Jammu Kashmir SHAH

কাশ্মীরে ফিরল কত পণ্ডিত পরিবার? বিল পাশ করিয়েও নীরব শাহ

জাতীয়

ছবি সংগ্রহ থেকে।

উত্তপ্ত বিতর্কের মধ্যে লোকসভায় পাশ হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত দু’টি বিল। জম্মু ও কাশ্মীর আসন সংরক্ষণ সংশোধন বিল এবল জম্মু ও কাশ্মীর আসন পুনর্গঠন সংশোধন বিল সংক্রান্ত বিতর্কে জবাবী ভাষণ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। 
বিতর্কের জবাবে দু’টি বিলকে উচ্ছেদের শিকার কাশ্মীরী পণ্ডিত সম্প্রদায়ের অধিকারের স্বীকৃতি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন শাহ। পুনর্গঠনে যদিও এই অংশের জন্য মনোনীত সদস্যদের মাত্র একজনের বিধানসভায় প্রতিনিধিত্ব করার সংস্থান রয়েছে। 
প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহরু সংক্রান্ত মন্তব্যে আপত্তি জানিয়ে বেরিয়ে যান কংগ্রেস এবং বিরোধী বিভিন্ন দলের সদস্যরা। শাহের বক্তব্য, কাশ্মীরে সমস্যার জন্য দায়ী নোহরুর দু’টি ভুল। এক, যুদডধে ভারতীয় সেনা পাকিস্তান সেনাকে কোণঠাসা করে এনেছিল। সেই সময় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করে ভারত। তিনদিন বাদে করলে পাক অধিকৃত অঞ্চল দখলে আনা যেত। দুই, কাশ্মীর সমস্যার বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রসংঘে সুপারিশ করেন নেহরু। 
লোকসভার বিতর্কে চলে এসেছে সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫ক ধারা। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার এই দুই ধারা বাতিল করা হয়। শাহ বুধবার বলেন, ‘‘আমরা দাবি করিনি এই দুই ধারা বাতিল করে সন্ত্রাসবাদ নিশ্চিহ্ন করে দেব। বলা হয়েছিল কমানো হবে। ১৯৯৪-২০০৪ সন্ত্রাসবাদের ঘটনা ছিল ৪০ হাজার ১৬৪। ২০০৪-২০১৪ ঘটনা ছিল ৭ হাজার ২১৭। ২০১৪-২০২৩ এই সংখ্যা ২ হাজারের কাছাকাছি।’’ 
নতুন বিল আইনে পরিণত হলে জম্মুতে বিধানসভা আসন ৩৭ থেকে বেড়ে হবে ৪৩। কাশ্মীরে ৪৬ থেকে বেড়ে হবে ৪৭। এই ৯০ আসনের পাশাপাশি পাকিস্তাণ অধিকৃত কাশ্মীরের জন্য ২৪টি আসন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। 
শাহের ভাষণে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। এক, ২০১৯ সালে কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার সময় পন্ডিত সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্যায়ের প্রসঙ্গ তুলেছিল সরকার। তাঁদের কতজন প্রায় পাঁচ বছরে কত পরিবার রাজ্যে ফিরলেন সেই তথ্য শাহ দেননি। তিনি বলেছেন, রাজ্যের বাইরে ৪৬ হাজার ৬৩১ পরিবার বা ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯৬৮ জন সন্ত্রাসবাদের কারণে উচ্ছেদের শিকার শরণার্থী হয়ে রয়েছেন। 
দুই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রায় ১০ বছরের মেয়াদে ৭০ শতাংশ সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত ঘটনা কমে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন শাহ। বিজেপি পাথর ছোঁড়ার ঘটনাকেও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বলেছে। কিন্তু শাহের তথ্যেই দেখা যাচ্ছে আগের তুলনায় ২০০৪-১৪ কংগ্রেস জোট সরকারের মেয়াদে ঘটনা হ্রাসের হার উল্লেখযোগ্য। 
তিন, সন্ত্রাসবাদের পরিকাঠামোয় আঘাতের দাবি করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। কিন্তু নিয়মিত সুরক্ষা বাহিনী, সেনা এবং সাধারাণ মানুষের মৃত্যুর খবর মিলছে। সেনা আধিকারিকদের প্রাণ যাচ্ছে। বিরোধীদের বক্তব্য, কেবল সংখ্যার উল্লেখ করে ঘটনার গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া যায় না। তাঁরা বলছেন, ভারতীয় সেনা পাকিস্তানকে প্রায় হারিয়ে দিয়েছিল এমন অবস্থাণ নেহরুর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা- শাহের এই দাবির কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। সদ্য স্বাধীন ভারতের বাস্তব অবস্থা বিবেচনা না করে রাজনৈতিক ফয়দা তোলা হচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment