প্রকৃতিবান্ধব শক্তি উৎপাদনে বড়সড় সাফল্যের দাবি জানালো চীনের সংবাদমাধ্যম। বিশ্বের প্রথম ১০ মেগাওয়াট/৮০ মেগাওয়াট আওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন কার্বোন ডাই অক্সাইড ব্যাটারি তৈরি করেছে বেইজিং।
কয়লা বা পেট্রোলিয়াম পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাতাসে মেশে কার্বন ডাই অক্সাইড। এক্ষেত্রে দাবি, কার্বনই বন্দি করে তৈরি করা যাবে বিদ্যুৎ, বাতাসে মিশবে না বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী কোনও গ্যাস।
মঙ্গলবার চায়না সায়েন্স চ্যানেলের এক্স অ্যাকাউন্টে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে চীনের এই সংস্থা জানাচ্ছে, পূর্ব চীনের আনহুই অঞ্চলের উহু এলাকায় একটি কার্বন ব্যাটারি তৈরি করা হয়েছে। এই কার্বন ব্যাটারির সঙ্গে ইতিমধ্যেই গ্রিড ব্যবস্থার সংযুক্তিকরণ ঘটানো হয়ে গিয়েছে। খুব দ্রুত এই ব্যাটারির মাধ্যমে উৎপাদিত শক্তি বিদ্যুতের মাধ্যমে বন্টন করা হবে।
চায়না সায়েন্স জানাচ্ছে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই কার্বন ব্যাটারি সর্বোচ্চ ১ হাজার মেগাওয়াট আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্বোন ডাই অক্সাইড মজুত করতে পারবে। বৈজ্ঞানিকদের হিসেব, এই ব্যাটারির আয়ু কমপক্ষে ৩ দশক।
কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যাটারির প্রযুক্তিকে এনার্জি ডোমও বলা হয়ে থাকে। এই ব্যাটারিকে একটি বিশাল আকারের গম্বুজের মত দেখতে। সেই গম্বুজের মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইডকে গ্যাসীয় এবং তরল পর্যায়ে ক্রমাগত অদল বদল করা হয়। তরল কার্বন ডাই অক্সাইডকে গরম করা হলে তা ফের গ্যাসীয় আকার ধারণ করে। এই পরিবর্তনের ফলে শক্তি উৎপন্ন হয়, সেই শক্তি গম্বুজের মধ্যে থাকা টার্বাইনকে ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গোটা প্রক্রিয়ায় পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইড প্রকৃতিতে মেশে না। ফলে বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধেও যুগান্তকারী হতে পারে এই প্রযুক্তি। এর পাশাপাশি এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কেবলমাত্র জল, স্টিল এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের প্রয়োজন পড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই এই প্রযুক্তিতে উৎপন্ন হওয়া বিদ্যুতের খরচও খুব কম। ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড তরল অবস্থায় থাকতে পারে। তাই সেই ক্ষেত্রেও খরচ খুবই কম।
ইতালির এ২এ কোম্পানি ২০২২ সালে সার্ডিনিয়ায় বিশ্বের প্রথম কার্বন ব্যাটারি গম্বুজ তৈরি করেছে। কিন্তু সেই গম্বুজের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা মাত্র ২.৫ মেগাওয়াট/ ৪ মেগাওয়াট আওয়ার। এই তথ্যে দাবি, ইতালির তুলনায় উৎপাদনের মাত্রায় বড় পরিবর্তন করে ফেলা গিয়েছে।
Comments :0