ELECTORAL BOND POLIT BUREAU

এবার জরুরি নির্বাচনী সংস্কার, রায়ের পর দাবি পলিট ব্যুরোর

জাতীয়

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এখন জরুরি রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচনী তহবিলে অর্থ নেওয়ার বিধিতে সংস্কার। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে এই দাবি তুলল সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। 
বৃহস্পতিবার পলিট ব্যুরোর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী এবং রাজনৈতিক তহবিলে অর্থ সংগ্রহের বিধিতে সংস্কার প্রয়োজন স্বচ্ছতাকে নিশ্চিত করতে। স্বচ্ছ অর্থ সংগ্রহ এবং সব রাজনৈতিক দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে নির্বাচনী বিধিতে সংস্কার জরুরি এখন।
এদিনই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মোদী সরকারের মেয়াদে চালু অস্বচ্ছ নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত অনুদানের সুযোগ থাকলেও বাস্তবে এই ব্যবস্থায় কর্পোরেট অনুদানেরই রাস্তা চওড়া করা হয়েছে। অনুদানের মাত্রা সীমায়িত করার বিধিও তুলে নেওয়া হয়। স্টেট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সংসদ বা রাজ্য বিধানসভাগুলির ভোটের আগে এই বন্ড ছাড়া হয়েছে দফায় দফায়। 
সরকারে আসীন বিজেপি বন্ডের মাধ্যমে আয়ের ৫৭ শতাংশই পকেটে পুরেছে। বিরোধী কংগ্রেসের ভাগে গিয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস এই ব্যবস্থায় বড় মাপের সুবিধা পেয়েছে। এক বছরে ৫০০ কোটি টাকার বেশি কেবল বন্ড থেকে আয়ের হিসাব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। 
পলিট ব্যুরো মনে করিয়েছে যে পার্টি বরাবর এই ব্যবস্থার বিরোধী। বন্ডের মাধ্যমে কোনও অনুদানও গ্রহণ করেনি নীতিগত অবস্থানের কারণে। এই ব্যবস্থায় দাতার নাম আড়ালে রাখার ব্যবস্থা করে বিজেপি সরকার। 
পলিট ব্যুরো বলেছে, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের এই ঐতিহাসিক রায় স্বাগত। অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বাতিল করেছে নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে। বিবেকবর্জিত এই বন্দোবস্ত শাসক দলের ভাণ্ডারে নাম গোপন রেখে কর্পোরেট অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এদিনের রায়ে তা বাতিল হয়েছে।’’
পলিট ব্যুরো বলেছে, ‘‘গোড়া থেকে পার্টি বলেছিল যে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে আর্থিক অনুদান গ্রহণ করা হবে না। কারণ এই বন্দোবস্তে দুর্নীতিকে বৈধ করা হয়েছে। অন্য আবেদনকারীদের সঙ্গে সিপিআই(এম) নির্বাচনী বন্ডের বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন দায়ের করেছিল। এটা সন্তোষজনক যে বিপক্ষে আনা মূল যুক্তিগুলিকে গ্রহণ করা হয়েছে রায়ে।’’ 
এই রায়ের পর কী করা উচিত তা-ও নির্দিষ্ট করেছে সিপিআই(এম)। নির্বাচনী সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন সরব পার্টি। লিখিত বক্তব্য কয়েক দফায় জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। পলিট ব্যুরো বলেছে যে রাজনৈতিক দলগুলির তহবিল, বিশেষ করে নির্বাচনী তহবিলে, অর্থের জোগান স্বচ্ছ করার জন্য সংস্কার জরুরি এখন। যাতে অর্থের জোগানের পদ্ধতি স্বচ্ছ হয় এবং সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে সমান সুযোগ পায়।
সিপিআই(এম) বারেরবারেই দাবি তুলেছে যে রাষ্ট্রকে নির্বাচনী খরচ জোগানোর ব্যবস্থা করতে না হলে। তা হয় না বলেই কর্পোরেট এবং ক্ষমতবান শ্রেণিগুলি তাদের পক্ষের শক্তিকে দেদার অর্থ জোগায়। উল্লেখ্য, ভোটের আগে নির্বাচন কমিশন খরচের যে সীমা ঠিক করে তা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিন্তু রাজনৈতিক দলের ওপর নয়। ফলে ক্ষমতাবানদের দিকে থাকা দলগুলিকে দেদার অর্থ জোগানো হয়। অবাধ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় গোড়া থেকেই।

Comments :0

Login to leave a comment