Parliament opposition meet

বিরোধী বৈঠকে বামপন্থীরা, জোর বেকারি-মূল্যবৃদ্ধিতে

জাতীয়

রাজ্যসভায় কক্ষ সমন্বয়ের জন্য বৈঠক করলেন বিরোধী দলগুলির সাংসদরা। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খারগে বৈঠক ডেকেছিলেন। বুধবার বৈঠকে অংশ নিয়েছে বামপন্থী দলগুলি, ডিএমকে, আরজেডি, এনসিপি, ন্যাশনাল কনফারেন্স। বৈঠকে যোগ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টিও। 

সম্প্রতি কংগ্রেসের সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছেন খারগে। বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, ‘‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মত পেশ করার সবচেয়ে বড় জায়গা দেশের সংসদ। কংগ্রেস এবং সমমনেভাবাপন্ন দলগুলি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চায়, সরকারের বক্তব্য জানতে চায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করছেন বিরোধীদের আলোচনার পরিসর বাড়ানো হচ্ছে। আমরা আশা করব সংসদে সেই বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা যাবে।’’

এদিন বিরোধী ১৩টি দল বৈঠকে অংশ নেয়। সিপিআই(এম) রাজ্যসভা দলনেতা এলামরাম করিম এবং সাংসদ পি আর নটরাজনও যোগ দেন বৈঠকে। এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ারও সংসদে বিরোধীদের সমন্বয়ে জোর দেন।

আলোচনার সুযোগ কতটা পাওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় এর মধ্যেই রয়েছে বিরোধী শিবিরে। ৭ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। চলবে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ছুটির দিন এবং জিরো আওয়ার বা প্রশ্নোত্তর পর্ব বাদ দিলে আলোচনার জন্য ৫৬ ঘন্টারও কম সময় রয়েছে। তার মধ্যেই ২৬টি বিল পাশ করানোর জন্য অধিবেশনের সূচিতে রেখেছে সরকারপক্ষ। 

খারগে বলেছেন, ‘‘আলোচনার জন্য যথেষ্ট সময় না দিয়ে বিল পাশ করালে বহু ত্রুটি থেকে যায়। বিচারবিভাগের কাছে সংশ্লিষ্ট আইন নিয়ে মামলা দায়ের হতে থাকে। সরকারের উচিত বিল নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনার সুযোগ রাখা। অধিবেশনে সময়ের সীমাবদ্ধতা থাকলে সংসদীয় কমিটিতে পাঠিয়ে সব পক্ষের মতামত জানানোর ব্যবস্থা করা উচিত সরকারের। সংসদীয় প্রক্রিয়াকে পাশ কাটানো সঙ্গত নয়।’’ 

বামপন্থীরা জোর দিতে চাইছেন মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারির মতো বিষয়গুলিতে আলোচনার জন্য জোর দিতে। বিরোধী অন্য দলগুলির ঐকমত্যও চাইছেন বামপন্থী সাংসদরা। বিশেষত রাজ্যসভায় বিরোধীদের জোর বেশি হওয়ায় সরকারের জবাবদিহির জন্য চাপ তৈরি করতে আগ্রহী তাঁরা। 

এদিন বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক স্তরে আলোচনার অন্যতম কারণ ‘আপ’ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের উপস্থিতি। ২৯ নভেম্বর বিরোধী দলগুলির সমন্বয়ের জন্য এমনই বৈঠক থাকলেও এই দুই দলের কেউ অংশ নেননি। রাজনৈতিক স্তরে আলোচনা ছিল যে বিরোধীদের সমন্বয়ের প্রক্রিয়া এড়িয়ে চলতে আগ্রহী তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের বৈঠক এড়িয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রীর ডাকে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতিতে সর্বদলীয় বৈঠকে হাজির ছিলেন দলনেত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। 

এর আগে জুলাইয়ে অধিবেশনের সময়েও বিরোধী দলগুলির যৌথ তৎপরতা এড়িয়ে চলতে দেখা গিয়েছে মমতা ব্যানার্জির দলকে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে আপত্তি সত্ত্বেও সমর্থন করে বিরোধী বিভিন্ন দল। কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের বিরোধিতা থেকে দূরে সরে ছিল তৃণমূল। 

খারগে বৈঠকের পর প্রশ্ন তুলেছেন এইমস এবং সফদরজঙ হাসপাতালে সাইবার হানায় কেন্দ্রের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও। তিনি বলেছেন, ‘‘১৪ দিন ধরে অচলাবস্থা চলছে এইমসে। আরেকটি কেন্দ্রীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সফদরজঙ হাসপাতালে এই সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিএম আর’র সাইবার সুরক্ষা ২৪ ঘন্টায় ৬ হাজার বার বিঘ্নিত হয়েছে। কেন্দ্রের সরকার কি ঘুমাচ্ছে?’’   

Comments :0

Login to leave a comment