Maynaguri Bridge

সেতুর রাস্তা হয়নি ১২ বছরে, ক্ষোভ ময়নাগুড়িতে

জেলা

ব্রিজ হলেও নেই অ্যাপ্রোচ রোড। বিক্ষোভ ময়নাগুড়ির টেকাটুলি সুকান্ত কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের।

দীর্ঘ বারো বছর আগে এলাকায় পাকা সেতু হয়েছিল। কিন্তু এখনও হয়নি কোনও ‘অ্যাপ্রোচ রোড’। ফলে সমস্যায় রয়েছেন এলাকার মানুষ। 
দু’বছর আগে সেতুর গার্ড ওয়াল করে দেয় খাগড়াবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত। কিন্ত রাস্তা না থাকায় ভোগান্তি কমেনি ময়নাগুড়ি ব্লকের টেকাটুলি সুকান্ত কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের। 
পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে দ্বারিকামারি নদীর উপর সেতু তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেতুতে ওঠানামার রাস্তা করা হয়নি। যার জেরে সেতুর পাশের রাস্তার মাটি ধুয়ে যায়। ফলে ভোগান্তি কমেনি এলাকার মানুষদের। 


কৃষিকাজ সহ বিভিন্ন পরিষেবার একমাত্র ভরসা এই সেতু।  ক্ষোভ রয়েছে বাসিন্দাদের। খাগড়াবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বাবলু রায়ের সাফাই, ‘‘বামফ্রন্টের জামানায় অপরিকল্পিত ভাবে এই সেতুটি নির্মাণ হয়। যার ফলে এই সমস্যা হচ্ছে। আমরা সেতুর পাশে গার্ডওয়াল করে দিয়েছি। রাস্তার বিষয়টি দেখা হবে।’’
কিন্তু বারো বছরেও ‘বিষয়টি দেখা’ হলো না কেন প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। বামফ্রন্টের সময়ে তৈর সেতু ঘিরে অপরিকল্পনার অভিযোগই বা কেন, তা নিয়েও বিস্মিত একাংশ। 
ময়নাগুড়ি জেলা পরিষদ আসন থেকে নির্বাচিত  জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি দীপ্তি দত্তের বক্তব্য, ‘‘শুধু ময়নাগুড়ি নয়, বামফ্রন্টের সময়ে অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার বর্তমান আলিপুরদুয়ারের ভুটান সংলগ্ন সংকোশ থেকে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সদর ব্লকের সাতকুরা, দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি লাগোয়া  ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি এলাকা থেকে শুরু করে কোচবিহার  জেলার প্রান্ত সীমা ময়নাগুড়ির ভোটপাট্টি পর্যন্ত থেকে জেলা পরিষদ পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে গ্রামের বহু রাস্তা কালভার্ট ব্রিজ হয়েছে। তৃণমূল জমানায় সেগুলো রং করা আর রাস্তা চওড়া করা ছাড়া কোন নতুন কাজ হয়নি।’’
তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধানের অভিযোগ খারিজ করেছেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন এই সভাধিপতি। তিনি বলছেন, ‘‘ব্রিজ না হলে অ্যাপ্রোচ রোড কিভাবে সম্ভব! এই অভিযোগ হাস্যকর। আমরা ব্রিজটা করে গিয়েছিলাম। অ্যাপ্রোচ রোড করতে আলাদা বাজেট বরাদ্দ অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। ২০১২ সালের ব্রিজের কাজ শেষ হয়। ২০১৪’তে তৃণমূল জেলা পরিষদ দখল করে। ওরা বারো বছরের রাস্তা তৈরি করতে পারল না।’’
তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয়ভাবে রাস্তা তৈরির কাজ হয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছে। কোনও পরিকল্পনা ছাড়া কাজের বহর এমনই যে বর্ষায় সেই রাস্তা ধসে গেছে। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি অর্থ তছরূপের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার প্রকল্পের দুর্নীতি হচ্ছে।’’  
ময়নাগুড়ি সুপার মার্কেট, ময়নাগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির ডাকবাংলো যেখানে এখন কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে,  ধুপগুড়ি অডিটোরিয়াম, ময়নাগুড়ি রবিতীর্থ ভবনের মতো কাজ হয়েছে বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলা পরিষদের মেয়াদে। সেই সময়েই জেলার প্রতিটি হাট তৈরি করেছে জেলা পরিষদ। 
দীপ্তি দত্ত বলেছেন, ‘‘এই সব জায়গায় বিল্ডিং ধসে পড়ছে জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। ময়নাগুড়ি ডাকবাংলো এখন কেউ আর  ভাড়া নিতে চায় না। এসি খাট ফ্যান লাইট বাথরুমের ফিটিংস সমস্ত কিছু শেষ।’’
তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘জেলা পরিষদের এখন নিজস্ব কাজের এক্তিয়ার নেই, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই সবটাই ঠিক করে দেওয়া হয় কলকাতা থেকে।’’ 

Comments :0

Login to leave a comment