এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি নদী বাঁধের। কয়েক বছর ধরে বর্ষা এলেই বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে জলপাইগুড়ি শহরের পরেশ মিত্র কলোনির বাসিন্দাদের। কলোনির পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে করলা নদী। নব্যতা কমে যাওয়ায় ভারী বৃষ্টি হলেই নদী উপচে করলা নদীর জল ঢুকে পড়ছে পরেশ মিত্র, নিচ মাঠ প্রভৃতি এলাকায়। নাওয়া খাওয়া ভুলে জরুরি জিনিসপত্র নিয়ে ফ্লাড শেল্টার এবং রাস্তার উপর তাবু টাঙিয়ে আশ্রয় নিতে হয় বাসিন্দাদের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে আধিকারিকরা চিড়ে, গুড় নিয়ে চলে আসেন। প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু নদী বাঁধের দাবি পূরণ হয়না।
গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়িতে। আর তাতেই বানভাসি পরিস্থিতি। এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর মাহাতো জানান , গত বছর চারবার ঘর বাড়ি ছেড়ে ফ্লাড শেল্টারে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছিলো। যারা ফ্লাড শেল্টারে জায়গা পাননি তারা রাস্তায় টাবু টাঙিয়ে ছিলেন। পৌরসভা এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা এসে বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হলো না।
বিশ্বনাথ মোহন্ত নামে অপর এক বাসিন্দা জানান, গত বছর সেচ দফতরের আধিকারিকরা এসে বাঁধের জন্য জমি চিহ্নিত করে যান। কিন্তু তারপরেও কাজ বিন্দুমাত্র এগোয়নি।
বাসিন্দাদের ক্ষোভের যথেষ্ট কারন রয়েছে বলে মনে করেন পঁচিশ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পৌষালি দাস। তিনি জানান, প্রতিবছর বর্ষা এলেই আতঙ্কে থাকেন এলাকাবাসী। ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে হয়।জল ঢুকে জিনিসপত্র নষ্ট হয়।করলার পাড়ে বাঁধ দিলে সমস্যা মিটে যাবে। সেই জন্য পুর কর্তৃপক্ষ এবং সেচ দফতর কে লিখিত ভাবে জানিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু বাঁধ তৈরি না হওয়ায় কার্যত হতাশ কাউন্সিলর।
পরিস্থিতির কথা শুনে অবশ্য পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন জলপাইগুড়ির বিধায়ক প্রদীপ কুমার বর্মা। তিনি জানিয়েছেন, সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত যাতে পরেশ মিত্র কলোনি এলাকায় বাঁধ তৈরি করা যায় তার জন্য চেষ্টা চালাবেন তিনি। সেচ দফতরের মহকুমা আধিকারিক তনয় তালুকদার জানান, পরেশ মিত্র কলোনি সংলগ্ন করলা নদীতে বাধ তৈরির জন্য প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।খুব তাড়াতাড়ি যাতে কাজ শুরু করা যায় চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা।
কিন্তু এবারেও প্রশাসনিক আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না জলপাইগুড়ি শহরের সাধারণ মানুষ।
Comments :0