বাইকবাহিনীর টহল ছিল। সমাবেশে এলে ছবিও তুলে রাখা চলছিল। জনতার জবাব, ছবি তুলে রাখো। চোর, ডাকাত তাড়াবই। এভাবেই হুমকি ধমক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে, লুঠেরাদের সমঝে দেওয়ার বার্তা দিল সবংয়ের সমাবেশ।
চড়া রোদেও সোমবার বিকাল তিনটার আগে থেকেই সবংয়ের প্রতিটি গ্রাম থেকে সমাবেশে সামিল হলেন বঞ্চিত উপেক্ষিত ও তৃণমূলের সন্ত্রাস জরিমানায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ।
এবার হিসাব নেবার লড়াইয়ের ডাক সমাবেশ মঞ্চ থেকে। লুঠেরাদের হঠিয়ে জনগণের পঞ্চায়েত গড়ার শপথে জন সমাগমে সবং হাইস্কুল ময়দান উত্তাল হলো।
সাগরদিঘি বার্তা দিয়েছে, একবার সাহস করে রুখে দিন তাহলে এরাজ্যের চোর লুঠেরা পালাবার পথ খুঁজে পাবে না, আর দেশের ডাকাতদেরও ঠাঁই হবে না এরাজ্যে। এমন বার্তা দিয়ে দেশ ও রাজ্যের দুই শাসক দল বিজেপি ও তৃণমূলকে তীব্র সমালোচনা করে জনগণকে আরো ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানালেন সিপিআই(এম)’র জেলা সম্পাদক ও রাজ্য কমিটির সদস্য সুশান্ত ঘোষ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখার্জী, প্রতীক উর রহমান, গীতা হাঁসদা সহ জেলা পার্টি নেতৃত্ব গোপাল প্রামানিক ও চন্দন গুচ্ছাইৎ।
সমাবেশকে বানচাল করতে তৃণমূলের বাইক বাহিনীকে নামানো হয় রাতের অন্ধকারে গ্রামে গ্রামে টহল দিতে। জনগণের ক্ষোভ বুঝে পিছু হটে তৃণমূলের বাইক বাহিনী। এদিন সমাবেশের আগে রাস্তার মোড়ে জমায়েত করে তৃণমূলের দুষ্কৃতিরা। কোথাও কোথাও সমাবেশে যোগ দিতে আসা মানুষের ছবি তোলা হয়। সমাবেশে আসা মানুষ জানায়,‘ ভালো ছবি করে তুলে রাখো, তাতে লাভ হবে না। আমরা চোর ডাকাত এবার তাড়াবো’। জনগনের ক্ষোভে তৃণমূলের বাইক বাহিনী পিছু হঠে।
সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘এ রাজ্যের একটা জালিয়াত সরকার আপামর জনসাধারণের জীবন জীবিকায় সঙ্কট নামিয়ে এনেছে। শিক্ষা স্বাস্থ্য সহ সরকারি সমস্ত ধরনের দপ্তরে দুর্নীতিতে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পড়েছে। এখন বলছে টাকা নেই, তাই ডিএ দিতে পারবে না। ২০১১ সালে রাজ্যের দেনা ছিল ১ লক্ষ ৭২ কোটি টাকা। আর এই সময়ে রাজ্যের ঋণ ৫ লক্ষ ৯০ কোটি টাকা। পঞ্চায়েত থেকে এই লুঠেরা তৃণমূল সরকার ও তাদের দোসর বিজেপিকে হঠাতে হবে। জনগণের পঞ্চায়েত গড়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। জনগনের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।’’
মীনাক্ষী মুখার্জী বলেন, তৃণমূল ও বিজেপি এই দুই সরকার কৃষকদের ঠকিয়েছে, শ্রমিকদের অধিকার কেড়েছে, ছাত্র যুবদের স্বপ্নকে চুরমার করেছে। চাকরি বিক্রি করেছে, শিক্ষার পরিকাঠামো ধ্বংস করে শিক্ষার অধিকার কেড়ে নিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে পুষ্ট করছে। তৃণমূলের দুর্নীতিবাজ নেতারা এখন বিজেপি দলের নেতা ও সম্পদ হয়েছে। গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে সমবেত করে বিজেপি ও তৃণমূলকে জনবিচ্ছিন্ন করতেই হবে।’’
প্রতিক উর রহমান বলেন, ‘‘সবং এর মাটি অনাথ বন্ধুদের মাটি। লুঠেরা তৃণমূলের মাটি নয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৬৭২টি শিক্ষালয় বন্ধ হওয়ার মুখে তার ১৭টি এই সবং ব্লকে। সরকারি স্কুল বন্ধ হচ্ছে, সেখানে আরএসএস’য়ের স্কুল গজিয়ে উঠছে।’’
সনাবেশে গীতা হাঁসদা, গোপাল প্রামানিক বক্তব্য রাখেন। সভাপতির করেন চন্দন গুচ্ছাইৎ।
Comments :0