তপন বিশ্বাস- চাকুলিয়া
বর্ষা এলেই ফি বছর মহানন্দা নদী গ্রামের দিকে ধেয়ে আসে এবং ভাঙ্গনের শিকার হয় চাকুলিয়া থানার সাতটি গ্রাম। প্রতি বছর একটু একটু করে জমি গিলছে নদী, এগিয়ে আসছে বস্তির দিকে। তবু নদীর পার ভাঙা আটকাতে পাকা বন্দোবস্ত হয়নি। অভিযোগ, গোয়ালপোখর ২ ব্লকের সূর্যাপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে শিমুলিয়া-ডাইটন- সহ সাতটি গ্রাম মহানন্দার নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভাঙন রোধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে, গ্রামবাসীরা ক্ষুদ্ধ। এ দিকে দুয়ারে বর্ষা। তাই গ্রাম বাঁচাতে নদী চরের বাসিন্দারা সরব হয়েছেন, নদীতে বাঁধের দাবিতে। বাসিন্দারা বলছেন, ভাঙন পরিস্থতি দেখে দ্রুত কোনও পদক্ষেপ করা হোক। স্থানীয় বাসিন্দা ইরশাদ আলম বলেন, "আগে কিছু কিছু জায়গায় বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা টেকেনি। পাকাপাকি ভাবে ভাঙন রুখতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন।""
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মহানন্দা নদী যেহেতু বিহার সীমানা দিয়ে বয়ে গিয়েছে তাই সেখানে কোনও পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোন কাজ করে না এমনকি বিহার সরকারও নজর দেয় না। ফলে নদীতে জল বাড়লে আমাদের রাতের ঘুম উড়ে যায়। আমরা এ ব্যাপারে তৃণমূলের বিধায়ক ও বিজেপির সাংসদকেও একাধিকবার জানিয়েছি কিন্তু কোন কাজের অগ্রগতি হয়নি। ওই ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, বছরের পর বছর ধরে নানা আশ্বাস পেয়ে আসছেন তাঁরা। কিন্ত কাদের কাজ কিছুই হয়নি। বিভিন্ন সরকারের আমলে নানা রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে। তাতে তাৎক্ষনিক কিছু ফল মিলেছে। কিন্তু স্থায়ী সমাধান হয়নি, অভিযোগ তাঁদের। বর্ষা এলে তাঁদের স্মৃতিতে তাই ফিরে আসে জমি-ভিটে হারানোর যন্ত্রণা। তাই বর্ষার আগে থেকেই তাঁরা আর্জি জানাচ্ছেন, গ্রামের বাকি অংশ তলিয়ে যাওয়ার আগে নদীর পার বাঁধানোর ব্যবস্থা হোক।
চাকুলিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) বলেন, ‘‘নদী ভাঙন রোধে রাজ্যে সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা করছে না। আর তাতেই প্রতি বছর বর্ষায় বাসিন্দাদের ভুগতে হচ্ছে।’’
সিপিআই(এম) কানকি এরিয়া কমিটির সম্পাদক আনন্দমোহন সিংহ বলেন, ‘‘ সিপিআই(এম) সময়ে ওই এলাকায় পাকা রাস্তা করা হয়। ওই পাকা রাস্তা নদী বাঁধের কাজ করতো। কিন্তু ২০১৪ সালের ভয়ানক বন্যায় সে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমান সরকার সেই রাস্তার মেরামত করে নি। ভুগতে হচ্ছে গ্রামের বাসিন্দাদের।’’
River Erosion
ভাঙনের শিকার চাকুলিয়ার সাতটি গ্রাম
×
Comments :0