Podojatra

পদযাত্রায় গ্রামের নামচা

রাজ্য

গ্রাম অপেক্ষায় পদযাত্রা

পদযাত্রা মিছিলের প্রস্তুতি সভা আগেই হয়েছিল নির্ধারিত গ্রামেই। সময় ধরেই  লাল ঝান্ডার  বান্ডিল পৌঁছে দেওয়ার দ্বায়িত্বে থাকা যুবরাও এসে পড়ল। বংশীহারী ব্লকের পাঠান পাড়ার শুরুতে লাল ঝান্ডা কাঁধে নিয়ে অল্প সংখ্যক কর্মী স্লোগান শুরু করতেই গ্রামের কৃষক, খেতমজুর ও যুবরা জমা হতে থাকে জাঠা মিছিলের জন্য। জনা পঞ্চাশেক সদস্য নিয়ে যৌথ মঞ্চের মিছিল পাঠান পাড়া থেকে শুরু হয় সকাল এগারোটায়। গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে  মাঝাপাড়া, দৌলতপুর সুরিপাড়া, নান্দুর বড়বন,  চামারডাঙ্গা মহিদপুর হয়ে যত এগিয়েছে লাল ঝান্ডার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রতিটি গ্রামেই। জাঠা মিছিল জামডাঙ্গা গ্রামে পৌঁছালে সেখানকার স্বল্প সময়ের সভাতে গ্রামের বাসিন্দা ৬৫ বছরের  মনসুর আলি বলেন কয়েকবার দরখাস্ত করেছি বৃদ্ধ ভাতা হয়নি। অজন্তার গ্রামে জাঠা পৌঁছালে স্থানীয় বাসিন্দারা কৃষক ও শ্রমিকদের দাবি গুলিকে সমর্থন জানায়। গ্রামের মহিলারা দূরে দাঁড়িয়ে থাকলেও মন দিয়ে শোনে দাবি সনদ। এখানে সুদেপ পাহান, কুলেন পাহান বলেন জব কার্ড সযত্নে রাখলেও গ্রামীণ রোজগার যোজনার কাজ দেয়নি পঞ্চায়েত। দাউদপুরের সভাতেও  ৬৫ উর্ধ্ব অসুস্থ  আবদুল জালালের পরিবারের সদস্যরা  জানান ভাতা হয়নি পঞ্চায়েতে সব তথ্য জমা দিয়েও। বিরতিতেই জানা গেল জাঠা মিছিলে পা মেলানো শুড়িপুকুরের ফয়জুল রহমান ও নোয়াপাড়ার ইসমাইল মিয়া আবাস যোজনার ঘরের আবেদন করলেও কোনও সদুত্তর মেলেনি পঞ্চায়েত থেকে।  বডঝাডায়  পৌঁছে দেখাযায় অন্তত দেড়শো কর্মীর লম্বা লাইন। এখানেই  দুপুরের খাবারের ব্যাবস্থা করে স্থানীয়  গ্রামের মহিলারা। মধ্যাহ্ন বিরতির পর  নুরপুর হয়ে পনেরো কিলোমিটারের শেষে  জামার হাটে পথসভা হয়। বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা গৌতম গোস্বামী,  মোসাদ্দেক হোসেন প্রমুখ। এদিন তপন ব্লকের কৃষক, শ্রমিক ও খেতমজুররা অপেক্ষা করছে লাল ঝান্ডার  জাঠা মিছিল  কখন গ্রামে ঢুকবে। খবর আগেই দেওয়া ছিল। গ্রামের পথসভাতেই বঞ্চিতরা  শাসক দলের পরিচালিত পঞ্চায়েতের দুর্নীতির ক্ষোভ তুলে ধরলো তপন ব্লকের  দশ  নম্বর মালঞ্চা পঞ্চায়েতের  দক্ষিণ কেসলালের জাঠার সভাতে। এরপর পাঁচ কিলোমিটার পথে বিভিন্ন গ্রাম পরিক্রমা করে শিবপুর বাজারে প্রবেশ করে জাঠা মিছিল। জাঠার শেষে  রাজ্য সরকারের নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদে পথসভায় নেতৃত্বের বক্তব্য পথচলতি  মানুষ দাঁড়িয়ে শোনে।

