জলপাইগুড়িতে সিপিআই(এম) দপ্তরের হামলা চালালো তৃণমূল কংগ্রেস। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা দেখিয়ে চলে বিক্ষোভ। সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিরোধে নামে সিপিআই(এম) কর্মীরা। জড়ো হয়ে যান বিপুল সংখ্যায় ছাত্র-যুবরা। হাতে হাত ধরে প্রতিরোধ গড়েন তাঁরা। পুলিশের সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নাম করে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক কায়দায় এই কার্যকলাপের কড়া নিন্দা করেছে সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ।
হামলার খবর পেয়েই জড়ো হন প্রচুর ছাত্রছাত্রী। সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থক, বহু নাগরিকও প্রতিবাদ করেন এমন আচরণের। তীব্র প্ররোচনা তৈরির রাজনীতিতে অভ্যস্ত তৃণমূল কড়া বাধার মুখে পড়ে। জলপাইগুড়ি কদমতলা এলাকা থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিবাদ মিছিলটি ডিবিসি রোড হয় থানা মোড়ের দিকে যাওয়ার পথেই সিপিআই(এম) দপ্তরের সামনে অতর্কিত হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল ছাত্রপরিষের রাজ্য সম্পাদক দেবজিৎ সরকারের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিলটি চলছিল।
যাদবপুরে র্যা গিংয়ে নিহত ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর জন্য বিচার চেয়ে রাজ্যের সর্বত্র রাস্তায় এসএফআই। খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত চালানোর দাবি তুলেছে সিপিআই(এম)। ঘটনায় জড়িতদের সঙ্গে ক্যাম্পাসে পরিচিত এমন সংগঠনের যোগসাজশ মিলেছে যারা বরাবর এসএফআই বিরোধী। বুধবারই যাদবপুরে তৃণমূল ডেপুটেশন দিতে গেলে বহিরাগতদের ঘিরে প্রতিবাদ জানায় ছাত্রদের একাংশ। পুরো ঘটনাকে সিপিআই(এম) এবং সংগঠিত বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে চালিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি স্বয়ং। দু’দিন আগে বেহালায় সভা থেকে প্রমাণ, তথ্যের ধারেকাছে না গিয়ে ‘আগমার্কা সিপিএম’ জড়িত বলে জনসভায় প্রচার করেন তৃণমূল নেত্রী। যাদবপুরেরই ছাত্রছাত্রীদের একাংশ জানিয়েছে যে র্যাধগিংয়ে জড়িতরা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নাম নিয়ে চলে, বাইরে এদের অনেকেই তৃণমূল বা বিজে’র সমর্থক কর্মী।
এদিন জলপাইগুড়িতে সিপিআই(এম) দপ্তরের সামনে পুলিশ ছিল। তৃণমূল কিছু মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে আসে। ‘তৃণমূলের ক্ষমতা’ দেখিয়ে দেওয়ার স্লোগান তুলতে থাকে। আগুন জ্বালানো হয় রাস্তায়। পুলিশ দুই অংশের মাঝে দাঁড়িয়ে যায়। তার মধ্যেও হামলা চালাতে এলে প্রতিরোধ হয়। এসএফআই’র কর্মীরাও ছিলেন। স্লোগানে মুখর হন তাঁরাও।
দলীয় কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ এদিন আইসি কোতয়ালি অর্ঘ সরকারের সামনেই সিপিআই(এম) কর্মী এবং এসএফআই সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় তৃণমূল। সব অংশের মানুষকে প্রতিবাদে শামিল হওয়ার ডাক দিয়েছে সিপিআই(এম)।
একাধিক সিপিআই(এম) কর্মী আক্রান্ত। পার্টির নেতা কর্মীদেরই তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ।
প্রতিবাদে ১৭ আগস্ট বিকাল ৫ টায় ধিক্কার মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।
জমায়েত স্থান জেলা দপ্তর, ডিবিসি রোড।
আহত এসএফআই কর্মীদের অ্যাম্বুলেন্সে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য নেতা দেবজিৎ সরকার (ডিস্কো) আক্রান্ত এসএফআই কর্মীদের ওপর চড়াও হন। সেখানেও এসএফআই কর্মীরা একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন, পাশে দাঁড়ান হাসপাতালের কর্মচারীরা। বাধ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে পালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। হামলা চালানোয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভ্রদীপ সরকার দেবজিৎ সরকার গৌরব ঘোষ এছাড়াও ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর নিলম শর্মা, জেলা তৃণমূল যুব নেতা অজয় সাহা সহ অন্যান্য দুষ্কৃতীরা।
অ্যাডিশনাল এসপি, জলপাইগুড়ির ডিএসপি হেডকোয়ার্টার, সমীর পাল আইসি কোতোয়ালি অর্ঘ্য সরকারের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী জেলা পার্টি দপ্তরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা চার এসএফআই প্রাক্তনী এবং পার্টির রাজ্য সম্পাদক মন্ডলী সদস্য জিয়াউল আলম, জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য পীযূষ মিশ্র, পার্টির জেলা কমিটির সদস্য সদর পশ্চিম এরিয়া কমিটির প্রাক্তন এরিয়া সম্পাদক তমাল চক্রবর্তী, এবিটিএ জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায়, এ বি পি টি এর এর জেলা নেতৃত্ব জ্যোতি বিকাশ কর কে থানায় নিয়ে যায়।
আহত হয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি, স্নেহা দত্ত অরিজিৎ দাস, আব্দুল করিম, যুবনেত্রী সোহিনী রায় সহ আরো ছাত্র যুব কর্মীর।
সিপিআই(এম) জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য পুলিশকে বলেন নেতৃবৃন্দকে এখনি ছাড়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামতে বাধ্য হবে সিপিআই (এম)। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন তৃণমূল দল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুষ্কৃতীদের দিয়ে জেলা সিপিআইএম কার্যালয় হামলা করেছিল। পুলিশের সামনে এসএফআই কর্মী পার্টি কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এসএফআই। তাই উর্দিধারীরা নিজেদের পদোন্নতির জন্য পার্টি নেতৃবৃন্দকে সিপিআইএম জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে এরেস্ট করেছে। হামলাকারী তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
Comments :0