তীব্র দাবদাহ অব্যাহত গোটা বঙ্গে। শুক্রবারেও মোটামুটিভাবে এই রকমই তাপপ্রবাহ চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। কলকাতা সহ জেলাগুলিতে বৃহস্পতিবার ৪০ ডিগ্রি থেকে ৪৪ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রার পারদ চড়েছে। বাড়ছে সানস্ট্রোকে মৃত্যুর ঘটনা।
বৃহস্পতিবার রাজ্যে গরমে আরও ৩ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তাঁরা দক্ষিণ দিনাজপুর, বর্ধমান ও হাওড়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। শনিবার থেকে আবহাওয়া কিছুটা পরিবর্তন হয়ে বৃষ্টির ইঙ্গিত দিয়েছে আলিপুর। উত্তরবঙ্গেও এদিন কিছুটা বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। তবে সেরকম কিছু হয়নি বলেই খবর।
সাময়িকভাবে পাহাড়ে স্বল্প কিছু বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হলেও দিনভর তা সমতলের মানুষকে কোনও রকম স্বস্তি দিতে পারেনি। তবে এদিন সন্ধ্যায় হঠাৎই ডুয়ার্সে ভারত-ভূটান চামূর্চি এলাকায় শিলা বৃষ্টি শুরু হয় বলে জানা গেছে। বৃষ্টির সঙ্গেই ঝড় ও বরফ টুকরো পড়ে। এতে কিছু এলাকায় ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দক্ষিণ দিনাজপুর। প্রখর রোদে জ্বলছে কৃষি জমি। সেখানে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটল এক ব্যক্তির। দীর্ঘদিন বৃষ্টি নেই, পুড়ছে চাষের জমি। জানা গেছে মাঠে কাজ করতে গিয়ে সানস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার এক আদিবাসী পরিবারের সদস্য এই বৃদ্ধা।
পরিবার সুত্রের খবর, মাঠে কাজ করে দুপুর দুটো নাগাদ বাড়িতে ফিরে এসে অসুস্থ বোধ করেন ওই বৃদ্ধা। এরপর পরিবারের সদস্যরা বালুরঘাট হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
অন্যদিকে হাওড়া বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর মিলেছে এদিন। তাঁর পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এদিন দুপুরে সেখানে একটি দোকানে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। হঠাৎই পড়ে যান রাস্তায়। হাওড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তিনি সানস্ট্রোকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।
এছাড়া পূর্ব বর্ধমানে মাঠে ধান কাটার সময়ে সানস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। মাঠে ধান কাটতে কাটতে ওই মহিলা হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে তড়িঘড়ি ভাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার রেল স্টেশনের কাছে বটতলায় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃতার নাম মেনকা কোরা (৪৫)। তিনি ধান কাটার কাজ করবেন বলে ভাতারের কাজগোর বেলডাঙায় গিয়েছিলেন, সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই খেতমজুরের বাড়ি বীরহাটা কোরা পাড়ায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, মাঠে ধান কাটার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্যালাইন দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরও অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সেখান থেকে রেল স্টেশনের কাছে বটতলায় আনা হয়। ওখানেই তিনি মারা যান। ওদিকে মৃতের স্বামীর অভিযোগ, হাসপাতাল চিকিৎসায় গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রীর।
Comments :0