গাজায় যুদ্ধবিরতির সামান্য হলেও দিশা দেখা দিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিশরের রাজধানী কায়রো শহরে হামাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন ইজরায়েল সরকারের প্রতিনিধিরা। সেই বৈঠকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় রয়েছে মিশর, আমেরিকা এবং কাতারের মত দেশগুলির কূটনীতিকরা।
সিএনএন বলছে, যুদ্ধবিরতী এবং হামাসের হাতে আটক ইজরায়েলী পণবন্দীদের মুক্তির বিষয়ে অনেকটাই ঐক্যমতে পৌঁছেছে দুই পক্ষ। মিশরের সরকারি সংবাদসংস্থা আল কাহেরা নিউজ জানিয়েছে, অন্যান্য বেশ কিছু ইস্যুতেও ঐক্যমতে পৌঁছনো গিয়েছে।
৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা সংঘর্ষে ৩২ হাজারের বেশি প্যালেস্তিনীয় প্রাণ হারিয়েছেন। আহতের সংখ্যা ১ লক্ষের কাছাকাছি। নিহতদের বেশিরভাগ মহিলা এবং শিশু। গাজার প্রাক যুদ্ধ ২৪ লক্ষ জনসংখ্যার সিংহভাগ ঘরছাড়া হয়ে এই মুহূর্তে মিশর সীমান্তবর্তী রাফা শহরে আশ্রয় নিয়েছে। ইজরায়েলী সেনার দাবি, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাফা শহরকে বড় সংখ্যক হামাস কর্মীও শেষ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছে। হামাসের একাধিক ব্যাটেলিয়ন রাফায় সক্রিয়। এই অজুহাতে রাফায় সামরিক অভিযান চালাতে বদ্ধপরিকর নেতানিয়াহু প্রশাসন।
রাফা অভিযান শুরু হলে সাধারণ মানুষের প্রাণহানীও পাল্লা দিয়ে বাড়বে। এই যুক্তিতে ইজরায়েলের সবথেকে বড় সমর্থক আমেরিকাও রাফা অভিযানের বিরোধীতা করেছে। বিরোধীতা করলেও ইজরায়েলকে সামরিক সাহায্য পাঠানো বন্ধ রাখেনি আমেরিকা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের অভিমত, রাফা অভিযান শুরুর আগে যুদ্ধবিরতি চালু হলে বিপুল প্রাণহানীর হাত থেকে রক্ষা পাবে গাজা।
আল কাহেরা নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কায়রো বৈঠকের পর নিজেদের গোপন ডেরায় উড়ে গিয়েছেন হামাসের প্রতিনিধিরা। কাতার, আমেরিকা এবং ইজরায়েলের কূটনীতিকরাও ফিরে গিয়েছেন। ২দিন পরে ফের বৈঠকে বসবে সমস্ত পক্ষ। সেই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী প্রত্যার্পণের বিষয়ে রূপরেখা ঠিক হতে পারে। সরকারি ভাবে কোনও পক্ষের তরফেই যদিও বৈঠককে ইতিবাচক বলা হয়নি।
চাপের মুখে ইজরায়েলের নেতানিয়াহু প্রশাসন কিছুটা নমনীয় হলেও তার সরকারের শরিক উগ্র দক্ষিণপন্থী শক্তিগুলির হুঁশিয়ারি, যাই পরিণাম হোক, রাফা অভিযান চালাতেই হবে। নইলে নেতানিয়াহু সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে এই শক্তিগুলি।
আল জাজিরা জানাচ্ছে, উত্তর গাজার খান ইউনিস শহর থেকে চুপিসারে সরে গিয়েছে ইজরায়েলী সেনা। তারফলে ইতিমধ্যেই নিজেদের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন খান ইউনিসের বাসিন্দারা। ৪০ হাজার বাসিন্দার খান ইউনিস শহর যদিও পুরোটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে শহরকে ফের বাসযোগ্য করার লড়াই শুরু হয়েছে খান ইউনিসে।
Comments :0