STUDENT SUICIDE DHARMENDRA PRADHAN

সিকরে তিনদিনে আত্মঘাতী দুই ছাত্র, শিক্ষাবাণিজ্যে নিশ্চুপ প্রধান

জাতীয়

চলতি বছরের শিক্ষা বাণিজ্যের শহরে আত্মঘাতী ছাত্রের সংখ্যা ২৩। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১৫। রবিবার ফের ছাত্র আত্মহত্যার খবর মিলেছে, কাছের সিকর থেকে। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের দাবি, কোচিং ছাড়াই সাফল্যের রাস্তা খোঁজার কাজ চলছে।  

রাজস্থানের কোটাতেই একের পর এক বেসরকারি কোচিং প্রতিষ্ঠানে ভিড় করে ছাত্রছাত্রীরা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আইআইটি এবং ডাক্তারিতে নিট’র মতো প্রবেশিকায় পাশ করার লক্ষ্যে। প্রতিযোগিতার দৌড়ে থাকতে না পেরে চলতে থাকে একের পর এক আত্মহত্যা। কেবল কোটা নয়, দেশে ছাত্রছাত্রীদের আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। 

রবিবারই রাজস্থানের সিকর শহরে নীতীন ফৌজদার নামে এক ছাত্রের দেহ মিলেছে। ডাক্তারি প্রবেশিকা নিট-র প্রস্তুতি নিতে ১৮ বছরের এই ছাত্র ভর্তি হয়েছিল স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারে। থাকত একটি বেসরকারি হস্টেলে। গত তিনদিনে শিকরে দুই ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর মিলেছে। পুলিশ এবং সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন দুই ছাত্রই আত্মঘাতী হয়েছে। এর আগে যে ছাত্রের দেহ মিলেছে শিকরে, সে-ও নিট পরীক্ষার্থী ছিল। 

সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান বলেছেন, ‘‘কোটায় পরপর ছাত্রের মৃত্যু স্পর্শকাতর ঘটনা। আমাদের যৌথ দায়িত্ব ছাত্রদের চাপমুক্ত রাখা।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘দেশে ইতিবাচক উদাহরণও অনেক রয়েছে। সেগুলিকে কাজে লাগানো দরকার প্রযুক্তি, সামাজিক প্রচার এবং পরমার্শদানের মাধ্যমে।’’

প্রধানের দাবি, ‘‘সিলেবাস সংক্রান্ত নিয়ামক প্রতিষ্ঠান এনসিইআরটি বিষয়টি নিয়ে গভীর চর্চা করছে। শিক্ষা মন্ত্রকও কাজ করছে।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেছেন, ‘‘ডামি স্কুলের বিষয়ে বিভিন্ন অংশ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।’’ 

কোটার মতো বিভিন্ন কেন্দ্রে বেসরকারি কোচিং সেন্টারে ভর্তি ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে ক্লাস করে না। নিজের রাজ্য বা কোটারই কোনও স্কুলে নাম লিখিয়ে কেবল কোচিং ক্লাসই করে। এই ‘ডামি স্কুল’ ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি করছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাঁরা বলছেন, স্কুলে যে যৌথজীবনের বাতাবরণ থাকে, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোচিং ক্লাসে তা থাকে না। স্কুলে না যাওয়া বাড়তি ক্ষতি করছে।’’ 

রাজস্থান সরকার সম্প্রতি ছাত্র আত্মহত্যা রোধে গাইডলাইন তৈরি করেছে। বছরে সারা দেশ থেকে প্রায় ২.৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রীরা কোটায় যায় প্রস্তুতি নিতে। রাজস্থান সরকারের গাইডলাইন বলছে, বেশি নম্বর পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে মাতামাতি করা হয়। অন্যরা হীনমন্যতায় ভোগে। রুটিন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা যাবে না। ‘ভালো’ এবং ‘খারাপ’ ভাগ করে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো বন্ধ করতে হবে। ক্লাস নাইনের নিচে কাউকে ভর্তি নেওয়া যাবে না। মাঝপথে চলে যাওয়ার সুযোগ রাখতে হবে। ১২০ দিনের মধ্যে পরিবারকে টাকা ফেরাতে হবে। 

প্রধান বলছেন, ‘‘সরকারি নবোদয় বিদ্যালয়ে সাফল্য রয়েছে কোচিং ক্লাস ছাড়াই। ফলে স্কুল শিক্ষাকে প্রয়োজনীয় মানে নেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যেরও।’’  

শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন অংশের বক্তব্য, সরকারি স্তর থেকে বাণিজ্যকরণ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষানীতি সরাসরি তার পক্ষে সওয়াল করছে। ছাত্রদের আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে। প্রধান সে সম্পর্কে নিশ্চুপ থেকেছেন।

Comments :0

Login to leave a comment