Arjun Munda on farmer movement

দু’বছর ধরে আইন না করে এখন কেন্দ্রের মুখে ‘আলোচনা’

জাতীয়

কৃষক আন্দোলনে যখন গোটা দেশ উত্তাল তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা দাবি করলেন যে একমাত্র আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। একটি সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী বলেন, ‘‘এর আগে কৃষকদের সাথে দুই দফায় আলোচনা হয়েছে। সরকার আবার আলোচনায় বসতে রৈজি। আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে।’’
মুন্ডার কথা ঠিক সরকার এর আগে কৃষকদের সাথে এই নিয়ে দুবার আলোচনা করেছেন। কিন্তু সেই আলোচনায় বলা হয়েছিল যে নুন্যতম সহায়ক মুল্যের যেই দাবি তারা করছে তা সরকার পুরন করবে। কিন্তু কেন্দ্রের মোদী সরকার সেই প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়িত করেনি। কেন্দ্রীয় সরকারের এই ‘জুমলা’র বিরুদ্ধে মঙ্গলবার গোটা দেশ জুড়ে পথে নেমেছেন কৃষকরা। হাজার হাজার ট্র্যাক্টর ফের জড়ো হতে শুরু করেছে দিল্লি সীমান্তের কাছে। 
এদিন মুন্ডা বিরোধীদের নিশানা করে বলেছেন, ‘‘অনেকে কৃষকদের এই আন্দোলনের ফায়দা নিতে চাইছে। তারা কৃষকদের পিছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কৃষকদের মাথায় রাখতে হবে যে সরকার তাদের পাশে আছে।’’
সারা দেশে কয়েকশো কৃষক সংগঠনের মঞ্চ সংযুক্ত কিসান মোর্চা দিল্লি ঘিরে অবস্থানে বসে ২০২০’র নভেম্বরে। বছরভর চলে আন্দোলন। তিন কৃষি আইন বাতিল করতে বাধ্য হয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। কৃষকের কৃষিকে কর্পোরেটের হাতে তুলে দিতে আনা হয় আইন। সেই লক্ষ্যেই চলছে মোদী সরকার। কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। চাষের উপকরণের দাম বাড়ছে লাফিয়ে। লাফিয়ে বেড়েছে জ্বালানির দাম। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইন বাধ্যতামূলক করার দাবি তুলছেন কৃষকরা। সংযুক্ত কিসান মোর্চা সেই দাবিতে সারা দেশে চালাচ্ছে আন্দোলন। এবারের লড়াইয়েই মোর্চা সঙ্গে একসময়ে থাকা একটি অংশ দিল্লি অভিযানে নামে এদিন। ধর্মীয় মেরুকরণ হয় এমন আইন, প্রস্তাব সংসদে পাশ করাতে তৎপর মোদী সরকার। অথচ অন্নদাতাদের আইনের জন্য পেশই হয়নি বিল।  দেশ জুড়ে খুশির হাওয়া বইছে, সংসদের সদ্য শেষ অধিবেশনে এমনই দাবি প্রধানমন্ত্রী থেকে অর্থমন্ত্রীর। আর হরিয়ানায় বিজেপি’রই সরকার কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে কৃষকদের ওপর।

সে কারণেই কৃষকদের পক্ষ থেকে দিল্লি অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। তার জন্য সোমবার থেকে গোটা দিল্লি জুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে অনড় কৃষকরা। শয়ে শয়ে ট্র্যাক্টর দিল্লি সীমান্তের সামনে জড়ো হয়েছে ইতিমধ্যে। সঙ্গে আছে অন্তত ছয় মাসের খাদ্য সামগ্রী। 
পাঞ্জাবের এক কৃষক সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন যে, ‘‘আমরা ছয় মাসের খাদ্য সামগ্রী সহ প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিয়েই গ্রাম ছেড়েছি। আন্দোলন ছেড়ে চলে যাওয়ার কোন প্রশ্ন নেই।’’ তাদের অভিযোগ বিভিন্ন জায়গায় তাদের ডিজেল দেওয়া হচ্ছে না যাতে তারা ট্র্যাক্টর নিয়ে দিল্লি পর্যন্ত যেতে না পারেন।
২০২০ সাল থেকে দিল্লি সীমান্তে অবস্থান শুরু করেন কৃষকরা। হান্নান মোল্লা সহ একাধিক প্রথমসারির কৃষক নেতা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে বৈঠকও করেন তারা। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ফসলের ন্যায্য দামের আইন চালু করা হবে। কিন্তু তা হয়নি। সরকার তার প্রতিশ্রুতি রাখেনি। তাই এবার কৃষকরা জানাচ্ছেন দাবি পুরোপুরি ভাবে মানা হলেই তারা তাদের আন্দোলন থামাবেন।

Comments :0

Login to leave a comment