দেড় মরশুমে তিন ট্রফি। চলতি মাসে আইএফএ শিল্ড জিতেছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ফাইনালে পেনাল্টি শুট আউটে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে। মাত্র তেরো দিনের ব্যবধানে ফের ডার্বি। এবার সুপার কাপের গ্রুপ পর্বে, অঙ্কের হিসেবে যা ভার্চুয়াল কোয়ার্টার ফাইনাল।
সেমিফাইনালের ছাড়পত্র জোগাড় করতে হলে ম্যাচটা জিততেই হবে বাগানকে। ফলত, হোসে মোলিনার দলের কাছে শক্ত পরীক্ষা। চেন্নাইনের বিরুদ্ধে জিতলেও, ডেম্পোর বিপক্ষে আটকে যাওয়ায় চাপ তৈরি হয়েছে সবুজ মেরুনের উপর। সুপার কাপে শেষ চারে যেতে না পারলে আরো চাপ বাড়বে মোলিনা ও ফুটবলারদের। এমনিতেই ডেম্পোর বিরুদ্ধে মোলিনার রণনীতি প্রশ্নের মুখে, তাই মর্যাদার লড়াইয়ে নামার আগে সতর্ক মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা ও অধিনায়ক শুভাশিস বসু।
বড় ম্যাচ নিয়ে বাড়তি চাপ নিচ্ছেন না বাগানের ফুটবলাররা। শেষ মহড়ায় দেখা গেল রবসন, জেমি, দিমিত্রি পেত্রাটোসরা বেশ চনমনে, নিজেদের মধ্যে হাসি- ঠাট্টায় মজে। একেবারে, ফিল- গুড পরিবেশ। ফুটবলাররা যতই ফুরফুরে থাকুক না কেন! বাগানের সমস্যা আসল জায়গায়, যা চিন্তায় রেখেছে মোলিনাকে। গত ম্যাচেই প্রকট হয়েছে, ভেদশক্তির অভাব। সুযোগ তৈরি হলেও, গোল হচ্ছে না। সেটপিস কাজে লাগাতে পারছেন না জেমি, দিমি ও মনবীররা। ডার্বি জিততে হলে গোল করতে হবে। তাই শেষ অনুশীলনে আক্রমণে ও সেটপিসে জোর দিলেন মোলিনা। পাশাপাশি দলের বোঝাপড়া বাড়ানোর ব্যাপারটাও ঝালিয়ে নিলেন তিনি। ডেম্পো ম্যাচের ভুল শুধরে সুপার ডার্বিতে জয়ের নীল নকশা সাজাতে ব্যস্ত হোসে মোলিনা।
ডেম্পোর বিরুদ্ধে আটটা পরিবর্তন করেছিলেন। আগের যাদের খেলাননি অর্থাৎ লাল হলুদের বিরুদ্ধে একাদশে ফিরতে চলেছেন লিস্টন, মনবীর, আপুইয়া, অনিরুদ্ধ, জেমি, আলবার্তো, শুভাশিসরা। একসঙ্গে ছয় বিদেশী নামাবেন না মোলিনা। তবে প্রথম একাদশে চার বিদেশী রেখে দল নামানোর সম্ভাবনা প্রবল। চলতি মরশুমে গত দুটি ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দাপট দেখাতে পারেনি জেমি, লিস্টনরা। বিপক্ষের রক্ষণে বোতল বন্দী ছিলেন, এবার তাঁরা কী করেন সেদিকে তাকিয়ে থাকবেন বাগান জনতা।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে হোসে মোলিনা বললেন, 'ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে লড়াই সবসময় কঠিন। গত দুই মরশুমে ইস্টবেঙ্গল অনেক উন্নতি করেছে। ইস্টবেঙ্গল লড়াই করে, ফলে ম্যাচটা হাড্ডাহাড্ডি হবে এটা মাথায় রেখে এগোচ্ছি আমরা।'
ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠার হুঙার শোনা গেল মোলিনার গলায়, 'দলের পরিস্থিতি ভালো, আমাদের ম্যাচ খেলতে হবে এবং যোগ্যতা অর্জন করতে হলে জিততে হবে। আর ডার্বি খেলতে নামা মানেই জেতার প্রত্যাশা থাকে। সমর্থকরা চান আমরা ভার্বি যেন জিতি।' দলের সুযোগ নষ্ট নিয়ে
তিনি বললেন, 'আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি, কিন্তু গোল আসছে না। কিন্তু ম্যাচ তো জিতছি, সদ্য শিল্ড জিতলাম। দল হিসেবে ভালো পারফর্ম করেছি। আমাদের ফোকাস সবসময় সেটপিসে থাকে। চেষ্টা করব সেটপিস থেকে গোলে করার।'
এবার মরশুমের শুরুটা ভালো হয়নি বাগানের। ফুটবলারদের ফিটনেসে সমস্যা রয়ে গিয়েছে, খেলায় ধারাবাহিকতা নেই। ম্যাচ না খেলার প্রভাব যে দলের খেলায় পড়ছে তা মোলিনা মানছেন। বলেছেন, 'এই মরশুমটা কারও জন্য সহজ নয়। কারণ কোনও লিগ নেই, ম্যাচ নেই। যখন ধারাবাহিকভাবে ম্যাচ হয় না, তখন নিজের সেরাটা দেওয়া কঠিন হয়। ট্রেনিং করে ফিট হওয়া যায় না। লড়াই থাকলে তবেই সেরাটা বের হবে।' সমর্থকদের জন্য লড়াই করার কথা জানালেন মোলিনা। বললেন, 'অতীতে ওদের খুশি করেছি, এ বারও খুশি করতে চাই।'
মোহনবাগান: ইস্টবেঙ্গল
(ম্যাচ শুরু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা) (সরাসরি স্টার স্পোর্টস)
 
                                         
                                    
                                 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
Comments :0