Coromandel Rail Accident

রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সাথে দেখা করলেন পার্টি নেতৃত্ব

জেলা

বাঁশের কাঠামোয় মাটির বাড়ি। নিচু টালির চাল। ঘরের ভেতর বাঁশের ওপরেই জামাকাপড়। 

পরিবারের আর্থিক সুরাহার জন্য গ্রাম থেকে অন্য রাজ্যে কাজে যেতেন নন্দন প্রধান, ভোলানাথ গিরিরা। খেজুরির বেগা গ্রামের এই শ্রমিকরা আর ফিরবেন না। বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে খেজুরির বোগা গ্রামেরই চার শ্রমিকের। শ্যামপুরেরও বাসিন্দা আরেক শ্রমিক নিহত হয়েছেন শুক্রবার।

২ জুন, ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় খেজুরির বোগা গ্রামের শংকর প্রধান, নন্দন প্রধান, সুমন প্রধান, ভোলানাথ গিরি  এবং শ্যামপুরের রাজীব ডাকুয়া এই পাঁচজন শ্রমিকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
শোকাহত পরিবারের কাছে সমবেদনা জানাতে সিপিআই(এম) রাজ্য নেতৃত্ব হিমাংশু দাস , জেলা কমিটির সদস্য প্রতিমা মন্ডল, খেজুরী-২ এরিয়া কমিটি'র সম্পাদক রত্নেশ্বর দোলুই ,অশনি পাত্র, মৃন্ময় মাইতি,অতুল্য উকিল, প্রদীপ মণ্ডল,পার্বতী করণ, বিদ্যানিধি  মন্ডল, শেখ আরাফাত, বাদল মিদ্যা, সম্পদ দাস, অরবিন্দ দাস, উত্তম মন্ডল, রতন মন্ডল, শেখ মঙ্গল, অমৃত মাইতি সহ বহু সিপিআই(এম) নেতা, কর্মী ও সমর্থকগণ উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দ বাড়িতে যাওয়ার পর, পরিবারের লোকজন সহ পার্শ্ববর্তী মানুষজনের স্বজন হারানো কান্নায়  করুন পরিস্থিতি তৈরি হয়। বোগা গ্রামের একই পরিবারের দুই ভাই এবং ওই পরিবারের আর এক আত্মীয়র মৃত্যু যেন এক শ্মশানের নিস্তব্ধতা এনে দিয়েছে। সন্তানহারা বাবা,মা, স্বামী হারা  স্ত্রী এবং দুধের শিশুরা যেন সব মৃতপ্রায় অবস্থায় এই দুদিন না খেয়ে পড়ে রয়েছেন। নেতৃবৃন্দকে কাছে পেয়ে পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।  


সিপিআই(এম) নেতা হিমাংশু দাস  বলেন, ‘‘সান্ত্বনা জানাবার কোন ভাষা নেই। শুধু এইটুকু বলার যারা চলে গেলেন এরা শুধু আপনাদের পরিবারের নয়, আমাদেরও পরিবারেরই। আমরা আমাদের  সামর্থ্য  অনুযায়ী  আপনাদের কাছে থাকছি, থাকব। এখন আপনাদের ভালো থাকতে হবে,সুস্থ থাকতে হবে,বাকি পরিবারের ছোটদের, বড়দের সবাইকে নিয়ে বাঁচার জন্য, কাজের সন্ধানে বাঁচার জন্য।’’
‘‘যে যারা পেটের জন্য এইভাবে ভিন রাজ্যে কাজের সন্ধানে যাওয়ার পথে প্রাণ হারালেন এর জন্য দায়ী কে? এবং যেখানে রেল দপ্তর ও কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অপদার্থতার জন্য আজকে এতগুলো তাজা প্রাণ চলে গেল এর হিসেব কে দেবে?’’ প্রশ্ন করেন তিনি। 
ঘৃ্ণ্য রাজনীতির জন্য বোগা গ্রামের এই অসহায় পরিবারগুলো পঞ্চায়েতের কোন অনুদান সাহায্যই পায়নি বলে জানান গ্রামবাসীরা।  এখনো কাঁচা বাড়িতে কোন রকমে বেঁচে আছেন তাঁরা।
এই ঘটনার একদিন আগেই, কয়েক মাইল দূরে বঙ্গোপসাগরের পাড়ে,ভয় পেয়ে চুপসে যাওয়া চোর, লুটেরাদের নব জোয়ার তুলতে অভিষেক এসেছিল বটে তবে গ্রামের মানুষের বিক্ষোভের আঁচ পেয়েই ভয়ে জল পথে এসে, জল পথে ফিরে গেছে, জানান গ্রামবাসীরা।

Comments :0

Login to leave a comment