চা শ্রমিদের দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৫ ডেসিবল জমির পাট্টা, কয়েক পুরুষ ধরে চা বাগান এলাকায় বাস করছে এমন বহু পরিবার। আর চা বাগানের বিশাল জমিতে বাণিজ্যিক আবাসন, মল তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার। চা বাগান পর্যটনের নামে শ্রমিকদের বিপন্ন করা চলবে না।
বুধবার জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে এই বক্তব্য হাজির করেছেন শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। শ্রমিকদের মজুরি সঙ্গত মাত্রায় বাড়ছে না। সময়মতো বোনাসও দেওয়া হচ্ছে না। অথচ শ্রমিকদের অবদানেই চা বিক্রি করে মুনাফা কামাচ্ছে মালিকরা। রাজ্য এবং কেন্দ্রের সরকার মালিকদের পক্ষে একতরফা অবস্থান নিয়েছে। ফলে আন্দোলন চলবে, জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই বোনাস দেওয়ার দাবি তুলেছে চা শ্রমিক সংগঠনগুলির জয়েন্ট ফোরাম। চা বাগানে জমি ব্যবসায়ীদের হাতে দেওয়ার আন্দোলনে নেমে হামলা হয়েছে ফোরামের নেতৃবৃন্দের ওপর। দার্জিলিং এর রংলী ও রংলীয়ট থানার অন্তর্গত দার্জিলিং জেলার রিমনিং চা বাগানে। মূলত কর্পোরেটদের হাতে চা বাগানের জমি তুলে দেবার জন্য গোপনে জমির সার্ভে করা হচ্ছিল শাসকের মদতে। আর এই খবর জানতে পেরেই বাধা দিতে এগিয়ে এসেছিলেন জয়েন্ট ফোরামের নেতৃত্ব।
বাধা পেয়ে জয়েন্ট ফোরামের স্থানীয় নেতৃত্বের ওপরে আক্রমণ করে শাসক মদতপুষ্ট গুন্ডাবাহিনী। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন জয়েন্ট ফোরামের নেতা সুনীল রাই, ধীরাজ রাই, প্রাণেশ শেরপা ও প্রণব রায়। বর্তমানে তারা গুরুতর আহত হয়ে দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিন ডেঙ্গুয়াঝারে হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
সকালে কাজে যোগ দেওয়ার আগে ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে জয়েন্ট ফোরামের অংশ বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শোনেন। সিআইটিইউ অনুমোদিত চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের নেতা প্রফুল্ল লাখরা, জয়েন্ট ফোরামের অন্যতম নেতা জেটিএমসি’র নেতা রোহিত তিরকে বলেন, শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছেন না। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কোম্পানিকে জানুয়ারি মাস থেকে ন্যূনতম মজুরি দেওয়ার কথা। কিন্তু সরকার ও মালিকপক্ষ উভয়েই এ বিষয়ে উদাসীন। আমরা চাই অবিলম্বে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চালু হোক।
জয়েন্ট ফোরামের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘‘বর্তমান মূল্যসূচকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুসারে ন্যূনতম মজুরি দ্রুত ঘোষণা ও কার্যকর করতে হবে। ভার্চুয়াল মিটিং করে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুজোর বোনাস ঘোষণা করতে হবে।’’
Comments :0