Ration Scam

বনগাঁয় ‘বালু’ ঘনিষ্ঠের ঠিকানায় ইডি’র হানা, উদ্ধার প্রচুর নথিপত্র

রাজ্য


রেশন দুর্নীতির তদন্তে ময়দানে ইডি। গ্রেপ্তার হয়েছে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ও মন্ত্রী। তদন্ত যতোই এগোচ্ছে  সামনে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ-সহ সল্টলেকে হানা দেয় ইডি। 
খাদ্য দুর্নীতির সূত্র মিলেছিল পৌর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের পাশাপাশি চলছে রেশন দুর্নীতির  তদন্ত। 
৫ অক্টোবর সল্টলেকে দুর্নীতির তদন্তে গতি বাড়ানোর দাবিতে সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল সিপিআই(এম)। ওই দিনই পৌর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। একাধিক পৌর প্রধানের বাসভবনে তল্লাশি চলেছিল সেদিন।
রেশন দুর্নীতি মামলায় গত ২৭ অক্টোবর ভোরে ইডি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেপ্তার করে। সেদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে তাঁকে তোলা হয়। আদালত তাঁর ইডি হেপাজতের নির্দেশ দেয়। শুনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বস্ত ‘বালু’। তাঁকে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তদন্তকারীরা তাঁর ২৫টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে। তাতে রেশন দুর্নীতি মামলা সংক্রান্ত একাধিক তথ্য আছে বলে তদন্তকারীরা নিশ্চিত।
রেশন দুর্নীতির তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্ক্যনারে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বনগাঁর দুই ব্যবসায়ী। শনিবার তাদের বাড়ি এবং রাইস মিলে হানা তদন্তকারীদের। এছাড়াও এদিন রানাঘাটে চালকল মালিক নিতাই ঘোষ এবং রেশন ডিলার সিদ্ধেশ্বর বিশ্বাসের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সল্টলেক সেক্টর ফাইভের হোটেলেও তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ঘড়ির কাটায় তখন সকাল ৬টা হবে। প্রায় কাকভোরে বনগাঁর কালুপুরে রাধাকৃষ্ণ রাইস মিলে হানা দেয় ইডি। এই মিলের মালিক মন্টু সাহা ও কালীদাস সাহা। বনগাঁর কোরার বাগানের ব্যবসায়ীদের বাড়িতেও যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। ওই দুই ব্যবসায়ী প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বলে ইডি সূর্ত্রে খবর। ইডি’র একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাধাকৃষ্ণ রাইস মিল থেকে রেশনে আটা এবং চাল যেত। তাই রেশন দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে ওই আটা কলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দিয়েছে। এদিন কালোপুরের বাড়িতেই ছিল কালীদাস সাহা। ইডি আধিকারিকরা সারাদিন তল্লাশি শেষে এদিন বেলা সাড়ে ৪টা নাগাদ কালীদাস সাহাকে বাড়ি থেকে বার করে কালোপুরের কারখানায় নিয়ে যায় আরো তল্লাশির স্বার্থে। 
বনগাঁর রাধাকৃষ্ণ রাইস মিলের মালিক কালীদাস সাহা পৌরনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে। কালীদাসের বাবা একসময়ে বনগাঁর যশোর রোডের ধারে মাতৃভান্ডার নামে একটি মুদিখানার দোকান ছিল। এলাকার মানুষের অভিযোগ, কালীদাস সাহা ও মন্টু সাহা শুরু থেকেই এপার ওপারবাংলার চোরা পাচারকারীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিযোগ এদের রাধাকৃষ্ণ রাইস মিলের ৭৫০ গ্রাম আাটার মধ্যে প্রায় ২০০ গ্রাম ভুষি থাকতো। সেই সংবাদ এর আগে বিভিন্ন সংবাদপত্রে ফলাও করে ছাপা হয়েছে। গত ৫/৬ বছরের মধ্যে বনগাঁতে বেশ কয়েকটি শপিং মলের মালিক এই দুই ভাই। মন্টু সাহা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক ছিলেন। একটি সূত্রে জানা গেছে, বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন পৌরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য এদের পরিবারের সাথে বহিবাহিক সুত্রে সম্পর্ক থাকার কারণে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সাথে যোগাযোগ তৈরি হয়। সেই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো দৃঢ হয়। এদিন সকাল থেকে বনগাঁর কালোপুর, নিউমার্কেট ও কোরার বাগান এলাকায় ইডি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশি চালাচ্ছে। এই সমস্ত কারখান থেকে প্রচুর নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।

 

Comments :0

Login to leave a comment