বিশ্বনাথ সিংহ: রায়গঞ্জ
বোমা বারুদের গন্ধ রায়গঞ্জের সমবায় নির্বাচনে। অভিযোগ তৃণমূলের দাদাগিরির। সাধারণ একটি সমবায় সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরগরম রায়গঞ্জ শহর। বামফ্রন্ট প্রার্থী ও তাঁদের পোলিং এজেন্টদের বের করে ভোট কেন্দ্র পুরোপুরিভাবে দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসক বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর অনুগামী এবং রায়গঞ্জ পৌরসভার একাংশ কো-অর্ডিনেটরদের বিরুদ্ধে। বামেদের অভিযোগ, বেলা ১২টা বাজতেই তৃণমূলের লোকজন তাঁদের ৩১ জন প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টদের ভোট গ্রহণ কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। যদিও বামেদের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন রায়গঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শিব শংকর রায় চৌধুরী।
রায়গঞ্জের মোহনবাটিতে অবস্থিত পিপলস কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটির ৩১ টি আসনে শুক্রবার নির্বাচন ছিল। নির্বাচনস্থল ছিল রায়গঞ্জ গার্লস হাই স্কুল ও বীণাদেবী প্রাথমিক বিদ্যালয়। পিপলস ক্রেডিট সোসাইটির আশেপাশে একাধিক হাই স্কুল থাকলেও প্রায় এক কিলোমিটার দূরের দুটি স্কুলে ভোট কেন্দ্র করায় প্রথমেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন বিরোধী প্রার্থীরা। অভিযোগ তুলেছিলেন ভোট লুট করতেই বন্দর এলাকায় ঘুপচির মধ্যে এই দুটি স্কুলকে ভোট কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। সিপিআই(এম) রায়গঞ্জ শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক তীর্থ দাস বলেন,‘‘রায়গঞ্জ শহরের মানুষ দেখেছেন কীভাবে বুথ জ্যাম এবং সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরী করে অনুষ্ঠিত হয়েছিল রায়গঞ্জ পৌরসভা থেকে একাধিক ভোট। ২০২৬ সালে আবারও রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে একটি সমবায় নির্বাচনে সেই একই ধারা বজায় রাখলো রায়গঞ্জের বিধায়কের অনুগামীরা এবং কয়েকজন কো-অর্ডিনেটর। এদের একটি সমবায় সমিতি সুষ্ঠু ভাবে ভোট করে জেতার সাহস নেই।’’
এদিন রায়গঞ্জ পিপলস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ভোটের দিন ছিলো। সকাল থেকেই দেশবন্ধুপাড়ায় প্রগতিশীল প্রার্থীরা জমায়েত ছিলেন। একসঙ্গে ভোট দিতে যান প্রায় ৩১ জন প্রার্থী এবং ভোটারা। অভিযোগ এদিন বেলা বাড়তেই ভোট কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করে তৃণমূল বিধায়কের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। রায়গঞ্জ হাই স্কুল এবং বীনাদেবী প্রাথমিক স্কুলের ভোট কক্ষে ভোট কর্মীদের সঙ্গে দুষ্কৃতীরাও। ভোট শুরুর অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে বেপরোয়া ছাপ্পা ভোট। কে ভোটের রির্টানিং অফিসার কে ভোট কর্মী বোঝা দায় হয়ে যায়।
প্রগতিশীল প্রার্থী তেজেস দাস, বিপুল মৈত্র, জয়দ্বীপ সেনগুপ্তদের অভিযোগ রায়গঞ্জের বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা বিধায়ক সামান্য একটা সমবায় ভোটে ২৬’র ভোটের রিহার্সাল দিয়ে প্রমাণ করে দিলো এরাজ্যের গণতন্ত্র কতটা বিপন্ন। ২০১৭ সালে পৌর সভা ভোটের বারুদের গন্ধের পরে সমবায় ভোটকে কেন্দ্র করে গোটা বন্দর এলাকা দুষ্কৃতীরা দখলে নেয়।
২০০৫ সালে পিপলস কো অপারেটিভ ব্যঙ্ক তৈরি হয়। মোট ভোটারের প্রায় ৭৪ শতাংশ ভোটার প্রগতিশীল। ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদন্ধিতায় ২২ টা আসনে জয় হয়েছে, যার অধিকাংশ প্রগতিশীল প্রার্থীরা দখল করেছে। ৬১ টা আসনের মধ্যে ৩৯ টা আসনে ভোট হবে। প্রার্থীরা ভোট কক্ষে পৌছানোর আগেই অধিকাংশ ভোট কাস্টিং হয়ে যায়। পুলিশের সামনে অবাধে চললো ভোট লুট। বোমা বারুদের সামনে ভোট লুটের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েই প্রগতিশীল প্রার্থীরা ভোট কক্ষ থেকে বেড়িয়ে আসতেই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়েই বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানীর বিজয় মিছিল করে।
Raiganj Cooperative Election
রায়গঞ্জের সমবায় নির্বাচনেও তৃণমূলের ভোট লুট

×
Comments :0