আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই ডিওয়াইএফআই-এর ডাকে ব্রিগেড সমাবেশ। রবিবারের সেই সমাবেশ শুরু হবে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শুভেচ্ছা বার্তার মধ্য দিয়ে। শনিবার সন্ধ্যাবেলা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে যান মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য, কলতান দাশগুপ্ত সহ যুব নেতৃত্ব। তাঁদের মাধ্যমেই ব্রিগেডের বার্তা পাঠিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাস ভবন থেকে বেরিয়ে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, ‘‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছেন, রবিবারের ব্রিগেড খুব ভালো ব্রিগেড, বড় ব্রিগেড হবে। তিনি আমাদের অভিন্দন জানিয়েছেন। ৫০দিন হাঁটার পরে এই সমাবেশ একটি চিহ্নফলক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। ’’
মীনাক্ষী মুখার্জি আরও বলেছেন, ‘‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আমাদের সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। সমাবেশের আগে পূর্বসূরির সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম আমরা। তিনি বলেছেন গোটা রাজ্যের ভরসা হল খেটে খাওয়া মানুষের শক্তি।’’
সেই সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য। মীরা ভট্টাচার্যও বলেছেন, ‘‘কালকের ব্রিগেড খুব ভালো হবে। আমরা সবাই আশা করছি।’’
ব্রিগেডের ময়দানের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কেমন চলছে, সেটা দেখতে শনিবার সন্ধ্যাবেলা ব্রিগেডের ময়দানে গিয়েছিল গণশক্তি ডিজিটাল। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ দেখা গেল, ইতিমধ্যেই মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় শেষ। চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি। শনিবার সকালেই একসঙ্গে ব্রিগেড ঘুরে দেখেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং ডিওইয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। এইবছর মঞ্চের স্থান কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের দিকে তাকিয়ে বক্তব্য রাখবেন সমাবেশের বক্তারা।
শনিবার দেখা গেল, পণ্যবাহী গাড়ি করে আসছে চেয়ার। মঞ্চের পিছনে তৈরি হয়েছে একাধিক অস্থায়ী তাঁবু। কোনওটা সংবাদমাধ্যমের জন্য, তো কোনওটায় মিলবে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা পরিষেবা। একটি বড় তাঁবু তৈরি করা হয়েছে দূরবর্তী জেলা থেকে আসা কর্মী সমর্থকদের রাত্রি যাপনের জন্য।
কলকাতা জেলার যুব সংগঠন ভূমিকা পালন করছে স্বেচ্ছাসেবকের। শনিবার ব্রিগেডের মাঠে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে হাজির ছিলেন জেলার সিপিআই(এম) নেতৃত্বও। ব্রিগেডের প্রতিবেদন তুলে ধরতে ইতিমধ্যেই শহরে পৌঁছে গিয়েছেন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। তাঁদের কেউ কেউ শনিবার সন্ধ্যায় ঘুরে দেখলেন সান্ধ্যকালীন ব্রিগেড। মোবাইল ক্যামেরায় উঠল ছবি, ভিডিও।
এই সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিনিধিকে আশ্চর্য হয়ে কলকাতা জেলার এক স্বেচ্ছাসেবককে প্রশ্ন করতে শোনা গেল, ‘‘এই এত বড় ময়দান, পুরোটা ভরবে?’’
তরুণ স্বেচ্ছাসেবকের উত্তর, ‘‘এই মাঠ ছোট পড়ে যাবে, যত মানুষ আসবেন তার নিরিখে।’’
মূল মঞ্চের ঠিক সামনে তৈরি হয়েছে আর্ধ গোলাকৃতির অপর একটি মঞ্চ। সেখানে মূলত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। শনিবার সন্ধ্যাবেলা দেখা গেল, সেই মঞ্চে লাল কাপড় পাতার কাজ প্রায় শেষ। মাইক এবং সাউন্ড সিস্টেমে যাতে কোনও খামতি না থাকে, তা নিশ্চিত করতেও চলছে দফায় দফায় পরীক্ষা।
ইতিমধ্যেই প্রচুর বামপন্থী কর্মী, সমর্থক আসতে শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের জন্য মঞ্চের পিছনে তাঁবু তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা খাবেন কি? সেই ব্যবস্থা করছেন সহনাগরিকরাই। একাধিক অঞ্চল থেকে খাবার তৈরি করে তাঁদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের কর্মীরা। গোটা শহরের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষরাই হাত লাগিয়েছেন খাবার তৈরিতে।
কলকাতা জেলার যুব নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, বেহালা পশ্চিম-২ অঞ্চল থেকে ১ হাজার খাবারের প্যাকেটের আয়োজন করেছেন। প্রসঙ্গত, কোভিড অতিমারির সময় এই অঞ্চলেই মোহিনী চৌধুরী শ্রমজীবী ক্যান্টিন তৈরি করা হয়েছিল।
Comments :0