Road Accident in Odisha

ভিনরাজ্যে গিয়ে পথ দুর্ঘটনায় বসিরহাটের দুই পরিবহন শ্রমিকের মৃত্যু, জখম ৪

রাজ্য

Road Accident in Odisha সাইফুল গাজির শোকার্ত পরিবার


ব্যবধান মাত্র দু'মাস। ফের পেটের তাগিদে ভিনরাজ্যে গিয়ে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো দুই পরিবহন শ্রমিকের। বাকি চারজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। মৃতরা হলেন বসিরহাট থানার শিবাটী গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল গাজি(৪০) এবং বাদুড়িয়া থানার পূঁড়া গ্রামের বাসিন্দা আশারাফ সরদার(৩০)। শুক্রবার সকালে এই খবর উভয় গ্রামে আসতেই শোকের আবহ তৈরি হয়। সেই সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের নিরাপত্তা সহ একাধিক প্রশ্ন তোলে গ্রামবাসীরা।


স্থানীয় সূত্রে এদিন জানা গিয়েছে , পেটের তাগিদে বসিরহাট -১নং ব্লকের সংগ্রামপুর শিবাটী গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবাটী গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল গাজি ও বাদুড়িয়া পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের পূঁড়ার বাসিন্দা আশারাফ সরদার সহ বসিরহাট ও বাদুড়িয়া এলাকা থেকে ৬ জন পরিবহন শ্রমিক বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ১২টা নাগাদ বেসরকারি কোম্পানির পন্যবাহী গাড়ি নিয়ে মুরগি নিয়ে আসার জন্য উড়িষ্যার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
শুক্রবার ভোররাতে উড়িশার বালেশ্বর জেলার সড় থানা এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের গাড়িটি। সেখানে জাতীয় সড়কের উপর একটি ডাম্পার পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় সাইফুল ও আশারাফের। মারাত্মকভাবে জখম হয় ৪জন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সঙ্কটজনক অবস্থায়। ইতিমধ্যে উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে মৃতদেহ দুটি আনতে উড়িশার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে মৃত শ্রমিকদের পরিবারের লোকজন।


উল্লেখ্য, গত দু'মাস আগে অর্থাৎ ২৪ফেব্রুয়ারি বসিরহাট পুলিশ জেলার অন্তর্গত মাটিয়া থানার নেহালপুর সরদার পাড়া এলাকা থেকে পোলট্রি মুরগির বাচ্চা আনতে গিয়ে উড়িষ্যার জাজপুর জেলার ধর্মশালা থানার চন্ডীপুরে জাতীয় সড়কের উপর ডাম্পারের সজোরে ধাক্কায় তরতাজা সাত সাতটি যুবকের প্রাণ চলে যায়। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় গাড়ির চালক, খালাসি সহ ৬যুবকের। বাকি ১ যুবক উড়িশার কটক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়। ঠিক তেমনি এদিন ভোররাতে সেই প্রতিবেশী রাজ্যের বালেশ্বর জেলার সড় থানা এলাকায় জাতীয় সড়কের উপর এবারও সেই ডাম্পারের সজোরে ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাইফুল ও আশারফের।

 অত্যন্ত সঙ্কটজনক অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা বাকি চারজনকে নিয়ে যায় হাসপাতালে। প্রশ্ন উঠছে কেন উড়িশার জাতীয় সড়কে বারবার এই মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে চলেছে? বেসরকারি কোম্পানিগুলির পক্ষ থেকে বেশী করে মুনাফা লাভের আশায় কেন তাদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুর মুখে? কেন থাকছে না শ্রমিকদের নিরাপত্তা? জানা গেছে পূঁড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত শ্রমিক আশারাফ সরদারের স্ত্রী কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করেন। ঘরে ১৪ ও ৮ বছরের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে মৃত শ্রমিক সাইফুল গাজির পরিবারে স্ত্রী, ১৫ বছরের কন্যা সন্তান ও ৮ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে শেষ কথা হয় সাইফুলের। আচমকা ঘটে যাওয়া ঘটনায় অনিশ্চিত জীবনের পথে মৃত দুই শ্রমিক পরিবার।

Comments :0

Login to leave a comment