Central force

কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই ভোট

রাজ্য

পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশন। 
সোমবার হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন। সেই মামলার শুনানি ছিল মঙ্গলবার। এদিন সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখলো। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিটি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাগরত্ন মনোনয়ন পর্বে অশান্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘২০১৩ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে হিংসার প্রমান রয়েছে। এই নির্বাচনে মনোনয়ন পর্বে হিংসার ছবি দেখা গিয়েছে। নির্বাচন মানে এই নয় যে হিংসাকে প্ররোচনা দেওয়া।’
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয় যে তারা পাঁচ রাজ্য থেকে পুলিশ চেয়েছে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য। সরকারের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি বলেন, ‘কলকাতা হাই কোর্ট যখন বলছে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটা করাতে এবং এই বাহিনীর খরচ কেন্দ্রীয় সরকারকে বহন করতে হবে তারা জানিয়েছে তখন আপনাদের আপত্তি। কিন্তু টাকা খরচ করে অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ আনতে কোন আপত্তি নেই?’
রাজ্যের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সুপ্রিম বিচারপতির কথায় শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট পরিচালনা করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কলকাতা হাই কোর্ট যখন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর কথা বলছে তখন তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্বাচন কমিশন কি ভাবে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হতে পারে। 


উল্লেখ্য গত সপ্তাহে পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিসন বেঞ্চের পক্ষ থেকে রায় দেওয়া হয় যে, গোটা রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট পরিচালিত হবে। আদালতের পক্ষ থেকে রাজ্যকে সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয় বাহিনী চাওয়ার বিষয়। হাই কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রাজ্যকে বাহিনী চাইতে হবে। বাহিনী না চাওয়ার বিষয় রাজ্যের অজুহাত ছিল যে বাহিনী মোতায়েন করলে সরকারের বিপুল অর্থ খরচ হবে। কিন্তু রাজ্যে সেই অজুহাতকে অগ্রাহ্য করে হাই কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, কেন্দ্রীয় সরকার বাহিনীর খরচ বহন করবে। 
এরপর শনিবার রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ৪৮ ঘন্টা সময় সীমা শেষ হওয়ার আগে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তারা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হবে। এদিন সেই সিদ্ধান্ত মতো সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছে রাজ্য।


২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সংঘাত বাঁধে। তৎকালিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে। সুপ্রিম কোর্টের সেই মামলায় জয়ী হয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এবার বাহিনী মামলায় রাজ্যের ‘সখা’ নির্বাচন কমিশন। পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্বে যেই অশান্তির ছবি ধরা পড়েছে তা নিয়ে মুখে কোন কথা নেই রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশনের। যদিও মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন মনোনয়ন পর্ব শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে। কিন্তু বাস্তব তা বলছে না।

তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হলেও তাকে কতটা ব্যবহার করা হবে তা নির্ভর করছে রাজ্য প্রশাসনের ওপর। অতীতে দেখা গিয়েছে ভোট চলাকালিন মুর্শিদাবাদের হাজার দুয়ারি ঘুরে দেখছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জাওয়ানরা। সোমবার সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে নিজেদের পঞ্চায়েত তৈরি করতে এবং লুঠেরাদের হারাতে। তৃণমূল ভোট লুঠ করতে এলে মানুষ তার প্রতিরোধ করবে। মানুষের শক্তির ওপর কিছু নেই।’’

Comments :0

Login to leave a comment