ছট উৎসবের আগমনে জলপাইগুড়ির বিভিন্ন প্রান্তে আবারও বসেছে বাঁশের সামগ্রীর বাজার। শহরের মিউনিসিপ্যাল মার্কেট, শিয়ালপাড়া সহ একাধিক জায়গায় সকাল থেকেই বাঁশের কুলা,ঝুড়ি,ডালি, বাঁশের ঝাটা, ডোকা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। চারদিকে উৎসবের আবহ, কিন্তু সেই আনন্দের মাঝেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বাঁশ শিল্পীদের কপালে। কারণ, এ বছর বাঁশের দাম বেড়েছে অনেকটাই।
বছরজুড়ে টুকটাক বিক্রি হলেও ছট উৎসবের সময়ই সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে বাঁশের সামগ্রীর। হিন্দি ভাষাভাষী মানুষের বড় উৎসব ছট। তবে বিভিন্ন অংশই শামিল হচ্ছে এই উৎসবে।
জলপাইগুড়ি শহর ও আশেপাশের এলাকায় ছট উৎসবের মানেই নদী ঘাট পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে বাঁশের ডালিতে পুজোর সামগ্রী সাজানো, সবেতেই লাগে বাঁশের কাজ। ফলে, এই সময়টাতেই বছরে একবার ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় দিনরাত পরিশ্রম করেন বাঁশ শিল্পীরা।
কিন্তু বাস্তবটা তেমন সুখকর নয়। বাঁশের কাঁচামালের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় বিক্রেতাদের মুখে এখন অনিশ্চয়তার ছায়া। এক বিক্রেতা বললেন, “আগে যে বাঁশ ২০০ টাকায় পেতাম, এখন সেটা ৩৫০ টাকার নিচে নেই। বিক্রি না বাড়লে লাভ তো দূরের কথা, খরচই উঠবে না।”
তবু তাঁরা আশা ছাড়েননি। সোমবার ও মঙ্গলবার এক উৎসব ঘিরে ক্রেতাদের ভিড় বাড়বে বলেই প্রত্যাশা তাঁদের।
এই বাঁশের শিল্প একসময় বহু পরিবারের একমাত্র জীবিকা ছিল। কিন্তু আজ পরিস্থিতি পাল্টেছে। পরিশ্রমের তুলনায় আয় খুবই কম হওয়ায় নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অনেকে এখন অন্য কাজের সন্ধানে শহরে বা রাজ্যের বাইরে চলে যাচ্ছেন। ফলে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এক প্রাচীন লোকশিল্পের ধারাবাহিকতা।
তবু উৎসবের মরশুম যেন তাদের জীবনে সামান্য হলেও আলো ফোটায়। বিক্রেতাদের আশা— ছট উৎসবের এই ক’দিন ভালো বিক্রি হলে অন্তত বছরের বাকি মাসগুলো কিছুটা নিশ্চিন্তে কাটানো যাবে।
Bamboo Artists Jalpaiguri
ছটের আগে জলপাইগুড়িতে বাঁশের সামগ্রী নিয়ে শিল্পীরা
ছট উৎসবের আগে বাঁশের কুলা, ঝুড়ি, ডালি, বাঁশি, ডোকা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ছবি: দীপশুভ্র সান্যাল
×
Comments :0