ভারত-২(৪)
ইরাক-২(৫)
পেনাল্টি শুট-আউটে ৫-৪ ব্যবধানে ইরাকের কাছে হারল ভারত। এদিন কিংস কাপের প্রথম সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের ৭০০ তম বর্ষপূর্তি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। ৯০ মিনিটের নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচের ফলাফল ছিল ২-২। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে খেলার ফলাফল অমীমাংশিত থাকলে এক্সট্রা টাইমের বদলে খেলা গড়াবে সরাসরি পেনাল্টি শুট-আউটে। পেনাল্টিতে ৫-৪ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় ইরাক।
এদিনের ম্যাচ ছিল ভারতীয় দলের কাছে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর হাতছানি। সেই পথে অনেকটা হেঁটে এসেও থমকে যেত হল ব্লু টাইগার্সকে। যদিও তাঁদের ৯০ মিনিটের লড়াইকে ইতিমধ্যেই কুর্ণিশ জানাচ্ছে গোটা দেশের ফুটবল মহল।
এদিনের ম্যাচ ছিল ডেভিড বনাম গোলিয়াথের দ্বৈরথ। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৭০তম স্থানে থাকা দলের সঙ্গে ৯৯তম স্থানে থাকা দলের লড়াই। কিন্তু থাইল্যান্ডের ৭০০তম বর্ষপূর্তি স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচ চলাকালীন সমানে সমানে লড়ে গেলেন গুরপ্রীত, মহেশ, সাহাল’রা। দুই অর্ধে দুইবার ইরাকের বিরুদ্ধে লিড নেন ভারতীয়রা। যদিও প্রতিক্ষেত্রে পেনাল্টির সাহায্যে ম্যাচে ফিরে আসে ইরাক। এবং ২টি পেনাল্টি নিয়েই তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে ভারতীয় বেঞ্চ।
এদিন ম্যাচের ১৬ মিনিটে এগিয়ে যায় ভারত। কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে সাহাল আব্দুল সামাদ থ্রু পাস বাড়ান মহেশকে লক্ষ্য করে। গোল করতে ভুল করেননি নওরেম মহেশ।
যদিও সেই ব্যবধান দীর্ঘস্থায়ী হয়। ২৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ইরাককে সমতায় ফেরান আল হামাদি। ইরাকের আক্রমণ থামাতে গিয়ে নিজেদের বক্সে হ্যান্ড বল করে ফেলেন সন্দেশ ঝিঙ্ঘান। তারপরই পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি।
গোটা প্রথমার্ধ জুড়ে তুল্যমূল্য লড়াই চলেছে দু’দলের মধ্যে। পেনাল্টি পাওয়ার আগে অবধি ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিতে ব্যর্থ হয়েছিল ইরাক। যদিও ৩০ মিনিটের পরে একাধিক আক্রমণে উঠে আসে ইরাকের খেলোয়াড়রা। ৩৪ মিনিটে ইরাকের বাসারের ফ্রি কিক একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও ছিল প্রথমার্ধের ‘অ্যাকশন রিপ্লে’। খেলা শুরু হওয়া থেকে চাপ বাড়াতে থাকে ভারত। আগের অর্ধের মত প্রান্ত বরাবর আক্রমণে উঠে আসতে শুরু করেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা। তেমনই একটি ডান প্রান্তিক আক্রমণে উঠে এসে ইরাকের ফার্স্ট পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন মনবীর সিং। সেই শট আটকাতে গিয়ে ভুল করে বসেন ইরাকের গোলরক্ষক। বল জড়িয়ে যায় জালে।
এরপর দীর্ঘসময় ব্যবধান বজায় থাকলেও ক্রমশ মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেন ইরাকের খেলোয়াড়রা। প্রথমার্ধেও হুবহু একই ঘটনা ঘটেছিল। ভারতের পেনাল্টি বক্সে আছড়ে পড়তে থাকে একের পর এক ইরাকি আক্রমণ। ৭৯ মিনিটে তেমনই একটি আক্রমণ শামলাতে গিয়ে হিমশিম খান ভারতীয় ডিফেন্ডাররা, এবং ফাউল করে বসেন আইমেন ঘাদওয়ান’কে। রেফারি পেনাল্টি’র নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরান ঘাদওয়ান।
যদিও ২টি পেনাল্টি নিয়েই আপত্তি রয়েছে ভারতীয় শিবিরের।
এদিন ম্যাচের সংযুক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে লাল-কার্ড দেখেন ইরাকের জিদান ইকবাল। কিন্তু ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে না গড়ানোয় ইরাকের ১০ জন হয়ে যাওয়ার সুবিধা নিতে পারেনি ভারতীয় দল।
পেনাল্টি শুট-আউটে ভারতের হয়ে প্রথম শট নিতে যান ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ। এবং তাঁর শট পোস্টে লাগে। শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে ভারত। এরপর ভারত বাকি ৪টি শট মিস না করলেও ইরাকের ১টিও শট মিস হয়নি। তারফলে ৫-৪ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় ইরাক।
কিংস কাপে ভারতের পরবর্তী খেলা রবিবার। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে লেবানন এবং থাইল্যান্ড। সেই ম্যাচে পরাজিত দলের সঙ্গে তৃতীয় স্থান দখলের লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে টিম ইন্ডিয়া।
Comments :0