শাসকের আইন মেনে রাজ্য চলছে। তারফলে কায়েম হয়েছে দুষ্কৃতিদের রাজত্ব। এবং সেই রাজত্বে অবলীলায় বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলা করে শৈশব। বিস্ফোরণে উড়ে যায় আঙুল। রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানালেন সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
রবিবার দেগঙ্গার কলসুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শেখের মোড়ে বোমা বিস্ফোরণে এক কিশোরের হাতের আঙুল উড়ে গিয়েছে বলে এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, তৃণমূল পার্টি অফিসের পিছনের বাগানে বোমা ভর্তি বস্তা রাখা ছিল। সেই বস্তাকে বলের বস্তা ভেবে ভুল করে আহত কিশোর। বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে তার আঙুল উড়ে গিয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘পশ্চিম বাংলায় গুলি বোমা পিস্তলের রাজত্ব চলছে। ফারাক্কায় বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে ৩ শিশু’র আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেল কয়েকদিন আগে। আজকে দেগঙ্গায় একই ভাবে বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে আক্রান্ত এক কিশোর। সে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।’’
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার কোনও বালাই নেই। দুষ্কৃতিদের আইন মেনে রাজ্য চলছে। কলকাতার উপকন্ঠে, সল্টলেকে যুবক খুন হয়েছে বলে খবর পাচ্ছি। শাসকের আইন, দুষ্কৃতিদের রাজত্ব।’’
রবিবার রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে তৃণমূলের এক প্রতিনিধিদল দক্ষিণ ২৪ পরগণার জয়নগরে যায়। প্রসঙ্গত, জয়নগরের বামনগাছি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামী সইফুদ্দিন লস্করের খুন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, খুনের ‘বদলা’ নিতে, ঘটনাস্থল থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে দলুয়াখাকি গ্রামের সিপিআই(এম) সমর্থক পরিবারের পরপর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় তৃণমূল কর্মীরা। খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে সাহাবুদ্দিন নামে এক প্রৌঢ়কেও পিটিয়ে মারে তৃণমূল কর্মীরা। সাহাবুদ্দিনের বাড়ির লোকের অভিযোগ, তিনি তৃণমূল সমর্থক ছিলেন।
সেই প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘জয়নগরে আজ তৃণমূলের নেতারা গিয়েছিলেন। তাঁরা বলেছেন দলীয় পর্যায়ে তদন্ত হবে। আমাদের প্রস্তাব, তৃণমূল নেতারা মুখ্যমন্ত্রীকে গিয়ে বলুক, আপনার পুলিশের উপর আমাদের ভরসা নেই। আমাদের দলীয় নেতা খুনের তদন্ত আমরা নিজেরাই করব।’’
এই ঘটনার রেশ ধরে চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘‘ফিরহাদ হাকিম জয়নগর গিয়ে ভালো কাজ করেছেন। তিনি খুন হওয়া তৃণমূল নেতার বাড়িও গিয়েছেন শুনলাম। কিন্তু যেই তৃণমূল কর্মীকে নেতা খুনের অভিযোগে তৃণমূলের লোকেরাই পিটিয়ে মারল, তাঁর বাড়ি কেন গেলেন না ফিরহাদ হাকিম? পক্ষপাতিত্ব থাকলে আর যাই হোক, মন্ত্রীর চেয়ারে বসা যায়না।’’
Comments :0