‘বেঞ্চ চাই, বেঞ্চ চাই’

দাবি জুড়তে ঘিরছে ছাত্ররা

দাৎরুম ছাড়া পঞ্চায়েত এরকমই হবে। জানতেন রিলিফ কিস্কু । ফারাক্কার বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আদিবাসী নিবিড় কলাইডাঙ্গা গ্রাম। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় সেই গ্রামেই পদযাত্রার ফাঁকে আলোচনায় সোচ্চারে বললেন তিনি। কেন দাৎরুম (কাস্তে)? কারণ ওটাই হাতিয়ার। তৃণমূলের আমলে হামলার মুখে আদিবাসী মানুষের অধিকার, সম্মান। জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝছে গ্রাম। পঞ্চায়েতে কোনও কাজই হয় না। বিতৃষ্ণায় মানুষ জাচ্ছেন না পঞ্চায়েতে।

গ্রামে নেই একশো দিনের কাজ।  ‘দাদন’ খাটাই ভরসা গ্রামের যুবকদের । কী এই দাদন সিস্টেম ? আগে থেকেই বেশকিছু টাকা শ্রমিকের হাতে দিয়ে দেয় ঠিকাদার। বাড়িতে অভাব মেটাতে, সংসার চালাতে সেই টাকা দিয়ে কাজে বেড়িয়ে পরেন শ্রমিকরা।

দাদান খাটতে যেতে হয় কলকাতা থেকে মুম্বাই। কোনও ঠিক নেই। কোনও ঠিকানা নেই।  মজুরিতেও শোষণ। দাদন নিয়েছে, তাই দেওয়া হয় অনেক কম মজুরি। ওরলিতে কর্মরত শিশু টুডুর  অভিজ্ঞতা, বাকিদের ৮০০ টাকা মজুরি। আর আমার ৬০০ টাকা । জানার পর যখন বলতে গেলাম, ঠিকাদার বলল দাদন দেওয়া হয়েছে, এটাই নিতে হবে। কাজ ছাড়া যাবে না । আদিবাসী  শ্রমিকদের  অভিজ্ঞতা, দেওয়া হয় না পর্যাপ্ত খাবারও। কিন্তু কাজ নেই রাজ্যে। আদিবাসী কল্যাণে নেই সরকারের কোনও কর্মসূচি। বাজারে কেরোসিনের দামও ১০৮ টাকা লিটার। ঘুঁটে জ্বালাতেও দু’বার ভাবতে হচ্ছে। সরকার উৎসবে ব্যস্ত। কাজেই, দাদন নিয়ে খাটতে যাওয়ার একমাত্র ভবিষ্যৎ। এখন দাদন খাটতে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে আদিবাসীপাড়ার শিশু শ্রমিকরাও। একসময় প্রাইমারি স্কুলের পর্ব চুকিয়ে নিমগ্রাম, সাহাপুর, মল্লারপুরে সরকারি আদিবাসী হস্টেলে যেত ছেলেমেয়েরা। লকডাউনের পর অভাব বেড়েছে সংসারে। পড়াশোনার সাথে বেড়েছে দূরত্ব।

এলাকার মানুষের পকেটে টান দিয়েছে ট্রেনও, বলছেন জুনা টুডু। কাজে, চিকিৎসায় যেতে হয় মালদা, জঙ্গিপুর। ট্রেনের টিকিটের দাম ছিল দশ টাকা। এখন নাকি সব ট্রেনই এক্সপ্রেস, টিকিটের দাম হয়ে গিয়েছে তিরিশ টাকা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চাল, ডালের দাম।

