিরে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হলো, কংগ্রেসের সব দপ্তরে হনুমান চালিশা পাঠের ডাক দিয়েছিলেন। যে রাজ্যে আরএসএস ধারাবাহিক কাজ করে যাচ্ছে সেখানে এমন অবস্থান বড় অংশের মধ্যে হিন্দুত্বের ধারণাকেই জোরালো করে গিয়েছে। ছত্তিশগড়েও মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল সরকারি কর্মসূচিকে ‘রাম বন গমন পথ’ নাম দিয়ে একই পথে চলেছেন। দুই রাজ্যেই সাম্প্রদায়িকীকরণ এবং সংখ্যালঘুদের আক্রমণের লক্ষ্য বানানোর রাজনীতি বাধাহীন পথে ছুটতে পেরেছে।  মধ্য প্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে বোঝাপড়া না করার বিষয়টিতেও প্রশ্ন তুলেছে সম্পাদকীয়।
এই দুই রাজ্যে আদিবাসী আসন ১৯ থেকে বাড়িয়ে ৪৪ করেছে বিজেপি। আদিবাসীদের হিন্দুত্বকরণ ধারাবাহিকভাবে চালাচ্ছে বিজেপি। খ্রীস্টান আদিবাসীদের ওপর আক্রমণও হচ্ছে। জাতিভিত্তিক জনগণনার প্রতিশ্রুতি কাজ দেয়নি কারণ তাকে কাজে লাগানোর মতো রাজনৈতিক দল এখানে নেই। তাছাড়া অন্য অনগ্রসর অংশে বিজেপি’র বড় সমর্থন রয়েছে। সবার আগে হিন্দু পরিচয়, এই ধারণা সংহত করা হয়েছে।
রাজস্থান প্রসঙ্গে সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, রাজ্যের কংগ্রেস সরকার গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সামাজিক কল্যাণ প্রকল্প নিয়ে চলেছে। প্রশাসন পরিচালনাও ছত্তিশগড়ের তুলনায় ভাল ছিল। বলা হয়েছে, ছোট ছোট জাতভিত্তিক সমীকরণ কাজে লাগানোর কৌশল নিয়েছে বিজেপি আরএসএস। রাজস্থানে তা বিশেষ কার্যকর হয়েছে। সেই সমীকরণেই প্রার্থী বাছাই করেছে বিজেপি।

Comments :0

Login to leave a comment