Mountains In Purulia

পাহাড় বাঁচাতে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের

জেলা

Mountains In Purulia

মুখে বলে মা মাটি মানুষের সরকার। অথচ এই সরকারের আমলে না মা নিরাপদে, না মাটি সুরক্ষিত, না মানুষ সুরক্ষিত। এই সরকারের আমলে মাটি, খনিজ সম্পদ, বনজ সম্পদ, পাহাড় কোন কিছুই আর নিরাপদ নয়। চারিদিকে চলছে লুটপাটের রাজত্ব। পাহাড় কেটে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করার চেষ্টা চলছে জেলার নানা প্রান্তে। ২০১৫ সালে নবান্নে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী কাশিপুর ব্লকের রাঙ্গুনিগোড়া ডুংরী কাটা বন্ধের কথা জানিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের আবেগের সঙ্গে জড়িত কোন পাহাড়কেই ধ্বংস করা হবে না। কিন্তু সে নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পুরুলিয়ার জেলারই কাশীপুর ব্লকের বড়রা অঞ্চলের পলসড়া মৌজায় অবস্থিত ধনাড়ডি গ্রামের মাচান ডুংরী (পাহাড়) কাটার কাজ বন্ধ করে দিল গ্রামবাসীরা। শনিবার ওই এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের পুরুষ এবং মহিলারা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ডুংরীর সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাদের সাফ কথা তাদের পবিত্র ধর্মস্থান ওই ডুংরি। সেই ডুংরিকে তারা কোনভাবেই কাটতে দেবেন না। তাদের অভিযোগ এই পাহাড় কাটার চক্রান্তের সঙ্গে শাসক দল, প্রশাসন এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত যুক্ত। গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পাহাড় কাটার কাজ শুরু হতেই এদিন তারা প্রতিবাদ আন্দোলনে নামেন। অবিলম্বে পাহাড় কাটার কাজ বন্ধ না হলে তারা আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন।


এর আগেও কাশিপুর ব্লকে, হুড়া ব্লকে, রঘুনাথপুর এক ব্লকে এবং জয়পুর ব্লকে প্রশাসনের মদতে পাহাড় ধ্বংসের কাজ শুরু হয়েছিল। কোথাও কোথাও স্থানীয় মানুষের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ সত্ত্বেও পাহাড় কেটে পাথর সংগ্রহ করা হয়েছে। এবার নতুন করে কাশিপুর ব্লকের মাচান ডুংরি কাটা শুরু করেছে এক বেসরকারি সংস্থা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে এই ব্রিটিশ আমল থেকেই এই ডুংরী এখানে রয়েছে। আশেপাশের গ্রামগুলোর সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষ সেই ডুংরীর ওপরে গিয়ে মাঝেমধ্যে পূজার্চনা করেন। এই ডুংরী তাদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র জায়গা। তাদের ধর্মীয় আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই ডুংরী। কয়েক দিন ধরেই পাদদেশে পাহাড়ের খাদান তৈরি করে শুরু হয়েছিল কাজ। শনিবার সেই কাজ বন্ধ করেদিল আদিবাসী অধ্যুষিত পলসড়া সহ আশেপাশের গ্রামের মানুষজনেরা। এদিন তারা ধামসা, মাদল, সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নামেন পাহাড়ে। পাহাড়ের চারিদিক জুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। এলাকার মানুষজনের বক্তব্য এই ডুংরী কেটে দিলে এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে। চাষের জন্য সামান্য জলটুকুও তারা আর পাবেন না। কোনভাবেই তারা এই ডুংরী কাটতে দেবেন না।

Comments :0

Login to leave a comment