এই ফারাক্কারই ঝাড়খণ্ড লাগোয়া শিকারপুরে পদযাত্রা  ঘিরে ধরেছিল এক ঝাঁক সেভেন, এইটের পড়ুয়া। দাবি একটাই, স্কুলে বেঞ্চ চাই। শিক্ষক শিক্ষিকা চাই। বামফ্রন্ট আমলে প্রত্যন্ত গ্রামে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য তৈরি হয়েছিল এমএসকে। এখন বেহাল দশা সেই শিক্ষা কেন্দ্রের। ফারাক্কার সিআইটিইউ নেতা দিলীপ মিশ্রের কাছে ক্লাসে শিক্ষক, বেঞ্চের আরজি জানিয়ে বসেছে স্কুল পড়ুয়ারা। দিলীপ মিশ্রর কথায়, প্রতিদিন আমরা পদযাত্রা শুরু করছি কুড়ি, পঁচিশ জনকে নিয়ে। পদযাত্রা যখন শেষ করছি, সংখ্যাটা দেড়শো ছাড়িয়ে যাচ্ছে। নিজে এগিয়ে এসে সমস্যার কথা বলছেন মানুষ। কোথাও দাৎরুম, কোথাও কেঁদে হাতুড়ি। পদযাত্রায় ভরসা খুঁজছে গ্রাম।

নদীর নাম কুশকর্ণিকা

লড়াইয়ের নাম জব্বর খাঁ

 

মিঠে রোদ্দুরে সবে চারিদিক ফর্সা হয়েছে। খেটেখাওয়া তল্লাটে শুরু কাজের তোড়জোড়। কুশকর্ণিকা নদীর পাড়ে এক এক করে জড়ো হতে শুরু করেছেন লোকজন। কারো হাতে লাল তো কারো হাতে সাদা পতাকা। তা দেখেই  থমকে দাঁড়ালেন সাইকেলে চড়ে গাঁয়ে গাঁয়ে  ঝুড়িতে করে শাক বিক্রি করা রাসবিহারী মণ্ডল। মুখোমুখি হলেন লাল পতাকা হাতে জব্বর খাঁয়ের। জানা গেলে শুরু হবে পদযাত্রা। রাসবিহারীর প্রশ্ন, 'কি জন্য?'  জব্বরের উত্তর, 'চোর তাড়াতে'। তারপরই শাক বিচে ভাতের হাঁড়ি চাপানোর তাগিদ ভুলে কুশকর্ণিকার এপাড়ে থাকা লাউঝোড়ের রাসবিহারী ও ওপারের শীর্ষার জব্বর খাঁয়ের আলাপচারিতা যেন হয়ে উঠল হতদরিদ্র জনপদের অসহায় মানুষের প্রতি অত্যাচারের কাহিনি।

ওই দু’জন মিলেছিলেন কুশকর্নিকার ঠিক পাড়ে গোলাপগঞ্জের মোড়ে। বীরভূমের রাজনগর ব্লকের অধীন। সেখানেই পদযাত্রা শুরু হওয়ার গোছগাছ দেখেই রোজের তাগিদ আর ভয়ডর ভুলে রাসবিহারী উগড়ে দিয়েছেন ক্ষোভ, ''চোর তাড়াতেই হবে। আমার দখলের জমি চুরি করেছে। কয়েক বছর ধরে আমি ভোগ দখল করছিলাম খাস জমি। আমাকে পাট্টা না দিয়ে নেতারা (তৃণমূল) তাদের লোককে দিয়ে দিলে। আর আমাকে সামান্য ক'টা শাক বিচে খেতে হচে।''

শুনেই সামনে থাকা জব্বর খাঁ একটা কাগজ বের করে বললেন, ''দেখুন আমার উপর কি গেছে। তবু আমাকে কিনতে পারেনি। মিছিল আগেও করেছি, এখনও করছি। করবও।'' কাগজটা ছিল জব্বরের নয় বছরের ছেলের নৃশংস খুনের থানায় করা অভিযোগের প্রতিলিপি। ২০১৪ সালে তাঁর নয় বছরের ছেলে নিঁখোজ হয়ে যায় সরস্বতী পুজোর দিন। চিৎকার করে, গলা ফাটিয়েও পুলিশের কানে পৌছে দিতে পারেননি আওয়াজ! তিনদিন পর এই কুশকর্ণিকার চরে মাটি খুঁড়ে বের হয় মেরে পুঁতে দেওয়া ছেলের মৃতদেহ। পুলিশে অভিযোগ করেন যাদের নামে তারা পরবর্তীতে হয়ে ওঠে শাসকদলের মাতব্বর। ছেলে খুনিদের শাস্তি তো দূর বরং লাল ঝান্ডার তলায় অবিচল থাকায় জব্বরের কপালেই জোটে একের পর এক মামলা। যে মামলা এখনও টানছেন জব্বর। তবে টলেননি।

গোলাপগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে ২০টি গ্রাম ঘোরা পদযাত্রায় প্রথম থেকে শেষ জব্বর ছিলেন প্রথমেই। রাসবিহারী থেকে জব্বর, নির্মল কোঁড়া থেকে মুক্তার, অসংখ্য মানুষের এই মেজাজেরই সাক্ষী হয়েছে  কুশকর্ণিকার পাড়ের গোটা তল্লাট।

‘একশো দিনের কাজের কথাও বলো গো’

ময়নাগুড়ি ব্লকের ধর্মপুর পঞ্চায়েত। সেখানে পশ্চিম বারঘড়িয়া স্টেট প্ল্যান প্রাইমারি স্কুলের মাঠে এসে হাজির হলেন পদযাত্রীরা। ৮ নভেম্বরের সকাল। শুরু হলো পদযাত্রা। প্রথম বারঘড়িয়া,গৌরগ্রামের ২৪২,২৪৩,২৪৪, নং বুথ দিয়ে পদযাত্রা এগোতে লাগলো। যে বুথগুলো তিস্তা নদী পার্শ্ববর্তী। এবার বর্ষায় নদীর গতিমুখ পরিবর্তনের কারণে প্রায় তিনশো বিঘা কৃষি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে, সরকার থেকে এই হতদরিদ্র পরিবারগুলোর পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। কৃষক থেকে হয়ে গেছেন খেতমজুর বা শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে থেকে এসেছিলেন ব্রজেন রায়, রনজিৎ রায় ও আরও অনেকে।

বাকালী থেকে বার্ণিশের ভাঙা চলার অযোগ্য রাস্তা ধরে পদযাত্রা পৌঁছায় পূর্ব ধর্মপুরে। এখানে দুটো বুথ। রাস্তা কংক্রিটের হয়নি। কাঁচা রাস্তা পেড়িয়ে বাকালী থেকে রাজারহাটগামী রাস্তা দিয়ে পদযাত্রা এগতে লাগলো। যে রাস্তায় এবরো খেবরো। সাইকেল চলে না, হাঁটতে অসুবিধা হয়। বামফ্রন্টের পঞ্চায়েত বোর্ড থাকাকালীন জেলা পরিষদের টাকায় রাস্তা নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত বোর্ড তৃণমূলের দখল করার পরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। রোলার পর্যন্ত করা হয়নি। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন করে শিলান্যাস হলেও রাস্তার কাজ শুরু হয়নি। এই রাস্তা নির্মাণ হলে কৃষকদের রাজারহাটে ফসল নিয়ে যাওয়ার সুবিধা হবে। পদযাত্রায় আওয়াজ ওঠে এই রাস্তা তৈরির দাবিতে।

রাস্তার দু’ধারে ধান কাটতে ব্যস্ত কৃষকরা। কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্যের দাবি শুনে তাড়া অনেকেই এগিয়ে এসে পথযাত্রায় পা মেলায়। কিছুটা হেঁটে আবার ফিরে যায় জমির ধান কাটতে।

সরকার পাড়ায় ঢুকতেই কয়েকজন মহিলা এগিয়ে এল জল নিয়ে। তাদের ছেলেরা অনেকেই ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছে। পদযাত্রা পৌঁছায় দক্ষিণ ধর্মপুরে। গ্রামের আঁকা বাঁকা রাস্তা ধরে চলেছে পদযাত্রা। বাড়িগুলোর সামনে মহিলা ও কচিকাঁচার দল। যেন দূর থেকে পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছিল। মাঠের কৃষক ধান কাটা স্থগিত রেখে,আলুর বীজ বপন স্থগিত রেখে মিছিল দেখছিল। দূর থেকে হেঁকে বলতে থাকে,‘‘একশো দিনের কাজের টাকার কথা বলো।’’ সূর্য প্রায় অস্তাচলে। গ্রামে মেঠো পথ দিয়ে,পাড়ার আঁকা বাঁকা রাস্তা দিয়ে মিছিল পৌঁছলো বাকালী বাজারে। শুরু হলো পথসভা।  

