Gyanvapi Mosque

জ্ঞানবাপী সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে ছয় মাসের মধ্যে

জাতীয়

জ্ঞানবাপী মসজিদ সংক্রান্ত মামলায় মসজিদ কমিটির সব আবেদন খারিজ করলো এলাহাবাদ হাই কোর্ট। মঙ্গলবার এলাহাবাদ হাই কোর্টের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে আগামী ছয় মাসের মধ্যে জ্ঞানবাপী সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে বারানসী আদালতকে।

১৯৯১ সালে হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয় যে জ্ঞানবাদী মসজিদ কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের জমির ওপর তৈরি করা হয়েছে। মসজিদ চত্বরে ধর্মীয় উপাচার পালনের দাবিও তাদের পক্ষ থেকে করা হয়। মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছিল যে ১৯৯১ সালে ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা আইন অনুযায়ী জ্ঞানবাপী সংক্রান্ত কোন শুনানি হওয়া সম্ভব নয়। অপর দিকে হিন্দু পক্ষের দাবি ১৯৪৭ সালেও মদজিদ চত্বরে হিন্দু উপাসনা করা হতো। ২০২১ সালে পাঁচ জন মহিলা মসজিদের ভিতর উপাসনার দাবি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়।

জ্ঞানবাপী মসজিদে প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা চালাচ্ছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। গত ২ নভেম্বর হাই কোর্টে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ জানিয়েছিল সমীক্ষা শেষ। রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো দরকার। ১৭ নভেম্বর রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল আদালত। তারও আগে, ৫ অক্টোবর বারাণসী জেলা আদালত জানিয়েছিল রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হলো। সেই সময়সীমা আগেই পার হয়ে গিয়েছে।

হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে বহু হিন্দু দেব দেবীর মূর্তি রয়েছে। হিন্দু মন্দির ভেঙে শতাব্দী প্রাচীন এই মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। ভিডিও এবং ছবি সমাজিকমাধ্যমে প্রকাশ্যে এনে তারা আরও দাবি করেন যে, মসজিদের অজুখানায় যেই পাথর রয়েছে তা নাকি শিবলিঙ্গ। যদিও কোনও বিশেষজ্ঞ রিপোর্ট এই দাবির সপক্ষে পেশ করা হয়নি। আদালতে বিষয়টি গেলে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’-র নির্দেশ দেওয়া হয় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভেকে।  

এলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশে প্রত্নতাত্তিক সমীক্ষা শুরু হলে মসজিদ কমিটি তার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। মসজিদের বিভিন্ন স্থাপত্য এবং একাধিক জায়গা ভাঙার আশঙ্কা জানায় মসজিদ কমিটি। যদিও সমীক্ষার নির্দেশকে বহাল রাখে আদালত। 

বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংসদীয় কেন্দ্রে জ্ঞানবাপী মসজিদ এখন লক্ষ্য হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন অংশের প্রচারে। এই মসজিদ মন্দির ভেঙে তৈরি, এমন প্রচার কেবল সংবাদমাধ্যমে নয়, সামাজিক স্তরেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। 

অযোধ্যায় ভেঙে ফেলা বাবরি মসজিদের চৌহদ্দিতে রামমন্দির তৈরির অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ঘটনা হলো, শীর্ষ আদালতের রায়ে নির্দিষ্ট প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়নি। মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়েছিল, নানা পর্বে সর্বেক্ষণের পরও এমন নির্দিষ্ট প্রমাণ হাজির হয়নি। ভাবাবেগ’-কে প্রাধান্য দিয়েই এই অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, বলা হয়েছিল রায়ে। 

১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর বিজেপি এবং আরএসএস স্লোগান তুলেছিল ইয়ে তো সির্‌ফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশি মথুরা বাকি হ্যায়।রাম মন্দিরের রায়ের পর জ্ঞানবাপী এবং মথুরা নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের তৎপরতা বেড়েছে লোকসভা ভোটের আগে।

 

Comments :0

Login to leave a comment