প্রতীম দে
উপলক্ষ রাম মন্দির উদ্বোধন। সেই অনুষ্ঠান পরিণত হলো নরেন্দ্র মোদীর বন্দনা অনুষ্ঠানে। বক্তব্য রাখতে উঠে গোবিন্দ দেব গিরি নরেন্দ্র মোদীকে ‘যুগাবতার’ বলেও সম্বোধন করেছেন।
রামমন্দির নির্মাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তা গিরি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী একজন যুগাবতার, মহাপুরুষ। তাই তাঁর হাত দিয়ে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হলো আজ।’’ এখানেই না থেমে তিনি বলেন, ‘‘ছত্রপতি শিবাজীর মধ্যে যে গুন লক্ষ করা গিয়েছিল সেই একই গুন রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর মধ্যেও।’’
তারপর যোগী আদিত্যনাথ হোক বা আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সবাই মোদীর কথাই বলে গেলেন। রামের কথা শোনা গেলো না কারো মুখে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এদিন যেমন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা এবং সঙ্কল্প ছাড়া এই কাজ করা সম্ভব হতো না। ৫০০ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে আজ। ভারত এই দিনটির অপেক্ষায় ছিল।’’
মোদীর মতো যোগীর কথাতেও ছিল সাম্প্রদায়িক বিভাজনের উস্কানি। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নিজেদের দেশে মন্দির করার জন্য দীর্ঘদিন লড়াই করতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন এই সঙ্কল্প পূরণ করার জন্য।’’ যোগীর কথায় অযোধ্যার গলিতে আর গুলির শব্দ বা কার্ফুর শব্দ পাওয়া যাবে না। শোনা যাবে শুধুই রাম নাম। উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে আরএসএস’র তৈরি হিংসা পরিস্থিতিতে গুলিচালনা বা কারফিউ জারির পরিস্থিতি হয়েছে উত্তর প্রদেশের পাশাপাশি সারা দেশে।
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের গলাতেও শোনা গিয়েছে ‘নতুন ভারত’ এর কথা। তিনি বলেন, ‘‘নতুন ভারতের পথ চলা শুরু হলো আজ থেকে। নরেন্দ্র মোদী একজন তপস্বী।’’ ভাগবতের দাবি, মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ার সব সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, সব কলহ বাদ দিয়ে সবাইকে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে। গান্ধী এবং ভগিনী নিবেদিতাকে উদ্ধৃত করেন আরএসএস প্রধান।
উল্লেখ্য, বাবরি মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণের স্লোগান ঘিরে গোটা দেশে সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়িয়ে ছিল আরএসএস এবং বিজেপি। ভোটই ছিল তার লক্ষ্য। দলের প্রাক্তন সভাপতি এবং উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানির নেতৃত্বে হয়েছিল রথযাত্রা। তিন বছরের মধ্যে ভাঙা হয় বাবরি মসজিদ। লালকৃষ্ণ আদবানির পুরো অনুষ্ঠানে উহ্য রইলেন। লোকসভা ভোটের মুখে এবার রামমন্দিরের অনুষ্ঠানে কেবল মোদীই!
Comments :0