Cricket Jingoism

ট্রাম্পের নাক গলানোয় চুপ, জিগির ক্রিকেট মাঠে

জাতীয় খেলা

ক্রিকেট ব্যবসার অন্যতম সেরা বিনোদের  উপকরণ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। ক্রিকেট মাঠকে উগ্র জাতীয়তাবাদী মঞ্চ করেছে অতি দক্ষিণ পন্থা। এশিয়া কাপ ফাইনালও ছাড় পেল না।
এশিয়া কাপের ফাইনালের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়ে উঠল নাটকের মঞ্চ। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভির কাছ থেকে এশিয়া কাপ ট্রফি নিতে অস্বীকার করল ভারতীয় ক্রিকেট দল। 
নকভি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বটে। তিনিও দায়িত্ব পালনে অনড় ছিলেন। ভারত শেষ পর্যন্ত ট্রফি নেয়নি। 
পহেলগামের পর সামরিক অভিযান হলেও‌ সংঘর্ষ বিরতি হয়। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করে চলেছেন ধমকে চুক্তি সই করিয়েছেন তিনি। আজ পর্যন্ত ট্রাম্পের নিন্দা করার সাহস দেখাননি নরেন্দ্র মোদী। অথচ ম্যাচ জয়কে অপারেশন সিঁদুরের সঙ্গে তুলনা করে ফেলেছেন।
রবিবার রিঙ্কু সিংয়ের জয়সূচক রানের দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় পর অনুষ্ঠান শুরু হয়। উপস্থাপনার সম্প্রচার শুরু হওয়ার আগেই, ট্রফিটি মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
তিলক ভার্মা, কুলদীপ যাদব এবং অভিষেক শর্মা স্পনসরদের কাছ থেকে নিজেদের পুরস্কার সংগ্রহ করেন। তবে ভারতীয় দল তাদের বিজয়ীদের পদক এবং বিজয়ী ট্রফি গ্রহণ করেনি। পাকিস্তান বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামের কাছ থেকে তাদের রানার্সআপ পদক গ্রহণ করে এবং সরাসরি তাদের ড্রেসিংরুমে ফিরে যায়। 
সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর ক্রিকেট বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান খালিদ আল জারুনি এবং বিসিবির আমিনুল ইসলাম ভারতকে ট্রফিটি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে ভারতের কোন আপত্তি ছিল না। জানা গিয়েছে রীতি অনুযায়ী নকভি ট্রফিটি নিজেই দেওয়ার জন্য জেদ ধরেছিলেন। শেষ পর্যন্ত, ভারতকে কোনও ট্রফিই দেওয়া হয়নি।
ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব উপস্থাপনায় কোনও বক্তব্য রাখেননি। উপস্থাপক সাইমন ডুল তিলক ভার্মা, সালমান আলী আগা এবং অভিষেক শর্মার সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর ঘোষণা করেন, ‘এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল আমাকে জানিয়েছে যে ভারতীয় ক্রিকেট দল আজ রাতে তাদের পুরস্কার সংগ্রহ করবে না।’
অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর এবং নকভি চলে যাওয়ার পর, ভারতের ছবি তোলার জন্য "চ্যাম্পিয়ন" সাইনবোর্ডটি সংক্ষিপ্তভাবে বাইরে আনা হয়। ক্রিকেটাররা নতুন করে মঞ্চে এসে ক্যামেরার জন্য পোজ দেন। সূর্যকুমার একটি কাল্পনিক ট্রফি তুলে নেওয়ার অনুকরণ করেছিলেন যখন তার সতীর্থরা তাকে ঘিরে উল্লাস করছিল। ভারতের আধিপত্য বজায় রাখা এই প্রতিযোগিতার এটি ছিল এক অকল্পনীয় সমাপ্তি।
ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে, সূর্যকুমার বলেন,  ‘আমি এমন একটা জিনিস দেখিনি যে কোনও চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি পেতে দেওয়া হয় না। এটাও কষ্টার্জিত টুর্নামেন্ট, এটা এমন নয় যে আমরা এটা সহজেই পেয়েছি। আমরা ৪ সেপ্টেম্বর থেকে এখানে আছি, পরপর দুটি ভালো ম্যাচ খেলেছি। আমার মনে হয় আমরা এটার যোগ্য ছিলাম।’ 
ভারতের পাঁচ উইকেটের জয়ের পরপরই, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড খেলোয়াড় এবং সহায়ক কর্মীদের জন্য ২১ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। 
পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলি আগা ম্যাচ শেষ হওয়ার দু’ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন।  তিনি ভারতের সমালোচনা করে বলেন, ‘যদি এসিসির একজন সভাপতি থাকে, তাহলে ট্রফি দেওয়া তাঁর কাজ। কিভাবে তাঁর হাত থেকে ট্রফি নিতে কেউ অস্বীকার করতে পারে?’
পর্যবেক্ষকরা বলছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে আন্তর্জাতিক নিয়ামক আইসিসি’ র প্রধান। ম্যাচ না হলে সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে পড়তেন জয় শাহ। সে কারণে ভারতের খেলা আটকায়নি বিজেপি সরকার। আবার উগ্র জাতীয়তাবাদের রাজনীতির ফয়দা নিতে বারবার মাঠে নাটক হয়েছে। সূর্যকুমার অপারেশন সিন্দুর নিয়ে ভাষণ দিয়েছেন। আর মোদীর অনুগত মিডিয়া তাকেই যুদ্ধের সাজ দিয়ে প্রচার করছে। পাকিস্তানেও চলছে একই কায়দায় রাজনীতি। কিন্তু কোনো দেশ আমেরিকার নাক গলানো নিয়ে মন্তব্য করছে না

Comments :0

Login to leave a comment