আতঙ্ক ভাঙছে দ্বারকেশ্বরের চরে

আরামবাগ মহমুকার পশ্চিম প্রান্তে গোঘাট। গোঘাট-১ ও গোঘাট-২ ব্লকের ১৬টা পঞ্চায়েত। বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত আর অত্যাচার কায়েম রাখতে বদ্ধ পরিবর্তন ছিল এই রাজ্যের শাসক দল। খুন ,ধর্ষণ,গ্রামের গরিব মানুষের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন আছিলায় চাষের জমি দখল, মিথ্যা মামলা, তোলা আদায় কেস কিছুই বাদ দেয়নি তৃণমূল।

বর্ধমানকে বামদিকে রেখে দ্বারকেশ্বর নদের পার ধরে চলে কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েতের পদযাত্রা। পুইনা প্রাইমারি স্কুলের মাঠ থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে  পাকুড়ে, আশপুর ,পূর্বচাকলা,আমবৌলা, বেলুন,পূণ্ডহিত ,কুমারগঞ্জ, ঝাড়খণ্ড, দেবীপুর,পোদ্দার পুকুর, পানপাতা, হয়ে রথতলায় শেষ হয়। হুগলী জেলার শেষ প্রান্ত কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েতেকে ঘিরে আছে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস, কোতলপুর ও পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ,মাধবপুর থানা। তৃণমূলী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে গোটা গ্রাম। গ্রামের গরিব খেটে খাওয়া মানুষ নিজেদের ঘাম ঝড়িয়ে ফসল ফলাফলেও ২০১১ এর পর তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে ২ জন জোতদার জমি কেড়ে নেয়। জেলার সীমান্ত লাগোয়া আঞ্চল হওয়ার জন্য বর্ধমান, বাঁকুড়া থেকে হুগলীতে আসে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা।

তৃণমূলের অত্যাচার এতোটাই ভয়ঙ্কর যে গ্রামের মানুষ গ্রামে থাকতে ভয় পেতে থাকে। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বিমান বসুর জিবি থেকে ফেরার পথে ৪৮জন পার্টিরকর্মীর উপর আক্রমণ চালায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ১৮ জন গুরুতর আহত হলেও আক্রমণের ফলে রবি মাণ্ডির অবস্থা অবনতি ঘটে। দুষ্কৃতীদের আক্রমণে এক পার্টিকর্মী উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে গোটা গ্রাম। হাসপাতালে চিকিৎসা করতে হয় বাকিদের।আর তারপরেই শুরু হয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে অত্যাচার, মিথ্যা মামলা। পার্টির নেতা কাঞ্চন দত্তের খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ ঘাও, প্রণব ঘোষ এদের প্রতি চলে প্রতিনিয়ত আক্রমণ। কেড়ে নেওয়া হয় সুবীর সাঁতরার দুই বিঘে ধানি জমি। রিয়া,মাসির বেড়া,সালকোনা এলাকাতেও চলে জমি দখল। তার সঙ্গে দ্বারকেশ্বর নদীর পাশে চাষের জমিও কেড়ে নেয় তৃণমূল। তৃণমূলের দেওয়া ১৮টা মিথ্যা মামলায় আসামি হয় ১৪২ জন। গ্রামের পথ ধরে চলা এই পদযাত্রায় স্লোগান ওঠে অবিলম্বে চালু করতে হবে ১০০ দিনের কাজ। চাষের বীজ ও সারের কালোবাজারি বন্ধেরও স্লোগান ওঠে মিছিলে। ভয় ভীতি উপেক্ষা করে গ্রামের ২০০ বেশি মানুষ পদয্ত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

Comments :0

Login to leave a comment